রামপুরার বনশ্রী এলাকায় দুই শিশুকে মায়ের গলার টিপে হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই কিশোরগঞ্জে মাহাথির মোহাম্মদ শাফি নামে ১৫ মাস বয়সী শিশুপুত্রকে গলা কেটে হত্যা করেছে তার মা।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের প্যারাভাঙ্গা গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনায় শিশুটির মা সালমা আক্তারকে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ।
আটক মা সালমা আক্তার প্যারাভাঙ্গা গ্রামের আসাদ উল্লাহ্র মেয়ে এবং করিমগঞ্জের গুজাদিয়া ইউনিয়নের টামনি আকন্দপাড়া গ্রামের মো. আবুল কালামের স্ত্রী। শিশুটির মা সালমা আক্তার মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও পরিবার জানায়, ১৬-১৭ বছর আগে টামনি আকন্দপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল লতিফ মুন্সীর ছেলে মো. আবুল কালামের সঙ্গে সালমা আক্তারের বিয়ে হয়। কালাম-সালমা দম্পতির তিন মেয়ে ও এক পুত্র সন্তানের মধ্যে মাহাথির মোহাম্মদ শাফি সবার ছোট। তাদের বড় তিন কন্যাসন্তানের মধ্যে সুরাইয়া আক্তার (১০) স্থানীয় শামসুন্নাহার-ওসমান গণি শিক্ষা নিকেতনের নবম শ্রেণির ছাত্রী, কলি আক্তার (১২) গুজাদিয়া আবদুল হেকিম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী এবং তাইয়্যেবা আক্তারের বয়স ৫ বছর।
সালমা আক্তার প্রায় সময়েই শিশুপুত্র মাহাথির মোহাম্মদ শাফিকে নিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। এর আগে একাধিকবার তিনি তার শিশুপুত্রকে পানিতে ফেলে হত্যা চেষ্টা করলেও শিশুটি প্রাণে বেঁচে যায়।
সপ্তাহখানেক আগে সালমা তার সন্তানদের স্বামীর বাড়িতে ফেলে রেখে প্যারাভাঙ্গা গ্রামের বাবার বাড়িতে চলে যান। এ অবস্থায় শুক্রবার সকালে স্বামী আবুল কালাম শিশুপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যান।
সেখানে সারাদিন থাকার পর সন্ধ্যায় শিশুপুত্রকে খালাদের কাছে রেখে টামনি আকন্দপাড়া গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন।
শনিবার সকালে শিশুপুত্রকে হাতের কাছে পেয়ে সালমা তরকারি কাটার বটি তার গলায় চালিয়ে দেয়। এতে শিশুটির গলার বেশিরভাগ অংশ কেটে গেলে রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। শিশুপুত্রকে গলা কেটে হত্যার পর তার লাশ ঘরের দরজার চৌকাঠের সামনে ফেলে রাখে।
খবর পেয়ে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ সময় শিশুপুত্রকে হত্যার অভিযোগে তার মা সালমা আক্তারকে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। এ সময় পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সালমা আক্তার জানান, তার মাথা ঠিক না থাকায় কাছে পেয়ে শিশুপুত্রকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মুর্শেদ জামান জানান, শিশুপুত্রকে হত্যার কথা মা সালমা আক্তার স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।