বাংলাদেশ আইসিটি খাতে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এ জন্য হ্যাকারদের অন্যতম টার্গেট এখন বাংলাদেশ।’ প্রধানমন্ত্রীর তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় জার্মানীর হ্যানোভার সিটিতে আয়োজিত সিবিট মেলায় মঙ্গলবার প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসাবে দেয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সরকার মেট্রো রেল, গভীর সমুদ্রবন্দর, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, ডিজিটাল আইল্যান্ড, টায়ার ফোর দাতা সেন্টার এবং ইন্টারনেট ফোর জি’র সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে প্রকল্পগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আইসিটি খাত এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য হ্যাকারদের অন্যতম টার্গেট এখন বাংলাদেশ। এর কারণ ডিজিটাইজেসন। আর সরকার এই বিষয়গুলোকে মাথায় রেখেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
”বাংলাদেশ : দ্য নেক্সট আইসিটি ডেস্টিনেশন’ শিরোনামে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে রাখা বক্তব্যে সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের তথ্য প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ সেক্টর ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করার জন্য ইউরোপীয় বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্যেশে বলেন, গত সাত বছরে দেশে তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিপ্লব ঘটেছে। বিনিয়োগ অব্যাহত থাকলে এই খাতকে ঈর্ষণীয় জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
ডিজিটাল অর্থনীতির সংক্ষিপ্ত রূপ ডিকোনমি শব্দটিকে মূল বিষয় ধরে জার্মানির হ্যানোভার শহরে শুরু হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তথ্যপ্রযুক্তি মেলা সিবিট-২০১৬। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও কাঠামোকে ডিজিটাল করে কীভাবে আরো সহজ ও বাস্তবসম্মত করা যেতে পারে, সেসবের উপস্থাপনা দেখানো হয় এই তথ্যপ্রযুক্তি মেলা। পাঁচ দিনের এ মেলা শুরু হয়েছে ১৪ মার্চ। শেষ হবে ১৮ মার্চ।
মেলার দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার মেলায় উপস্থিত ছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঞ্জেলা ম্যার্কেল এবং আয়োজনের সহযোগী দেশ সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ইয়োহান নিকোলাস স্নাইডার। এই মেলায় প্রথমবারের মত অংশ নেয় বাংলাদেশ। সজীব ওয়াজেদ জয় ছাড়াও তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের নেতৃত্বে বাংলাদেশি প্যাভিলিয়ন ছাড়াও দেশের ১০টি স্টল অংশ নেয়।
বাংলাদেশ কেন তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের জন্য উর্বর ক্ষেত্র তা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে উপস্থাপন করা হয় এখানে। ১ লাখ ৭৫ হাজার বর্গমিটার জায়গা জুড়ে আয়োজিত ৩১তম সিবিট মেলার ২৮টি হলে অংশ নিয়েছে ৭০টি দেশের ৩ হাজার ২০০ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, সরকার স্বল্প সময়ে তৃনমূল পর্যায় পর্যন্ত প্রযুক্তি সেবা পৌছে দিয়েছে। যার সুফল গ্রামের মানুষ ঘরে বসে ভোগ করছে। হাইটেক পার্ক নির্মাণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে প্রযুক্তি দক্ষ প্রজন্ম তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যারা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এইখাতে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে সরকার সহজশর্তে ঋণসহ নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। সুইস এক নারী উদ্যোক্তার প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সরকার বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৃনমূল পর্যায়ে ৩০ হাজারের মত নারী উদ্যোক্তা তৈরি করেছে। এই প্রক্রিয়া অব্যাহতভাবে চলছে।
মঙ্গলবারের মেলায় সজীব ওয়াজেদ জয় ছাড়াও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে বক্তৃতা করেন বিশ্বখ্যাত কোর মিডিয়ার প্রধান নির্বাহী সোরেন স্ট্যমার, ম্যাট্রিক্স ৪২ এর প্রধান প্রযুক্তি নির্বাহী অলিভার বেনডিগ, লেটারপের প্রতিষ্ঠাতা কজমিন ইয়ানি প্রমুখ। ফোকাস বাংলা।