ঢাকা ০৮:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পবিত্র আশুরার পয়গাম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ অগাস্ট ২০২১
  • ১৫৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আশুরার দিনে কারবালার মাটিতে দাঁড়িয়ে ইমাম হোসাইন (রা) শুধু ইয়াজিদি বাহিনী নয়, সারা বিশ্বের মুসলমানদের আহ্বান করেছিলেন, ‘হালমিন নাসিরিন, ইয়ান সুরনা’—তোমাদের মধ্যে এমন কি কেউ আছ, যে আমাকে সাহায্য করবে? ইমাম হোসাইনের এই ডাক সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে পৌঁছে যাবার কথা ছিল। কিন্তু বুঝতে হবে, কেন এই আহ্বানে ইয়াজিদ বাহিনীর সাড়া মিলল না।

আসলে এ ডাক শোনার জন্য নবি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যে ভালোবাসা রাখার কথা, আমরা সে অনুযায়ী জীবন অতিবাহিত করি না বিধায় ইমাম হোসেনের এই ডাক কখনো পৌঁছায় না। ‘কুল্লা আস্আলুকুম আলাইহি আজরান ইল্লাল মায়াদ্দাতা ফিল কুরবা ’—সুরা ২৩ (হে রসুল! আপনি বলে দিন, আমি আমার রেসালতের বিনিময়ে তোমাদের কাছে আর কিছুই পারিশ্রমিক চাই না, শুধু আমার নিকটাত্মীয়দের ভালোবাসা ব্যতীত)। আল্লাহপাকের এই ঘোষণা যেসব মুসলমানের কাছে পৌঁছেছে, তারা অবশ্যই ইমাম হোসাইনের আহ্বান শুনেছিল এবং যুগ যুগ ধরে ইমামের সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ১০ মহররমের দিন ইমাম হোসেনের স্মরণে ‘আশুরা ’ পালন করে আসছে।

 

ইমাম হোসেনকে স্মরণ করা এবং কারবালার ঘটনাকে হূদয়ে লালন করা আমাদের দায়িত্ব। ইমাম হোসেন সম্পর্কে আমাদের নবি পাক হজরত মোহাম্মদ (স) বলেছেন, ‘হোসাইনুন মিন্নি ওয়া আনা মিনাল হোসাইন। আহাব্বা আল্লাহ মান আহাব্বা হোসাইন।’ (হোসাইন আমা হতে, আমি হোসাইন হতে, হোসাইনকে যে ভালোবাসবে, আল্লাহ তাকে ভালোবাসবেন)।

আমাদের নবি হজরত মোহাম্মদ (স) নিজ সম্পর্কে বলেছেন, ‘বাবা, মা, ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন সর্বোপরি সব সৃষ্টি থেকে আমার ওপর বেশি ভালোবাসা রাখতে হবে।’ তাহলে রসুলে পাক (স)-এর ওপর ভালোবাসা রাখতে গেলে ইমাম হোসাইনের ওপর অবশ্যই ভালোবাসা রাখতে হবে।

শুক্রবার পবিত্র আশুরা, তাজিয়া মিছিল-শোভাযাত্রা বন্ধমহররম মাসের ১০ আশুরা প্রত্যেক মানুষের জীবনেই আসে, কিন্তু আমরা এর প্রকৃত ফজিলত ( তাত্পর্য) না জেনে দিনটি অবহেলা, অবজ্ঞায় কাটিয়ে দিই। এ পবিত্র দিন চেনার বা বোঝার কোনো চেষ্টাই করি না। আমাদের প্রত্যেকের উচিত আশুরার প্রকৃত তাত্পর্য সম্পর্কে জানা এবং অপরকে জানানো। নবি ও নবি পরিবারের ওপর ভালোবাসা আমাদের ইমানি দায়িত্ব। পবিত্র কোরআনে ঘোষণা আছে, ‘আতিউল্লাহ ওয়া আতিউর রসুল, ওয়া উলিল আম্রি মিনকুম।’ সুরা নিসা ৫৯। অর্থাৎ তোমরা আল্লাহ ও রসুলের অনুসরণ করো এবং নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের অনুসরণ করো। উলিল আমর হতে হলে তাদের অতি অবশ্যই পূতপবিত্র হতে হবে। আর সেজন্যই এ বিষয়ে আল্লাক পাক পবিত্র কোরআনে সুরা আযহাবের ৩৩ নম্বর আয়াতে বলেছেন, ‘ইন্নামা ইউরিদুল্লাহু লিইউযহিবা আনকুমুর রিযসা আহালাল বাইতি ওয়া ইউত্বাহহিরাকুম তাত্বহিরা।’
পবিত্র আশুরা ৩০ আগস্ট

অর্থাৎ হে নবি পরিবারের সদস্যবর্গ, আল্লাহ চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং পূর্ণ রূপে পূত-পবিত্র রাখতে। তাহলে নবি পরিবারের সদস্যবর্গ অবশ্যই পূত-পবিত্র। সে অর্থে তারা উলিল আমর। তাদের অনুসরণ করা আমাদের কর্তব্য। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে নবি এবং নবি পরিবারের সদস্যদের মহব্বত করার তৌফিক দান করেন। আমিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পবিত্র আশুরার পয়গাম

আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ অগাস্ট ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আশুরার দিনে কারবালার মাটিতে দাঁড়িয়ে ইমাম হোসাইন (রা) শুধু ইয়াজিদি বাহিনী নয়, সারা বিশ্বের মুসলমানদের আহ্বান করেছিলেন, ‘হালমিন নাসিরিন, ইয়ান সুরনা’—তোমাদের মধ্যে এমন কি কেউ আছ, যে আমাকে সাহায্য করবে? ইমাম হোসাইনের এই ডাক সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে পৌঁছে যাবার কথা ছিল। কিন্তু বুঝতে হবে, কেন এই আহ্বানে ইয়াজিদ বাহিনীর সাড়া মিলল না।

আসলে এ ডাক শোনার জন্য নবি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যে ভালোবাসা রাখার কথা, আমরা সে অনুযায়ী জীবন অতিবাহিত করি না বিধায় ইমাম হোসেনের এই ডাক কখনো পৌঁছায় না। ‘কুল্লা আস্আলুকুম আলাইহি আজরান ইল্লাল মায়াদ্দাতা ফিল কুরবা ’—সুরা ২৩ (হে রসুল! আপনি বলে দিন, আমি আমার রেসালতের বিনিময়ে তোমাদের কাছে আর কিছুই পারিশ্রমিক চাই না, শুধু আমার নিকটাত্মীয়দের ভালোবাসা ব্যতীত)। আল্লাহপাকের এই ঘোষণা যেসব মুসলমানের কাছে পৌঁছেছে, তারা অবশ্যই ইমাম হোসাইনের আহ্বান শুনেছিল এবং যুগ যুগ ধরে ইমামের সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ১০ মহররমের দিন ইমাম হোসেনের স্মরণে ‘আশুরা ’ পালন করে আসছে।

 

ইমাম হোসেনকে স্মরণ করা এবং কারবালার ঘটনাকে হূদয়ে লালন করা আমাদের দায়িত্ব। ইমাম হোসেন সম্পর্কে আমাদের নবি পাক হজরত মোহাম্মদ (স) বলেছেন, ‘হোসাইনুন মিন্নি ওয়া আনা মিনাল হোসাইন। আহাব্বা আল্লাহ মান আহাব্বা হোসাইন।’ (হোসাইন আমা হতে, আমি হোসাইন হতে, হোসাইনকে যে ভালোবাসবে, আল্লাহ তাকে ভালোবাসবেন)।

আমাদের নবি হজরত মোহাম্মদ (স) নিজ সম্পর্কে বলেছেন, ‘বাবা, মা, ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন সর্বোপরি সব সৃষ্টি থেকে আমার ওপর বেশি ভালোবাসা রাখতে হবে।’ তাহলে রসুলে পাক (স)-এর ওপর ভালোবাসা রাখতে গেলে ইমাম হোসাইনের ওপর অবশ্যই ভালোবাসা রাখতে হবে।

শুক্রবার পবিত্র আশুরা, তাজিয়া মিছিল-শোভাযাত্রা বন্ধমহররম মাসের ১০ আশুরা প্রত্যেক মানুষের জীবনেই আসে, কিন্তু আমরা এর প্রকৃত ফজিলত ( তাত্পর্য) না জেনে দিনটি অবহেলা, অবজ্ঞায় কাটিয়ে দিই। এ পবিত্র দিন চেনার বা বোঝার কোনো চেষ্টাই করি না। আমাদের প্রত্যেকের উচিত আশুরার প্রকৃত তাত্পর্য সম্পর্কে জানা এবং অপরকে জানানো। নবি ও নবি পরিবারের ওপর ভালোবাসা আমাদের ইমানি দায়িত্ব। পবিত্র কোরআনে ঘোষণা আছে, ‘আতিউল্লাহ ওয়া আতিউর রসুল, ওয়া উলিল আম্রি মিনকুম।’ সুরা নিসা ৫৯। অর্থাৎ তোমরা আল্লাহ ও রসুলের অনুসরণ করো এবং নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের অনুসরণ করো। উলিল আমর হতে হলে তাদের অতি অবশ্যই পূতপবিত্র হতে হবে। আর সেজন্যই এ বিষয়ে আল্লাক পাক পবিত্র কোরআনে সুরা আযহাবের ৩৩ নম্বর আয়াতে বলেছেন, ‘ইন্নামা ইউরিদুল্লাহু লিইউযহিবা আনকুমুর রিযসা আহালাল বাইতি ওয়া ইউত্বাহহিরাকুম তাত্বহিরা।’
পবিত্র আশুরা ৩০ আগস্ট

অর্থাৎ হে নবি পরিবারের সদস্যবর্গ, আল্লাহ চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং পূর্ণ রূপে পূত-পবিত্র রাখতে। তাহলে নবি পরিবারের সদস্যবর্গ অবশ্যই পূত-পবিত্র। সে অর্থে তারা উলিল আমর। তাদের অনুসরণ করা আমাদের কর্তব্য। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে নবি এবং নবি পরিবারের সদস্যদের মহব্বত করার তৌফিক দান করেন। আমিন।