ঢাকা ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার হজের খুতবায় করোনামুক্তির জন্য দোয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:২২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুলাই ২০২১
  • ১৮৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে পালিত হলো মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সম্মিলন পবিত্র হজ। স্বাভাবিক সময়ে ২০ থেকে ৩০ লাখ লোক পবিত্র হজে অংশগ্রহণ করলেও করোনাকালের দ্বিতীয় এই হজে যোগ দিয়েছেন মাত্র ৬০ হাজার। সৌদি আরবের বাইরের লোকদের জন্য এবারও সুযোগ ছিল না হজে অংশগ্রহণের।

ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশে হজের খুতবা দিয়েছেন মক্কার মসজিদুল হারামের ইমাম ও শায়খ ড. বান্দার বিন আবদুল আজিজ আল-বালিলা। তিনি খুতবায় উম্মাহকে পথচলার বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি চলমান করোনা মহামারি থেকে বিশ্বকে মুক্ত করতে আল্লাহর দরবারে বিশেষ প্রার্থনা জানান। সবাইকে বেশি বেশি তওবা করার আহ্বানও জানান খতিব।

মহামারিকালে মুসলমানদের করণীয় নির্দেশ করে হজের খতিব বলেন, ‘নবী সা. বলেছেন, যে এলাকায় কোনো ভাইরাস বা মহামারি ছড়িয়ে পড়বে, সেখানকার বাসিন্দারা যেন অন্য কোনো এলাকায় না যায় এবং অন্য এলাকার লোকেরাও যেন সে এলাকায় প্রবেশ না করে। তারা নিজের এলাকা ও এলাকার বাসিন্দাদের জন্য দোয়া করবে। যখন কেউ কারও জন্য দোয়া করে তখন ফেরেশতারাও গর্ববোধ করেন।’

২৫ মিনিটের খুতবায় শায়খ বালিলাহ মুসলিম উম্মাহকে উদ্দেশ্য করে বলেন, উম্মতে মুসলিমদের উচিত পরস্পরের মাঝে সৌহার্দ্য ও সদ্ভাব বজায় রাখা। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিজের নফসকে হেফাজত কর। আল্লাহর ওয়াস্তে তোমার প্রতিশ্রুতি পূরণ কর। খুতবার শেষাংশে তিনি সৌদি সরকারের জন্য দোয়া করেন। এছাড়া বিশ্বে শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

শায়খ ড. বান্দার বিন আবদুল আজিজ বালিলা খুতবায় বলেন, হজ ইসলামের পাঁচ রোকনের গুরুত্বপূর্ণ একটি। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানকে অবশ্যই হজ আদায় করতে হবে। তিনি বলেন, যে আল্লাহ তায়ালা মানুষের সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছে। ফকির-মিসকিন, অসহায়, দুর্বল-এর সাথে অনুগ্রহ করবে। আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর খোঁজখবর রাখবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা অনুগ্রহকারীদের পছন্দ করেন এবং অহংকারকারীদের অপছন্দ করেন।

খুতবায় তিনি বলেন, বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করা উচিত। নবীজি সা. বলেছেন, প্রত্যেক সৎকাজের নেকি দেওয়া হবে। আল্লাহ তায়ালার জীবন ও মৃত্যুকে সৃষ্টি করেছেন যেন পরীক্ষা করেন কে নেক আমল করে এবং কে বদ আমল করে।

খতিব বলেন, মানুষের দেয়া কষ্টে ধৈর্যধারণ করাই পৃথিবীর সৌন্দর্য। দুনিয়াতে যে অনুগ্রহ করবে আখিরাতে সে এর বিনিময়ে ভালো প্রতিবাদ পাবে।

আরাফাত ময়দানে মসজিদে নামিরায় স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠিত হয় হজ। ৬০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি জোহর ও আসরের নামাজ এক আজানে দুই ইকামতে আদায় করেন। বাংলাদেশ সময় বিকাল তিনটা ৩০ মিনিটে হজের খুতবা শুরু হয়।

গত বছরের মতো এবছরও পবিত্র হজের আরবি খুতবা বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়। এর মধ্যে ছিল বাংলা ভাষাও। বাংলা ভাষা ছাড়াও বাকি নয়টি ভাষা হলো ইংরেজি, মালয়, উর্দু, ফার্সি, ফ্রেঞ্চ, মান্দারিন, তুর্কি, রুশ ও হাবসি। ২০১৯ সালের পবিত্র হজে পাঁচ ভাষায় হজের খুতবার অনুবাদ প্রচারিত হয়েছিল।

হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে গতকাল রবিবার থেকে। আরাফাতের ময়দান থেকে হাজিরা সোমবার সূর্যাস্তের পর মুজদালিফায় রওয়ানা হবেন। সেখানে রাত যাপন করে মঙ্গলবার মিনায় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি দেবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

এবার হজের খুতবায় করোনামুক্তির জন্য দোয়া

আপডেট টাইম : ০৯:২২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুলাই ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে পালিত হলো মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সম্মিলন পবিত্র হজ। স্বাভাবিক সময়ে ২০ থেকে ৩০ লাখ লোক পবিত্র হজে অংশগ্রহণ করলেও করোনাকালের দ্বিতীয় এই হজে যোগ দিয়েছেন মাত্র ৬০ হাজার। সৌদি আরবের বাইরের লোকদের জন্য এবারও সুযোগ ছিল না হজে অংশগ্রহণের।

ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশে হজের খুতবা দিয়েছেন মক্কার মসজিদুল হারামের ইমাম ও শায়খ ড. বান্দার বিন আবদুল আজিজ আল-বালিলা। তিনি খুতবায় উম্মাহকে পথচলার বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি চলমান করোনা মহামারি থেকে বিশ্বকে মুক্ত করতে আল্লাহর দরবারে বিশেষ প্রার্থনা জানান। সবাইকে বেশি বেশি তওবা করার আহ্বানও জানান খতিব।

মহামারিকালে মুসলমানদের করণীয় নির্দেশ করে হজের খতিব বলেন, ‘নবী সা. বলেছেন, যে এলাকায় কোনো ভাইরাস বা মহামারি ছড়িয়ে পড়বে, সেখানকার বাসিন্দারা যেন অন্য কোনো এলাকায় না যায় এবং অন্য এলাকার লোকেরাও যেন সে এলাকায় প্রবেশ না করে। তারা নিজের এলাকা ও এলাকার বাসিন্দাদের জন্য দোয়া করবে। যখন কেউ কারও জন্য দোয়া করে তখন ফেরেশতারাও গর্ববোধ করেন।’

২৫ মিনিটের খুতবায় শায়খ বালিলাহ মুসলিম উম্মাহকে উদ্দেশ্য করে বলেন, উম্মতে মুসলিমদের উচিত পরস্পরের মাঝে সৌহার্দ্য ও সদ্ভাব বজায় রাখা। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিজের নফসকে হেফাজত কর। আল্লাহর ওয়াস্তে তোমার প্রতিশ্রুতি পূরণ কর। খুতবার শেষাংশে তিনি সৌদি সরকারের জন্য দোয়া করেন। এছাড়া বিশ্বে শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

শায়খ ড. বান্দার বিন আবদুল আজিজ বালিলা খুতবায় বলেন, হজ ইসলামের পাঁচ রোকনের গুরুত্বপূর্ণ একটি। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানকে অবশ্যই হজ আদায় করতে হবে। তিনি বলেন, যে আল্লাহ তায়ালা মানুষের সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছে। ফকির-মিসকিন, অসহায়, দুর্বল-এর সাথে অনুগ্রহ করবে। আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর খোঁজখবর রাখবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা অনুগ্রহকারীদের পছন্দ করেন এবং অহংকারকারীদের অপছন্দ করেন।

খুতবায় তিনি বলেন, বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করা উচিত। নবীজি সা. বলেছেন, প্রত্যেক সৎকাজের নেকি দেওয়া হবে। আল্লাহ তায়ালার জীবন ও মৃত্যুকে সৃষ্টি করেছেন যেন পরীক্ষা করেন কে নেক আমল করে এবং কে বদ আমল করে।

খতিব বলেন, মানুষের দেয়া কষ্টে ধৈর্যধারণ করাই পৃথিবীর সৌন্দর্য। দুনিয়াতে যে অনুগ্রহ করবে আখিরাতে সে এর বিনিময়ে ভালো প্রতিবাদ পাবে।

আরাফাত ময়দানে মসজিদে নামিরায় স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠিত হয় হজ। ৬০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি জোহর ও আসরের নামাজ এক আজানে দুই ইকামতে আদায় করেন। বাংলাদেশ সময় বিকাল তিনটা ৩০ মিনিটে হজের খুতবা শুরু হয়।

গত বছরের মতো এবছরও পবিত্র হজের আরবি খুতবা বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়। এর মধ্যে ছিল বাংলা ভাষাও। বাংলা ভাষা ছাড়াও বাকি নয়টি ভাষা হলো ইংরেজি, মালয়, উর্দু, ফার্সি, ফ্রেঞ্চ, মান্দারিন, তুর্কি, রুশ ও হাবসি। ২০১৯ সালের পবিত্র হজে পাঁচ ভাষায় হজের খুতবার অনুবাদ প্রচারিত হয়েছিল।

হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে গতকাল রবিবার থেকে। আরাফাতের ময়দান থেকে হাজিরা সোমবার সূর্যাস্তের পর মুজদালিফায় রওয়ানা হবেন। সেখানে রাত যাপন করে মঙ্গলবার মিনায় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি দেবেন।