জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডে যুক্ত হচ্ছে ডিজিটাল স্বাক্ষর। এর ফলে এ কার্ড দিয়ে জালিয়াতির ঘটনা কমবে। নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়ে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত ২৩ ফেব্রয়ারি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব একেএম লুৎফর রহমান এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, শিগগিরই স্মার্ট কার্ড নাগরিকদের হাতে তুলে দেয়া হবে, যা যুগান্তকারী ঘটনা। তবে ওই পরিচয়পত্রে ডিজিটাল স্বাক্ষর সুবিধা থাকলে নাগরিকদের তথ্যের নিরাপত্তা অধিকতর নিশ্চিত করতে সুবিধা হতো। এটা ছাড়া নাগরিকরা বিভিন্ন ধরনের হয়রানির মুখে পড়তে পারে। তাই স্মার্ট কার্ডে ডিজিটাল স্বাক্ষর সার্টিফিকেট রাখাটা জরুরি।
nidইসি সচিব সিরাজুল ইসলামকে পাঠানো ওই চিঠিতে ডিজিটাল স্বাক্ষর সার্টিফিকেট স্মার্ট কার্ডে যুক্ত করতে একটি সমঝোতা স্মারককে উপনীত হওয়ার জন্যও বলেছে মন্ত্রণালয়। যার অনুলিপি ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অণুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিনকেও দেওয়া হয়েছে।
ইসি সচিবালয় কর্মকর্তারা জানান, নাগরিকদের উন্নতমানের স্মার্টকার্ড দিতে আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহান্সিং অ্যাকসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্প শুরু করে ইসি। তবে বিভিন্ন সময়ে প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্ড বিতরণ শুরু করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
এমনকি গত বছরের ২৬ মার্চ আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কার্ড বিতরণ হবে বলে জানানো হয়। তবে এ উদ্যোগটিতে ব্যর্থ হলে বাঙালির বর্ষবরণ উৎসব পহেলা বৈশাখে কার্ড বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সে সিদ্ধান্তও আলোর মুখ দেখেনি।
এখন বিতরণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু প্রধানমন্ত্রীরা। কেননা প্রধানমন্ত্রীর সময়সূচি পেলেই এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। নাগরিকের কাঙ্ক্ষিত এ জাতীয় পরিচয়পত্র প্রথমে ২০১৪ সালের ভোটার তালিকায় হালনাগাদে অন্তর্ভুক্ত ৪৭ লাখ নাগরিককে এ কার্ড দেয়া হবে। এর পরেই ঢাকার নাগরিকরা স্মার্টকার্ড হাতে পাবেন।
আইডিইএ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে সাড়ে ৯ কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল। এ জন্যে উৎপাদন শুরুর কথা ছিল ২০১৪ সালের অগাস্টেই। কিন্তু কোনো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি না হওয়ায় উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়নি।
২০১৫ সালে ১৪ জানুয়ারিতে স্মার্ট কার্ড তৈরি ও বিতরণের বিষয়ে ফ্রান্সের ওবার্থার টেকনোলজিস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে ইসি। সে চুক্তি অনুযায়ী স্মার্টকার্ড উৎপাদনের জন্য সেপ্টেম্বরে ১০টি মেশিন বসানো শুরু হয় এনআইডি উইংয়ে। এর পরেই এনআইডি সিপে তথ্য পার্সোনালাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ডিসেম্বরে স্মার্টকার্ড উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। ১০টি মেশিনের মধ্যে একটি বিশেষ কাজের জন্য ব্যবহার করা হবে। এখন পর্যন্ত পুরোদমে সব মেশিনে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়নি।