ঢাকা ০৯:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুরু হলো দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২১:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১
  • ২২৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আজ ৩০ জুলাই বিকেল ৩ টায় শুরু হয় দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম। কোভিড-১৯ মহামারি ও লকডাউনের কারণে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম বাংলাদেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জাতিসংঘের ইন্টারনেট গভর্নেন্স বিষয়ক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম (বিআইজিএফ) এর একটি উদ্যোগ। বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম একটি বহু-মাত্রিক অংশীজন, যুব এবং যুব নারীদের নেতৃত্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা বাংলাদেশে ইন্টারনেট গভর্নেন্স নিয়ে কাজ করছে।

প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট গভর্নেন্স সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা এই প্রোগ্রামে ইয়ুথ আইজিএফ বাংলাদশ ইনফ্লুয়েন্সার হান্ট, ইয়ুথ এ্যামবাসেডর প্রোগ্রাম, ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স, মানবতার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে শিশু এবং কিশোরদের ইন্টারনেটের প্রতি আসক্তি এর প্রভাব, ক্ষতিকর দিক এবং উত্তরণের উপায়, যুব উদ্যোক্তা তৈরি-ডোমেন নাম নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং সুরক্ষা, যুবদের ক্ষমতায়ন: বিগ ডেটা ও আইওটি, সাইবার ভ্যালু-সিস্টেম এবং ম্যালপ্র্যাকটিস, ওটিটি, ডিজিটাল কন্টেন্ট এবং মনিটাইজেশন, স্থানীয় ও আঞ্চলিক ইন্টারনেট গভর্নেন্সে অংশগ্রহণ, যুবদের জন্য সরকারী সুযোগ: প্রশিক্ষণ ও অনুদান ইত্যাদি।

সরকার, নাগরিক সমাজ, বেসরকারী, প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, একাডেমিয়া, যুব এবং গণমাধ্যম থেকে প্রতিনিধিবৃন্দ ইয়ুথ ইন্টারনেট (জুম প্ল্যাটফর্ম) অংশগ্রহণ করেন। আলোচ্য বিষয়গুলো হলো ইয়ুথ আইজিএফ বাংলাদশ ইনফ্লুয়েন্সার হান্ট, ইয়ুথ এ্যামবাসেডর ও অন্যান্য সেশন।

স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম এর চেয়ারপার্সন সৈয়দা কামরুন জাহান রিপা যুব আইজিএফ বাংলাদেশের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হ’ল আমাদের যুবদের জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট পরিচালনায় অবদান রাখতে উৎসাহিত করা এবং সেই কার্যক্রমে অংশ নেয়া। ক্ষমতায়নের জন্য তরুণদের নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত ও অনুপ্রাণিত করার জন্য কাজ করা, তাদের কণ্ঠস্বর জোরালো করা এবং নীতি নির্ধারকদের প্রভাবিত করে অধিকার আদায়ে উদ্বুদ্ধ করা। ইন্টারনেট-ভিত্তিক প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য তরুণদের প্রস্তুতকরণ।

বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসির) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম বজলুর রহমান তাঁর মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন। বিআইজিএফ জ্ঞান সৃষ্টি ও জ্ঞান সংরক্ষণের জন্য ইন্টারেনট গভর্নেন্স নিয়ে সরকার এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করছে এবং এই কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে সরকারের সাথে কাজ করছে। বিআইজিএফ এর প্রোগ্রামে যুবদের জন্য একটি সেশন বরাদ্দ থাকতো। তবে এই প্রথমবারের মতো যুব ও যুব নারীদের জন্য বাংলাদেশে পূর্ণ যুব আইজিএফের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন প্রোগ্রামটি যুবসমাজ এর, যুবসমাজের দ্বারা এবং যুব সমাজের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। বাস্তবতার নিরিখে যুবকদের এবং তরুণ প্রজন্মকে একটি শক্তিশালী ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করা তাদের ক্ষমতায়ন করা তাদের কণ্ঠস্বর জোরালো করা এবং নীতি নির্ধারকদের প্রভাবিত করার জন্য কাজ করছে। তিনি ইন্টারনেটের ৭টি ধাপ নিয়ে আলোচনা করেন যা হল কাঠামো, নিরাপত্তা, আইনি সমস্যা, অর্থনৈতিক দিক, উন্নয়ন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অবস্থা ও মানবাধিকার। ডিজিটাল সমাজের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য, যুবকদের ক্ষমতায়ন, জ্ঞানবৃদ্ধি এবং ক্ষমতাশীলদের প্রভাবিত করার জন্য আপস্কিলিং, ডিস্কিলিং এবং রিস্কিলিংয়ের জন্য কাজ করা উচিত।

সম্মানিত অতিথি, সানি চেন্দি, আইকান অস্ট্রেলিয়ার সিনিয়র অ্যাডভাইজার পলিসি অ্যান্ড কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট উল্লেখ করেন, জাতীয় আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে শক্তিশালী যুব ও ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম গড়ে তোলার জন্য প্রতিশ্রুতি বদ্ধ। আমরা যুবকদের ইন্টারনেট পরিচালনার বিভিন্ন সুযোগের মাধ্যমে উৎসাহিত করি। আমরা জাতীয়, আঞ্চলিক এবং বিশ্বব্যাপী তরুণদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য উৎসাহিত করি, যা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন সৃষ্টি করে।

সিঙ্গাপুর গুগল প্রতিনিধি, নিক বাউয়ার সম্মানিত অতিথি হিসাবে বলেন যে এই গুরুত্বপূর্র্ণ ইভেন্টে অংশ নেয়া অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। কোভিড-১৯ কার্যক্রম এবং সহযোগিতা প্রদানে গুগল বাংলাদেশের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশের জনগণকে নিরাপদ ও টিকা প্রদানে সহায়তা কর হয়েছে। প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষকে বন্যা সতর্কতার বিশাল কভারেজসহ কোভিড-১৯ ও বন্যার সতর্কতা সম্পর্কিত তথ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। আমরা বাজার ও গ্রাাহকের সেবা নিয়ে কাজ করার জন্য বাংলাদেশের বাজার পরিবর্তনের প্রয়োজনে যুব সমাজের বিকাশের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ফেসবুক-এর বাংলাদেশ এর পাবলিক পলিসি প্রধান শাবানাজ রশিদ দিয়া সম্মানিত অতিথির বক্তব্য বলেন এই অনুষ্ঠানের অংশ হতে পেরে ফেইসবুক গর্বিত। ফেইসবুক বিশ্বজুড়ে মানুষকে সংযুক্ত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ এর সময় ডিজিটাল দক্ষতা তরুণ ও যুবকদের জন্য খুবই প্রয়োজন। ফেসবুকে জনগণকে টিকা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, যাতে জনগণ মাস্ক পরা সম্পর্কে প্রেরণামূলক তথ্য প্রদান করা হয় এবং মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া হয় সে বিষয়ে সচেতন করা হয়। তরুণ প্রন্মকে ক্ষমতায়নের জন্য ডিজিটাল শিক্ষা কর্মসূচির উপর জোর দেন।
আইকান এর ভারতের প্রধান সমীরণ গুপ্ত, সম্মানিত অতিথি হিসেবে বলেন আইকান ইন্টারনেট গভর্নেন্স গ্লোবাল ইন্টারনেটে এর ভূমিকা এবং কিভাবে অলাভজনক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসেবে কাজ করে এবং কিভাবে বিভিন্ন ভাষায় এবং স্ক্রিপ্টে ইন্টারনেট সম্পৃক্ত করা যায় এবং সাইবার নিরাপত্তায় কী ভূমিকা পালন করে তা নিয়েও আলোচনা করেন। সুরক্ষিত, কাঠামো এবং মসৃণভাবে কাজ করা।

হাসানুল হক ইনু, এমপি, চেয়ারপারসন, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম এবং তথ্য ও সম্প্র্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধিবেশনটির সভাপতিত্ব করেন এবং বলেন ইন্টারনেট সমাজে একটি বিপ্ল সৃষ্টি করেছে, তরুণরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বকে সংযুক্ত করতে পারে। দেশীয় সমাজ এবং বিশ্বজুড়ে যুবকদের জড়িত থাকতে পারে এবং আমরা কীভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি এবং কীভাবে নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা করবে তা ব্যবহার করতে পারে তা জানতে হবে। ডিজিটাল বিভাজন ও বৈষম্য কমানোর জন্য আমাদের কাজ করা উচিত। ডিজিটালাইজেশন সমাজের সমস্ত সেক্টর পরিবেশ এবং জলবায়ুু এবং সামগ্রিক পদ্ধতির প্রয়োজন। আমাদের মাতৃভাষা, সাইবারস্পেস, বাকস্বাধীনতা, ই-কমার্সে নতুন উদীয়মান প্রযুক্তি প্রয়োগ করতে হবে।

ইয়ুথ আইজিএফ বাংলাদেশের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য মিস রিম্পা বড়ুয়া ইয়ুথ আইজিএফ বাংলাদেশের ইনফ্লুয়েন্সার হান্ট ২০২১ নিয়ে আলোচনা করেন। ইনফ্লুয়েন্সার হান্ট ইউটি আইজিএফ বাংলাদেশ ২০২১ এর কার্যক্রম প্রচারে সহায়তা করবে। যারা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমাদের সহযোগি, বন্ধু, সহকর্মী এবং যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে, ভাগ করবে এবং কার্যক্রমকে ছড়িয়ে দেবে।

ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ অর্গানাইজেশন এর ডেপুটি-কান্ট্রি ডিরেক্টর আশরাফুর রহমান পিয়াস ইয়ুথ আইজিএফ-এর এমবাসেডর কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেন। যুবদের ক্ষমতায়ন করা, কণ্ঠকে জোরালো করা এবং নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করা। তবে বিশ্বস্ত ইন্টারনেটের জন্য সচেতনতা তৈরি করা এবং নিয়ম লঙ্ঘন না কওে কাজ করা, সবার জন্য ক্ষতিকারক নয় তা নিয়ে কাজ করা।
আইকান সিঙ্গাপুর প্রতিনিধি সাবরিনা লিম, উল্লেখ করেন ইন্টারনেটের বয়স ৫২ বছর কিন্তু এটি মানুষের জন্য তরুণ, এখন ৫ বিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, আমরা কি ধরনের ইন্টারনেট নিয়ে করি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বিশ্বস্ততা প্রয়োজন, কিন্তু এটি স্থিতিশীল ও সুরক্ষিত হওয়া উচিত। আইকান এ বিষয়ে যুবদের নিয়ে কাজ করছে।

ইউলিয়া মোরনেটস ইয়ুথ আইজিএফ প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রাক্তন ইউএন এমএজি উল্লেখ করেছেন যে এটি একটি মাল্টি স্টেকহোল্ডার প্ল্যাটফর্ম। ইন্টারনেট সংযোগের জন্য তরুণদের অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। তরুণদের সাইবার-আক্রমণের মধ্যে সাইবার নিরাপত্তার দক্ষতা বাড়ানো দুটি অগ্রাধিকার যুবক, মানুষের ডিজিটাল শিক্ষা, পরিবেশগত প্রোগ্রাম জলবায়ুু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করতে হবে। তরুণরা এ বিষয়ে গুরুত্ব¡পূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের মিঃ অগাস্টো ম্যাথুরিন মানবতাবিরোধী সোশ্যাল মিডিয়ার ভুমিকা নিয়ে আলোচনা করেন, অনলাইনে কী থাকতে হবে তা কী কী পোস্ট গ্রহণযোগ্য, কি অপসারণ করা, সতর্ক করা কোনটি বিচার আওতায় আনা উচিত তার ওপর আলোচনা করেন।

অ্যাসেন্ট ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ মাহমুদুল ইসলাম বাংলাদেশে কোভিড -১৯ এর প্রেক্ষিতে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ইন্টারনেট আসক্তি: কারণ, প্রভাব, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন যে আমাদের ভালোর জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করা উচিত। ইন্টারনেট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনও ক্ষতিকারক বিষয় থাকলে তা এড়িয়ে চলা উচিত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শুরু হলো দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম

আপডেট টাইম : ১০:২১:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আজ ৩০ জুলাই বিকেল ৩ টায় শুরু হয় দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম। কোভিড-১৯ মহামারি ও লকডাউনের কারণে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম বাংলাদেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জাতিসংঘের ইন্টারনেট গভর্নেন্স বিষয়ক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম (বিআইজিএফ) এর একটি উদ্যোগ। বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম একটি বহু-মাত্রিক অংশীজন, যুব এবং যুব নারীদের নেতৃত্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা বাংলাদেশে ইন্টারনেট গভর্নেন্স নিয়ে কাজ করছে।

প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট গভর্নেন্স সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা এই প্রোগ্রামে ইয়ুথ আইজিএফ বাংলাদশ ইনফ্লুয়েন্সার হান্ট, ইয়ুথ এ্যামবাসেডর প্রোগ্রাম, ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স, মানবতার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে শিশু এবং কিশোরদের ইন্টারনেটের প্রতি আসক্তি এর প্রভাব, ক্ষতিকর দিক এবং উত্তরণের উপায়, যুব উদ্যোক্তা তৈরি-ডোমেন নাম নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং সুরক্ষা, যুবদের ক্ষমতায়ন: বিগ ডেটা ও আইওটি, সাইবার ভ্যালু-সিস্টেম এবং ম্যালপ্র্যাকটিস, ওটিটি, ডিজিটাল কন্টেন্ট এবং মনিটাইজেশন, স্থানীয় ও আঞ্চলিক ইন্টারনেট গভর্নেন্সে অংশগ্রহণ, যুবদের জন্য সরকারী সুযোগ: প্রশিক্ষণ ও অনুদান ইত্যাদি।

সরকার, নাগরিক সমাজ, বেসরকারী, প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, একাডেমিয়া, যুব এবং গণমাধ্যম থেকে প্রতিনিধিবৃন্দ ইয়ুথ ইন্টারনেট (জুম প্ল্যাটফর্ম) অংশগ্রহণ করেন। আলোচ্য বিষয়গুলো হলো ইয়ুথ আইজিএফ বাংলাদশ ইনফ্লুয়েন্সার হান্ট, ইয়ুথ এ্যামবাসেডর ও অন্যান্য সেশন।

স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ ইয়ুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম এর চেয়ারপার্সন সৈয়দা কামরুন জাহান রিপা যুব আইজিএফ বাংলাদেশের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হ’ল আমাদের যুবদের জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট পরিচালনায় অবদান রাখতে উৎসাহিত করা এবং সেই কার্যক্রমে অংশ নেয়া। ক্ষমতায়নের জন্য তরুণদের নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত ও অনুপ্রাণিত করার জন্য কাজ করা, তাদের কণ্ঠস্বর জোরালো করা এবং নীতি নির্ধারকদের প্রভাবিত করে অধিকার আদায়ে উদ্বুদ্ধ করা। ইন্টারনেট-ভিত্তিক প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য তরুণদের প্রস্তুতকরণ।

বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসির) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম বজলুর রহমান তাঁর মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন। বিআইজিএফ জ্ঞান সৃষ্টি ও জ্ঞান সংরক্ষণের জন্য ইন্টারেনট গভর্নেন্স নিয়ে সরকার এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করছে এবং এই কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে সরকারের সাথে কাজ করছে। বিআইজিএফ এর প্রোগ্রামে যুবদের জন্য একটি সেশন বরাদ্দ থাকতো। তবে এই প্রথমবারের মতো যুব ও যুব নারীদের জন্য বাংলাদেশে পূর্ণ যুব আইজিএফের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন প্রোগ্রামটি যুবসমাজ এর, যুবসমাজের দ্বারা এবং যুব সমাজের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। বাস্তবতার নিরিখে যুবকদের এবং তরুণ প্রজন্মকে একটি শক্তিশালী ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করা তাদের ক্ষমতায়ন করা তাদের কণ্ঠস্বর জোরালো করা এবং নীতি নির্ধারকদের প্রভাবিত করার জন্য কাজ করছে। তিনি ইন্টারনেটের ৭টি ধাপ নিয়ে আলোচনা করেন যা হল কাঠামো, নিরাপত্তা, আইনি সমস্যা, অর্থনৈতিক দিক, উন্নয়ন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অবস্থা ও মানবাধিকার। ডিজিটাল সমাজের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য, যুবকদের ক্ষমতায়ন, জ্ঞানবৃদ্ধি এবং ক্ষমতাশীলদের প্রভাবিত করার জন্য আপস্কিলিং, ডিস্কিলিং এবং রিস্কিলিংয়ের জন্য কাজ করা উচিত।

সম্মানিত অতিথি, সানি চেন্দি, আইকান অস্ট্রেলিয়ার সিনিয়র অ্যাডভাইজার পলিসি অ্যান্ড কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট উল্লেখ করেন, জাতীয় আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে শক্তিশালী যুব ও ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম গড়ে তোলার জন্য প্রতিশ্রুতি বদ্ধ। আমরা যুবকদের ইন্টারনেট পরিচালনার বিভিন্ন সুযোগের মাধ্যমে উৎসাহিত করি। আমরা জাতীয়, আঞ্চলিক এবং বিশ্বব্যাপী তরুণদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য উৎসাহিত করি, যা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন সৃষ্টি করে।

সিঙ্গাপুর গুগল প্রতিনিধি, নিক বাউয়ার সম্মানিত অতিথি হিসাবে বলেন যে এই গুরুত্বপূর্র্ণ ইভেন্টে অংশ নেয়া অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। কোভিড-১৯ কার্যক্রম এবং সহযোগিতা প্রদানে গুগল বাংলাদেশের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশের জনগণকে নিরাপদ ও টিকা প্রদানে সহায়তা কর হয়েছে। প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষকে বন্যা সতর্কতার বিশাল কভারেজসহ কোভিড-১৯ ও বন্যার সতর্কতা সম্পর্কিত তথ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। আমরা বাজার ও গ্রাাহকের সেবা নিয়ে কাজ করার জন্য বাংলাদেশের বাজার পরিবর্তনের প্রয়োজনে যুব সমাজের বিকাশের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ফেসবুক-এর বাংলাদেশ এর পাবলিক পলিসি প্রধান শাবানাজ রশিদ দিয়া সম্মানিত অতিথির বক্তব্য বলেন এই অনুষ্ঠানের অংশ হতে পেরে ফেইসবুক গর্বিত। ফেইসবুক বিশ্বজুড়ে মানুষকে সংযুক্ত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ এর সময় ডিজিটাল দক্ষতা তরুণ ও যুবকদের জন্য খুবই প্রয়োজন। ফেসবুকে জনগণকে টিকা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, যাতে জনগণ মাস্ক পরা সম্পর্কে প্রেরণামূলক তথ্য প্রদান করা হয় এবং মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া হয় সে বিষয়ে সচেতন করা হয়। তরুণ প্রন্মকে ক্ষমতায়নের জন্য ডিজিটাল শিক্ষা কর্মসূচির উপর জোর দেন।
আইকান এর ভারতের প্রধান সমীরণ গুপ্ত, সম্মানিত অতিথি হিসেবে বলেন আইকান ইন্টারনেট গভর্নেন্স গ্লোবাল ইন্টারনেটে এর ভূমিকা এবং কিভাবে অলাভজনক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসেবে কাজ করে এবং কিভাবে বিভিন্ন ভাষায় এবং স্ক্রিপ্টে ইন্টারনেট সম্পৃক্ত করা যায় এবং সাইবার নিরাপত্তায় কী ভূমিকা পালন করে তা নিয়েও আলোচনা করেন। সুরক্ষিত, কাঠামো এবং মসৃণভাবে কাজ করা।

হাসানুল হক ইনু, এমপি, চেয়ারপারসন, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম এবং তথ্য ও সম্প্র্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধিবেশনটির সভাপতিত্ব করেন এবং বলেন ইন্টারনেট সমাজে একটি বিপ্ল সৃষ্টি করেছে, তরুণরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বকে সংযুক্ত করতে পারে। দেশীয় সমাজ এবং বিশ্বজুড়ে যুবকদের জড়িত থাকতে পারে এবং আমরা কীভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি এবং কীভাবে নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা করবে তা ব্যবহার করতে পারে তা জানতে হবে। ডিজিটাল বিভাজন ও বৈষম্য কমানোর জন্য আমাদের কাজ করা উচিত। ডিজিটালাইজেশন সমাজের সমস্ত সেক্টর পরিবেশ এবং জলবায়ুু এবং সামগ্রিক পদ্ধতির প্রয়োজন। আমাদের মাতৃভাষা, সাইবারস্পেস, বাকস্বাধীনতা, ই-কমার্সে নতুন উদীয়মান প্রযুক্তি প্রয়োগ করতে হবে।

ইয়ুথ আইজিএফ বাংলাদেশের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য মিস রিম্পা বড়ুয়া ইয়ুথ আইজিএফ বাংলাদেশের ইনফ্লুয়েন্সার হান্ট ২০২১ নিয়ে আলোচনা করেন। ইনফ্লুয়েন্সার হান্ট ইউটি আইজিএফ বাংলাদেশ ২০২১ এর কার্যক্রম প্রচারে সহায়তা করবে। যারা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমাদের সহযোগি, বন্ধু, সহকর্মী এবং যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে, ভাগ করবে এবং কার্যক্রমকে ছড়িয়ে দেবে।

ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ অর্গানাইজেশন এর ডেপুটি-কান্ট্রি ডিরেক্টর আশরাফুর রহমান পিয়াস ইয়ুথ আইজিএফ-এর এমবাসেডর কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেন। যুবদের ক্ষমতায়ন করা, কণ্ঠকে জোরালো করা এবং নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করা। তবে বিশ্বস্ত ইন্টারনেটের জন্য সচেতনতা তৈরি করা এবং নিয়ম লঙ্ঘন না কওে কাজ করা, সবার জন্য ক্ষতিকারক নয় তা নিয়ে কাজ করা।
আইকান সিঙ্গাপুর প্রতিনিধি সাবরিনা লিম, উল্লেখ করেন ইন্টারনেটের বয়স ৫২ বছর কিন্তু এটি মানুষের জন্য তরুণ, এখন ৫ বিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, আমরা কি ধরনের ইন্টারনেট নিয়ে করি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বিশ্বস্ততা প্রয়োজন, কিন্তু এটি স্থিতিশীল ও সুরক্ষিত হওয়া উচিত। আইকান এ বিষয়ে যুবদের নিয়ে কাজ করছে।

ইউলিয়া মোরনেটস ইয়ুথ আইজিএফ প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রাক্তন ইউএন এমএজি উল্লেখ করেছেন যে এটি একটি মাল্টি স্টেকহোল্ডার প্ল্যাটফর্ম। ইন্টারনেট সংযোগের জন্য তরুণদের অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। তরুণদের সাইবার-আক্রমণের মধ্যে সাইবার নিরাপত্তার দক্ষতা বাড়ানো দুটি অগ্রাধিকার যুবক, মানুষের ডিজিটাল শিক্ষা, পরিবেশগত প্রোগ্রাম জলবায়ুু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করতে হবে। তরুণরা এ বিষয়ে গুরুত্ব¡পূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের মিঃ অগাস্টো ম্যাথুরিন মানবতাবিরোধী সোশ্যাল মিডিয়ার ভুমিকা নিয়ে আলোচনা করেন, অনলাইনে কী থাকতে হবে তা কী কী পোস্ট গ্রহণযোগ্য, কি অপসারণ করা, সতর্ক করা কোনটি বিচার আওতায় আনা উচিত তার ওপর আলোচনা করেন।

অ্যাসেন্ট ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ মাহমুদুল ইসলাম বাংলাদেশে কোভিড -১৯ এর প্রেক্ষিতে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ইন্টারনেট আসক্তি: কারণ, প্রভাব, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন যে আমাদের ভালোর জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করা উচিত। ইন্টারনেট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনও ক্ষতিকারক বিষয় থাকলে তা এড়িয়ে চলা উচিত।