ঢাকা ০৫:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাদামাটা জীবনযাপন করতেন বঙ্গমাতা: রাষ্ট্রপতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ অগাস্ট ২০২১
  • ১৫৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী হয়েও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সবসময় সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

রোববার (০৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (০৭ আগস্ট) দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।

বঙ্গমাতার সাহস ও ধৈর্যের কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন,  ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা। যে-কোনো পরিস্থিতি তিনি বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য ও সাহস নিয়ে মোকাবিলা করতেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী হওয়ার পর তার জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। তিনি কেবল জাতির পিতার সহধর্মিণীই ছিলেন না, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামেও তিনি ছিলেন অন্যতম অগ্রদূত। দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সেই কঠিন দিনগুলো দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন।

বঙ্গমাতার সাংগঠনিক দক্ষতার প্রশংসা করে আবদুল হামিদ বলেন, পরিবারের দেখাশোনার পাশাপাশি স্বামীর মুক্তির জন্য মামলা পরিচালনা, দলের সাংগঠনিক কাজে পরামর্শ ও সহযোগিতা দান সবই তাকে করতে হয়েছে। তিনি সংগঠনের নেতা-কর্মী ও গরিব আত্মীয় স্বজনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ অর্থনৈতিক সংকটে মুক্তহস্তে দান করতেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও ছিলেন তিনি। তারই পরামর্শে বঙ্গবন্ধু হৃদয় থেকে উৎসারিত অলিখিত এ ভাষণ প্রদান করেন। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাকে বঙ্গমাতায় পরিণত করেছে। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বাঙালির অহংকার, নারী সমাজের প্রেরণার উৎস।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে তাকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়েছেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কার মাঝেও তিনি অসীম ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে শহিদ হন। জাতির ইতিহাসে যা এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য, ‘বঙ্গমাতা সংকটে সংগ্রামে নির্ভীক সহযাত্রী’, অত্যন্ত যথার্থ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। রাষ্ট্রপতি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্হণ করেন মহীয়সী নারী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তার ডাকনাম ছিল রেণু। ৩ বছর বয়সে তিনি পিতা এবং ৫ বছর বয়সে মাতাকে হারিয়েছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর পিতা-মাতার কাছে লালিত-পালিত হন এবং চাচাত ভাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সঙ্গে তার দাদা তাকে বিয়ে দেন।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সাদামাটা জীবনযাপন করতেন বঙ্গমাতা: রাষ্ট্রপতি

আপডেট টাইম : ১০:২৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ অগাস্ট ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী হয়েও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সবসময় সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

রোববার (০৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (০৭ আগস্ট) দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।

বঙ্গমাতার সাহস ও ধৈর্যের কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন,  ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা। যে-কোনো পরিস্থিতি তিনি বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য ও সাহস নিয়ে মোকাবিলা করতেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী হওয়ার পর তার জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। তিনি কেবল জাতির পিতার সহধর্মিণীই ছিলেন না, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামেও তিনি ছিলেন অন্যতম অগ্রদূত। দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সেই কঠিন দিনগুলো দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন।

বঙ্গমাতার সাংগঠনিক দক্ষতার প্রশংসা করে আবদুল হামিদ বলেন, পরিবারের দেখাশোনার পাশাপাশি স্বামীর মুক্তির জন্য মামলা পরিচালনা, দলের সাংগঠনিক কাজে পরামর্শ ও সহযোগিতা দান সবই তাকে করতে হয়েছে। তিনি সংগঠনের নেতা-কর্মী ও গরিব আত্মীয় স্বজনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ অর্থনৈতিক সংকটে মুক্তহস্তে দান করতেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও ছিলেন তিনি। তারই পরামর্শে বঙ্গবন্ধু হৃদয় থেকে উৎসারিত অলিখিত এ ভাষণ প্রদান করেন। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাকে বঙ্গমাতায় পরিণত করেছে। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বাঙালির অহংকার, নারী সমাজের প্রেরণার উৎস।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে তাকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়েছেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কার মাঝেও তিনি অসীম ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে শহিদ হন। জাতির ইতিহাসে যা এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য, ‘বঙ্গমাতা সংকটে সংগ্রামে নির্ভীক সহযাত্রী’, অত্যন্ত যথার্থ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। রাষ্ট্রপতি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্হণ করেন মহীয়সী নারী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তার ডাকনাম ছিল রেণু। ৩ বছর বয়সে তিনি পিতা এবং ৫ বছর বয়সে মাতাকে হারিয়েছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর পিতা-মাতার কাছে লালিত-পালিত হন এবং চাচাত ভাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সঙ্গে তার দাদা তাকে বিয়ে দেন।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।