ঢাকা ০১:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নানা অজুহাতে ভাসানচর থেকে পালাচ্ছে রোহিঙ্গারা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১
  • ১৭৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাতিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্বে এবং চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলা থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচর। হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা নিয়ে গঠিত এ দ্বীপের আয়তন ৬৫ বর্গকিলোমিটার।

কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প থেকে এ পর্যন্ত ভাসানচরে রোহিঙ্গা এসেছে ১৮ হাজার ৩৪৭ জন। দ্বীপটিতে ১ লাখ রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে উন্নত বাসস্থান ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সত্ত্বেও ভাসানচর থেকে পালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। রাতের আঁধারে এবং বাজার করতে যাওয়ার নাম করে গোপনে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে পালিয়ে যাচ্ছে তারা।

 ভাসানচর থেকে রোহিঙ্গাদেরকে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যেতে সাহায্য করছে একটি দালাল চক্র। ভাসানচর থেকে কত রোহিঙ্গা পালিয়েছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। তবে গত ৮-২৩ মে পর্যন্ত ১৬ জন, ২৯ মে ১০ জন, ১১ জুন ১২ জন এবং ২২ জুন ২৪ জন রোহিঙ্গা পালিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে ৩৮ জন রোহিঙ্গাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আটক করতে সক্ষম হন।

দ্বীপটিতে একজন পুলিশ পরিদর্শকসহ ৪৩ জন পুলিশ সদস্য, ২৩৫ জন এপিবিএন সদস্যের পাশাপাশি নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড সদস্যরাও সার্বক্ষণিক তদারকি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।

গত ৩১ মে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার সহকারী হাইকমিশনারসহ ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের সুযোগ-সুবিধা পর্যবেক্ষণ করতে ভাসানচরে যান। এটি ছিল ইউএনএইচসিআর-এর কোনো প্রতিনিধি দলের প্রথম ভাসানচর সফর। এ সময় রোহিঙ্গারা প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা মাসিক ভাতা, মানসম্মত ও পর্যাপ্ত রেশন সরবরাহ, কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও সুচিকিত্সার দাবিতে বিক্ষোভ করে।

এটি ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রথম আনুষ্ঠানিক ক্ষোভ প্রকাশ। পালিয়ে যাওয়া আটককৃত রোহিঙ্গারা জানান, ভাসানচরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও সেখানে তাদের ভালো লাগছিল না। পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ছাড়া ভাসানচরে থাকা কষ্টকর। তাই তারা পালিয়েছে। এছাড়া সেখানে অবস্থানরত কয়েক জন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাসানচরে আসার আগে তাদের মাসিক ভাতা, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত রেশন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা পূরণ না হওয়ায় ভাসানচরে থাকতে তাদের অনীহা

এ ব্যাপারে ভাসানচর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ভাসানচরে অধিকাংশ রোহিঙ্গা থাকার ব্যাপারে সন্তুষ্ট। কিন্তু কিছু বিপত্গামী রোহিঙ্গা যারা মাদক ও চুরির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে তারাই বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এবং পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নানা অজুহাতে ভাসানচর থেকে পালাচ্ছে রোহিঙ্গারা

আপডেট টাইম : ১০:০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাতিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্বে এবং চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলা থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচর। হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা নিয়ে গঠিত এ দ্বীপের আয়তন ৬৫ বর্গকিলোমিটার।

কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প থেকে এ পর্যন্ত ভাসানচরে রোহিঙ্গা এসেছে ১৮ হাজার ৩৪৭ জন। দ্বীপটিতে ১ লাখ রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে উন্নত বাসস্থান ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সত্ত্বেও ভাসানচর থেকে পালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। রাতের আঁধারে এবং বাজার করতে যাওয়ার নাম করে গোপনে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে পালিয়ে যাচ্ছে তারা।

 ভাসানচর থেকে রোহিঙ্গাদেরকে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যেতে সাহায্য করছে একটি দালাল চক্র। ভাসানচর থেকে কত রোহিঙ্গা পালিয়েছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। তবে গত ৮-২৩ মে পর্যন্ত ১৬ জন, ২৯ মে ১০ জন, ১১ জুন ১২ জন এবং ২২ জুন ২৪ জন রোহিঙ্গা পালিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে ৩৮ জন রোহিঙ্গাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আটক করতে সক্ষম হন।

দ্বীপটিতে একজন পুলিশ পরিদর্শকসহ ৪৩ জন পুলিশ সদস্য, ২৩৫ জন এপিবিএন সদস্যের পাশাপাশি নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড সদস্যরাও সার্বক্ষণিক তদারকি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।

গত ৩১ মে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার সহকারী হাইকমিশনারসহ ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের সুযোগ-সুবিধা পর্যবেক্ষণ করতে ভাসানচরে যান। এটি ছিল ইউএনএইচসিআর-এর কোনো প্রতিনিধি দলের প্রথম ভাসানচর সফর। এ সময় রোহিঙ্গারা প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা মাসিক ভাতা, মানসম্মত ও পর্যাপ্ত রেশন সরবরাহ, কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও সুচিকিত্সার দাবিতে বিক্ষোভ করে।

এটি ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রথম আনুষ্ঠানিক ক্ষোভ প্রকাশ। পালিয়ে যাওয়া আটককৃত রোহিঙ্গারা জানান, ভাসানচরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও সেখানে তাদের ভালো লাগছিল না। পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ছাড়া ভাসানচরে থাকা কষ্টকর। তাই তারা পালিয়েছে। এছাড়া সেখানে অবস্থানরত কয়েক জন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাসানচরে আসার আগে তাদের মাসিক ভাতা, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত রেশন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা পূরণ না হওয়ায় ভাসানচরে থাকতে তাদের অনীহা

এ ব্যাপারে ভাসানচর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ভাসানচরে অধিকাংশ রোহিঙ্গা থাকার ব্যাপারে সন্তুষ্ট। কিন্তু কিছু বিপত্গামী রোহিঙ্গা যারা মাদক ও চুরির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে তারাই বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এবং পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।