ঢাকা ০৩:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাকে যেন দিও না ব্যথা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:২৩:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১
  • ১৫৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জোছনা যেভাবে ছড়িয়ে দেয় মন ভোলানো আলো। যে কারও মা-ও তার হৃদয়ে তেমনি আলো ছড়িয়ে দেন। জোছনার আলো এবং মায়ের হাসি যেন একই বৃন্তের দুটি ফুল। যতদিন পৃথিবী থাকবে, ততদিন জোছনা ছড়ানো মায়ের হাসি থাকবে। যে জোছনা ভালোবাসে, সে তার মাকেও ভালোবাসে। মায়ের ভালোবাসায় বেড়ে ওঠে পৃথিবী। জীবজগৎ সবখানেই মায়ের ভালোবাসা অনন্য। দয়াময় আল্লাহ দয়ার নমুনা স্বরূপ মাকে সৃষ্টি করেছেন। রসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা ‘দয়া’ সৃষ্টি করে নিরানব্বই ভাগ নিজের কাছে রাখলেন আর একভাগ সৃষ্টিকুলে ছড়িয়ে দিলেন। ওই একভাগের অর্ধেক মায়ের মধ্যে রেখে দিলেন। আর এ কারণেই সন্তানের প্রতি মায়ের এত ভালোবাসা। বাবা-মার প্রতি রহমতের ডানা বিছিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘আপনার প্রতিপালক ফায়সালা করে দিয়েছেন যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারও ইবাদত করবে না এবং মা-বাবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবে।’ (সুরা বনী ইসরাঈল : ২৩)।

মায়ের সেবার সর্বোচ্চ পুরস্কার আল্লাহ বান্দাকে প্রশান্তিময় জান্নাত দান করবেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মেরাজের রাতে আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম, অতঃপর সেখানে কোরআন তিলাওয়াত শুনতে পেলাম। জিজ্ঞেস করলাম, এই ব্যক্তি কে? ফেরেশতারা বললেন, হারিসা ইবনে নুমান (রা.)। রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, সে ছিল তার মায়ের সঙ্গে ভালো ব্যবহারকারী। (আল মুস্তাদরাক)।

বিশ্বজুড়ে আজ মায়েরা অবহেলিত। সারাটি জীবন শত কষ্ট সহ্য করে, বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াই করে শুধু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বেঁচে থাকেন মা। আর সেই সন্তানরা মা-বাবার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করে। একটু বয়স হলেই মা-বাবাকে ‘ওল্ড ম্যান হাউজ’ তথা বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে। আমাদের দেশে বৃদ্ধাশ্রম তেমন জনপ্রিয় না হলেও ইউরোপ আমেরিকায় এটা খুবই জনপ্রিয়। বৃদ্ধাশ্রমে থাকা মায়েদের খোঁজখবর নেয় না সন্তানরা। তাই বিশেষজ্ঞরা চিন্তা করে বছরের একটি দিন বিশ্ব মা দিবস পালন করার উদ্যোগ নেন। যেন সন্তান মায়ের জন্য একটি দিন উৎসর্গ করে। ওই দিন তারা মার জন্য ভালো খাবার নিয়ে যায় এবং নানাভাবে মাতৃসেবা করে থাকে। আমাদের দেশেও আজ অভিশপ্ত বৃদ্ধাশ্রম বেড়ে চলছে। এটি আমাদের জন্য অশনিসংকেত। ধর্ম আমাদের শিক্ষা দেয়, মায়ের জন্য কোনো দিবস নয় বরং জীবন উৎসর্গ কর। আসুন আমরা শপথ করি জীবনে যত কষ্টই আসুক আমরা বাবা-মাকে আদর-যতেœ আমাদের ঘরেই রাখব। কেননা মা যে আমাদের জান্নাত। জান্নাতকে কেউ কি বৃদ্ধাশ্রমে ঢেলে দেয়।
হজরত আবদুর রহমান (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি কি তোমাদের জঘন্যতম গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না? এ কথা তিনি তিনবার বললেন। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, অবশ্যই করবেন। তিনি (সা.) বললেন, আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া। তিনি হেলান দিয়ে বসা ছিলেন, অতঃপর সোজা হয়ে বসে বলতে লাগলেন, (খুব ভালো করে শোন!) মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। তিনি বারবার এ কথা বলতে থাকেন। অবশেষে আমরা ভাবলাম, তিনি যদি চুপ করতেন। (সহিহ বুখারি)।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জঘন্যতম কবিরা গুনাহসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি নিজের মা-বাবাকে লা’নত করা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মাকে যেন দিও না ব্যথা

আপডেট টাইম : ০৪:২৩:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জোছনা যেভাবে ছড়িয়ে দেয় মন ভোলানো আলো। যে কারও মা-ও তার হৃদয়ে তেমনি আলো ছড়িয়ে দেন। জোছনার আলো এবং মায়ের হাসি যেন একই বৃন্তের দুটি ফুল। যতদিন পৃথিবী থাকবে, ততদিন জোছনা ছড়ানো মায়ের হাসি থাকবে। যে জোছনা ভালোবাসে, সে তার মাকেও ভালোবাসে। মায়ের ভালোবাসায় বেড়ে ওঠে পৃথিবী। জীবজগৎ সবখানেই মায়ের ভালোবাসা অনন্য। দয়াময় আল্লাহ দয়ার নমুনা স্বরূপ মাকে সৃষ্টি করেছেন। রসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা ‘দয়া’ সৃষ্টি করে নিরানব্বই ভাগ নিজের কাছে রাখলেন আর একভাগ সৃষ্টিকুলে ছড়িয়ে দিলেন। ওই একভাগের অর্ধেক মায়ের মধ্যে রেখে দিলেন। আর এ কারণেই সন্তানের প্রতি মায়ের এত ভালোবাসা। বাবা-মার প্রতি রহমতের ডানা বিছিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘আপনার প্রতিপালক ফায়সালা করে দিয়েছেন যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারও ইবাদত করবে না এবং মা-বাবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবে।’ (সুরা বনী ইসরাঈল : ২৩)।

মায়ের সেবার সর্বোচ্চ পুরস্কার আল্লাহ বান্দাকে প্রশান্তিময় জান্নাত দান করবেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মেরাজের রাতে আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম, অতঃপর সেখানে কোরআন তিলাওয়াত শুনতে পেলাম। জিজ্ঞেস করলাম, এই ব্যক্তি কে? ফেরেশতারা বললেন, হারিসা ইবনে নুমান (রা.)। রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, সে ছিল তার মায়ের সঙ্গে ভালো ব্যবহারকারী। (আল মুস্তাদরাক)।

বিশ্বজুড়ে আজ মায়েরা অবহেলিত। সারাটি জীবন শত কষ্ট সহ্য করে, বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াই করে শুধু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বেঁচে থাকেন মা। আর সেই সন্তানরা মা-বাবার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করে। একটু বয়স হলেই মা-বাবাকে ‘ওল্ড ম্যান হাউজ’ তথা বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে। আমাদের দেশে বৃদ্ধাশ্রম তেমন জনপ্রিয় না হলেও ইউরোপ আমেরিকায় এটা খুবই জনপ্রিয়। বৃদ্ধাশ্রমে থাকা মায়েদের খোঁজখবর নেয় না সন্তানরা। তাই বিশেষজ্ঞরা চিন্তা করে বছরের একটি দিন বিশ্ব মা দিবস পালন করার উদ্যোগ নেন। যেন সন্তান মায়ের জন্য একটি দিন উৎসর্গ করে। ওই দিন তারা মার জন্য ভালো খাবার নিয়ে যায় এবং নানাভাবে মাতৃসেবা করে থাকে। আমাদের দেশেও আজ অভিশপ্ত বৃদ্ধাশ্রম বেড়ে চলছে। এটি আমাদের জন্য অশনিসংকেত। ধর্ম আমাদের শিক্ষা দেয়, মায়ের জন্য কোনো দিবস নয় বরং জীবন উৎসর্গ কর। আসুন আমরা শপথ করি জীবনে যত কষ্টই আসুক আমরা বাবা-মাকে আদর-যতেœ আমাদের ঘরেই রাখব। কেননা মা যে আমাদের জান্নাত। জান্নাতকে কেউ কি বৃদ্ধাশ্রমে ঢেলে দেয়।
হজরত আবদুর রহমান (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি কি তোমাদের জঘন্যতম গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না? এ কথা তিনি তিনবার বললেন। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, অবশ্যই করবেন। তিনি (সা.) বললেন, আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া। তিনি হেলান দিয়ে বসা ছিলেন, অতঃপর সোজা হয়ে বসে বলতে লাগলেন, (খুব ভালো করে শোন!) মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। তিনি বারবার এ কথা বলতে থাকেন। অবশেষে আমরা ভাবলাম, তিনি যদি চুপ করতেন। (সহিহ বুখারি)।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জঘন্যতম কবিরা গুনাহসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি নিজের মা-বাবাকে লা’নত করা।