সারা দেশে ছয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে । হাওরাঞ্চলে সর্বশেষ ধাপ, জুন মাসে নির্বাচন হবে। এ সময়টা হাওরাঞ্চলে নির্বাচনের অনুকূল সময় না।
হাওরাঞ্চলে একটি মাত্র ফসল বোরো ধান আবাদ হয় । এপ্রিল-জুনে হাওরবাসি ঋণে, কষ্টে, দুর্যোগ এবং দুর্ভোগের সাথে যুদ্ধ করে ফলানো বোরো ধান, ফসল কেটে, বহন করে, ঝেরে, গোলায় তোলায় ব্যস্ত থাকেন । ঔ সময়টায় তাঁদের ফুসরত ফেলার অবকাশ থাকে না । এক মূহুর্তের ‘হের ফের’ এ ফসল তলিয়ে যেতে পারে, বানের ঘোলা জল আর হাওরবাসির কান্নার লোনা জল একাকার হয়ে যায় ।
হাওরাঞ্চলে সাধারণত এপ্রিল-জুন মাসে পানি আসতে থাকে, ধান কাটা হয় । প্রচুর ঝড়, বৃষ্টিও হয় । রাস্তা ঘাট পিচ্ছিল ও কর্দমাক্ত হয়ে পরে । চারদিকে না পানি, না শুকনা অবস্থা বিরাজ করে । নৌকা বা গাড়ী কোনটাই চলার অবস্থা থাকে না ।
সব মিলে বৈরী পরিবেশ, নির্বাচনের অনুকূল নয় । ঘোষিত সময়ে নির্বাচন হয়ত হবে, তবে তা হবে নিরানন্দময় এবং বোঝার উপর শাকের আটিসম । হাওর কৃষকদের উপর চাপিয়ে দেয়া ও ক্ষতিকর ।
হাওর-ভাটি এলাকার নির্বাচনের সময়কাল ঘোষণাকালে এলাকার ভৌগলিক অবস্থা, পরিবেশ, অনুকূল আবহাওয়া এবং আর্থ-সামজিক বিষয়দি বিবেচনা নেয়া হয়নি বলে আমার বিশ্বাস ।
হাওরাঞ্চলের নির্বাচন কে আনন্দময়, উৎসবমূখর পরিবেশে অনুষ্ঠানের সময় (ফেব্রুয়ারি-মার্চ)-কেই বেছে নেয়া উচিত ।
নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের অনুরোধ, সারা দেশ থেকে ভিন্ন পরিবেশের একটি অঞ্চল নিয়ে ভিন্ন ভাবেই ভাবুন । হাওরবাসিকে স্বস্থি দিন, নির্বাচন কে আনন্দময় করে তুলুন ।
লেখক : একজন কৃষি প্রকৌশলী এবং হাওর ভূমিপুত্র