হাওর বার্তা ডেস্কঃ জীবনে অনেক কেকের নাম শুনলেও ‘গাঁজার কেক’-এর নাম কখনো শোনা হয়নি। গাঁজার কেক দেখতে একেবারে ব্রাউনি কেকের মতোই। খেতেও প্রায় এক। খালি চোখে দেখে বোঝার উপায় নেই, এটার সঙ্গে আসলে কী মেশানো আছে।
গাঁজার নির্যাস থেকে বানানো মাদক এটি। গাঁজার এই কেক তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করতেন রাজধানীর তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী।
গত বুধবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও পল্টন এলাকা থেকে ৩০ পিস গাঁজার কেকসহ তাদের গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনাল টিম।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—কাফিল ওয়ারা রাফিদ, কাজী রিসালাত হোসেন ও সাইফুল ইসলাম সাইফ। কাফিল আমেরিকান ইন্টরন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি)-এ কম্পিউন্টার সায়েন্স, রিসালাত ধানমন্ডির অ্যাডভান্সড প্রফেশনালস-এর এসিসিএ এবং সাইফ পড়ছে ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ-ইউডার চারুকলায়।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, তারা তিন জনই মাদকাসক্ত। অন্যান্য মাদকের পাশাপাশি তারা নিয়মিত গাঁজা সেবন করে আসছে। বছর দেড়েক আগে ইউটিউবে দেখে তারা গাঁজার কেক বানানো শিখেছে। প্রথমে নিজেরা খেলেও পরে বন্ধুদের মধ্যেও এর ব্যপক চাহিদা তৈরি হয়। ব্যবসাটা শুরু করে তখনই।
রাফিদ ও রিসালাত জানিয়েছে, প্রতি পিস গাঁজার কেক তারা ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি করতো। প্রথম দিকে কাছের বন্ধুদের কাছে বিক্রি করলেও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ক্লোজ গ্রুপ তৈরি করে সেখানে বিক্রি করা শুরু করে। অর্ডার দিলে কখনও নিজে বা কখনও ডেলিভারিম্যানদের মাধ্যমে এসব মাদক পাঠানো হতো।
ডিবি জানায়, গাঁজার পাতা থেকে তরল নির্যাস বের করে তৈরি হয় এ কেক এবং অন্য সাধারণ কেকের মতোই খাওয়া যায়। এ কেক যারা খায় তারা বলছে, সিগারেটের খোসায় গাঁজা ভরে সেবনের চাইতে গাঁজার পাতার নির্যাসে তৈরি কেকে কয়েকগুণ বেশি আসক্তি হয় এবং খাওয়ার পর এর প্রতিক্রিয়া শুধু ভয়ঙ্করই নয়, মারাত্মক ক্ষতিকরও বটে।
রমনা জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মিশু বিশ্বাস বলেন, গ্রেফতার তিনজনই মাদকাসক্ত। তাদের দুজন নিজ নিজ বাসায় গাঁজার নির্যাস দিয়ে কেক তৈরি করে বিক্রি করতো। একজন এসব কেক ডেলিভারি করতো।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুর থানার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় সাত দিনের রিমান্ড চান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির রমনা জোনের এসআই জুলহাস উদ্দিন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. শাহিনুর রহমান আসামিদের দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।