ঢাকা ১২:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮২ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে শেষ আটে ইতালি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুন ২০২১
  • ১৮৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শুরু থেকে দাপট দেখালেও মাঝখানে এবং একদম অন্তিম মুহূর্তে ইতালির সমর্থকদের ভয় পাইয়ে দিয়েছিল অস্ট্রিয়া। এমনকি শেষদিকে প্রায় ভুলে যেতে বসা গোল হজমের তেতো স্বাদও পেয়েছে ইতালি।

শনিবার লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় ম্যাচে ইতালি ২-১ গোলে জয়ের দেখা পেয়েছে। এটি ইউরোয় মানচিনির দলের টানা চতুর্থ জয়। এর আগে ২০০০ ইউরোয় ইতালি টানা এত ম্যাচ জিতেছিল।

এই নিয়ে টানা ৩১ ম্যাচে অপরাজিত আছে ইতালিয়ানরা। এর আগে ইতালি ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যকার সময়ে ৩০ ম্যাচ অপরাজিত ছিল। ফলে নিজেদের গড়া ৮২ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙেছে টুর্নামেন্টের ফেভারিট দলটি।  তবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড অবশ্য ব্রাজিল আর স্পেনের দখলে। দুই দলই সমান ৩৫টি ম্যাচ অপরাজিত ছিল। আর্জেন্টিনা ৩১ ম্যাচ জিতেছে। অর্থাৎ আজকের জয়ে আর্জেন্টিনার রেকর্ড স্পর্শ করলো ইতালি।

গ্রুপের শেষ ম্যাচে ওয়েলসের বিপক্ষে যে দল নামিয়েছিলেন, তার প্রথম একাদশে সাতটি বদল করে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলোর লড়াইয়ের দল সাজান মানচিনি। গ্রুপের শেষ ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চকে যাচাই করে নিতে চেয়েছিলেন ইতালির কোচ। অন্যদিকে অস্ট্রিয়া গ্রুপের শেষ ম্যাচের প্রথম একাদশ অপরিবর্তিত রেখেই ইতালির বিপক্ষে দল নামায়।

টানা ৩০ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড সঙ্গী করে নামা ইতালি শুরুতে বেশকিছু সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। ১১ মিনিটের মাথায় স্পিনাজ্জোলার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ১৪ মিনিটের মাথায় ইনসিগনের শট প্রতিহত করেন অস্ট্রিয়ার গোলরক্ষক। ১৭ মিনিটের মাথায় বারেল্লার শট আটকে দেল অস্ট্রিয়ার গোলরক্ষক বাখমান।

১৮তম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় অস্ট্রিয়া। কিন্তু আর্নাউতোভিচের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ৩২তম মিনিটে ইমমোবিলের শট পোস্টে প্রতিহত হয়। গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয় ইতালির। এরপর বিরতির আগে স্পিনাজ্জোলার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পর লরেঞ্জোর হেডার মাঠের বাইরে চলে যায়। ফলে দাপট দেখালেও প্রথমার্ধে গোলমুখ খুলতে পারেনি ইতালি।

দ্বিতীয়ার্ধে জমাট রক্ষণ কিছুটা উন্মুক্ত করে আক্রমণে ওঠে অস্ট্রিয়া। ৪৯তম মিনিটে অস্ট্রিয়ার আর্নাউতোভিচের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৫২তম মিনিটে অস্ট্রিয়ার আলাবার শট মাঠের মাইরে। ৪ মিনিট পর একই পরিনতি হয় ইতালির বনুচ্চিরও। ৬৫তম মিনিটে সর্বশেষ ১১ ম্যাচে গোল হজম না করা ইতালিকে চমকে দেন অস্ট্রিয়ার আর্নাউতোভিচ। আলাবার পাস থেকে ইতালির জালে বল জড়িয়ে দন আর্নাউতোভিচ। যদিও রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোল বাতিল করেন। অফসাইডের আওতায় পড়েছিলেন অস্ট্রিয়ার তারকা।

গোল বাতিলের পর যেন ইতালি দল হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। এরপর কিছুক্ষণ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেয় দলটি। ৭২ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা লোকাতেল্লি। যদিও তিনি মাঠের বাইরে বল মেরে বসেন। ৭৩ মিনিটে ইনসাইনের শট মাঠের বাইরে চলে যায়। এরপর ৮৩ মিনিটে ইতালির বেরারদির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধের খেলাও থাকে গোলশূন্য। তবে ভিএআর না ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি গোল বাতিল না করলে এতক্ষণে বড়সড় অঘটনের সাক্ষী থাকত ইউরো ২০২০।

অতিরিক্ত সময়ের খেলা শুরু হতেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ইতালি। অবশেষে বদলি খেলোয়াড় ফেদেরিকো চিয়েসা ইতালিয়ানদের দমবন্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করে। স্পিনাজ্জোলার পাস থেকে বল মাথা দিয়ে নামিয়ে প্রথমে দারুণ দক্ষতায় অস্ট্রিয়ান ডিফেন্ডার লাইমেরের পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে বাঁ-পায়ের অসাধারণ শটে দূরের পোস্টে পাঠিয়ে দেন চিয়েসা।

অস্ট্রিয়া গোল হজমের পর যেন অনেকটা দমে যায়। আক্রমণগুলো হতে থাকে ছন্নছাড়া। ৯৯তম মিনিটে লাইনারের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১০৪ মিনিটে ইনসাইনের শট প্রতিহত করেন অস্ট্রিয়া গোলরক্ষক। তবে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের বিরতির ঠিক আগে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মাত্তেও পেসিনা। খেলার একদম শেষদিকে সাসার গোলে ব্যবধান কমিয়ে আনে অস্ট্রিয়া। কিন্তু ততক্ষণে সময় ঘনিয়ে এসেছে। ফলে জয় ছিনিয়ে নেয় ইতালি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

৮২ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে শেষ আটে ইতালি

আপডেট টাইম : ০৯:৪৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুন ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শুরু থেকে দাপট দেখালেও মাঝখানে এবং একদম অন্তিম মুহূর্তে ইতালির সমর্থকদের ভয় পাইয়ে দিয়েছিল অস্ট্রিয়া। এমনকি শেষদিকে প্রায় ভুলে যেতে বসা গোল হজমের তেতো স্বাদও পেয়েছে ইতালি।

শনিবার লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় ম্যাচে ইতালি ২-১ গোলে জয়ের দেখা পেয়েছে। এটি ইউরোয় মানচিনির দলের টানা চতুর্থ জয়। এর আগে ২০০০ ইউরোয় ইতালি টানা এত ম্যাচ জিতেছিল।

এই নিয়ে টানা ৩১ ম্যাচে অপরাজিত আছে ইতালিয়ানরা। এর আগে ইতালি ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যকার সময়ে ৩০ ম্যাচ অপরাজিত ছিল। ফলে নিজেদের গড়া ৮২ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙেছে টুর্নামেন্টের ফেভারিট দলটি।  তবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড অবশ্য ব্রাজিল আর স্পেনের দখলে। দুই দলই সমান ৩৫টি ম্যাচ অপরাজিত ছিল। আর্জেন্টিনা ৩১ ম্যাচ জিতেছে। অর্থাৎ আজকের জয়ে আর্জেন্টিনার রেকর্ড স্পর্শ করলো ইতালি।

গ্রুপের শেষ ম্যাচে ওয়েলসের বিপক্ষে যে দল নামিয়েছিলেন, তার প্রথম একাদশে সাতটি বদল করে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলোর লড়াইয়ের দল সাজান মানচিনি। গ্রুপের শেষ ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চকে যাচাই করে নিতে চেয়েছিলেন ইতালির কোচ। অন্যদিকে অস্ট্রিয়া গ্রুপের শেষ ম্যাচের প্রথম একাদশ অপরিবর্তিত রেখেই ইতালির বিপক্ষে দল নামায়।

টানা ৩০ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড সঙ্গী করে নামা ইতালি শুরুতে বেশকিছু সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। ১১ মিনিটের মাথায় স্পিনাজ্জোলার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ১৪ মিনিটের মাথায় ইনসিগনের শট প্রতিহত করেন অস্ট্রিয়ার গোলরক্ষক। ১৭ মিনিটের মাথায় বারেল্লার শট আটকে দেল অস্ট্রিয়ার গোলরক্ষক বাখমান।

১৮তম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় অস্ট্রিয়া। কিন্তু আর্নাউতোভিচের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ৩২তম মিনিটে ইমমোবিলের শট পোস্টে প্রতিহত হয়। গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয় ইতালির। এরপর বিরতির আগে স্পিনাজ্জোলার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পর লরেঞ্জোর হেডার মাঠের বাইরে চলে যায়। ফলে দাপট দেখালেও প্রথমার্ধে গোলমুখ খুলতে পারেনি ইতালি।

দ্বিতীয়ার্ধে জমাট রক্ষণ কিছুটা উন্মুক্ত করে আক্রমণে ওঠে অস্ট্রিয়া। ৪৯তম মিনিটে অস্ট্রিয়ার আর্নাউতোভিচের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৫২তম মিনিটে অস্ট্রিয়ার আলাবার শট মাঠের মাইরে। ৪ মিনিট পর একই পরিনতি হয় ইতালির বনুচ্চিরও। ৬৫তম মিনিটে সর্বশেষ ১১ ম্যাচে গোল হজম না করা ইতালিকে চমকে দেন অস্ট্রিয়ার আর্নাউতোভিচ। আলাবার পাস থেকে ইতালির জালে বল জড়িয়ে দন আর্নাউতোভিচ। যদিও রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোল বাতিল করেন। অফসাইডের আওতায় পড়েছিলেন অস্ট্রিয়ার তারকা।

গোল বাতিলের পর যেন ইতালি দল হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। এরপর কিছুক্ষণ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেয় দলটি। ৭২ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা লোকাতেল্লি। যদিও তিনি মাঠের বাইরে বল মেরে বসেন। ৭৩ মিনিটে ইনসাইনের শট মাঠের বাইরে চলে যায়। এরপর ৮৩ মিনিটে ইতালির বেরারদির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধের খেলাও থাকে গোলশূন্য। তবে ভিএআর না ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি গোল বাতিল না করলে এতক্ষণে বড়সড় অঘটনের সাক্ষী থাকত ইউরো ২০২০।

অতিরিক্ত সময়ের খেলা শুরু হতেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ইতালি। অবশেষে বদলি খেলোয়াড় ফেদেরিকো চিয়েসা ইতালিয়ানদের দমবন্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করে। স্পিনাজ্জোলার পাস থেকে বল মাথা দিয়ে নামিয়ে প্রথমে দারুণ দক্ষতায় অস্ট্রিয়ান ডিফেন্ডার লাইমেরের পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে বাঁ-পায়ের অসাধারণ শটে দূরের পোস্টে পাঠিয়ে দেন চিয়েসা।

অস্ট্রিয়া গোল হজমের পর যেন অনেকটা দমে যায়। আক্রমণগুলো হতে থাকে ছন্নছাড়া। ৯৯তম মিনিটে লাইনারের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১০৪ মিনিটে ইনসাইনের শট প্রতিহত করেন অস্ট্রিয়া গোলরক্ষক। তবে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের বিরতির ঠিক আগে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মাত্তেও পেসিনা। খেলার একদম শেষদিকে সাসার গোলে ব্যবধান কমিয়ে আনে অস্ট্রিয়া। কিন্তু ততক্ষণে সময় ঘনিয়ে এসেছে। ফলে জয় ছিনিয়ে নেয় ইতালি।