ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেসব উপাদান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৫:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মার্চ ২০২১
  • ২১৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নারীদের অন্যান্য রোগের মধ্যে স্তন ক্যান্সার অন্যতম। যদিও স্তন ক্যান্সার পুরুষদেরও হয়ে থাকে, তবে তা গণনায় খুবই কম। আপনি জানলে অবাক হবেন, সারাবিশ্বে নারীমৃত্যুর অন্যতম কারণ স্তন ক্যান্সার। প্রতি ৬ মিনিটে একজন নারী এতে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ১১ মিনিটে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন নারী মারা যায়। আমাদের দেশে ক্যান্সারে যত নারীর মৃত্যু হয়, তার অন্যতম কারণও স্তন ক্যান্সার।
প্রতি ৮ জন নারীর মধ্যে একজনের স্তন ক্যান্সার হতে পারে এবং আক্রান্ত প্রতি ৩৬ জন নারীর মধ্যে মৃত্যুর সম্ভাবনা একজনের। কিন্তু এতকিছুর পরও আমাদের সমাজে স্তন ক্যান্সার নিয়ে নেই কোনো সচেতনতা। যার কারণে এই রোগে আক্রান্ত রোগী একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ধরা পড়ছে। আর সেই মুহূর্তে তার মৃত্যুর প্রহর গোনা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।

মনে রাখবেন, স্তন ক্যান্সার কোনো লজ্জার বিষয় নয় বা কোনো গোপন রোগ নয়। আমাদের সবার সচেতনতাই পারে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক যেসব উপাদান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়েবং এর প্রতিকার সম্পর্কে-

>> পুরুষদের চেয়ে নারীদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

>> অতিরিক্ত মদ্যপান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

>> ১২ বছর বয়স হওয়ার আগে ঋতুস্রাব হলে তা স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

>> ৫৫ বছর বয়সের পর যদি মেনোপজ হয়, তা স্তন ক্যান্সারের বিকাশ ঘটাতে পারে।

>> ৩৫ বছরের পরে যদি কোনো মহিলা প্রথম সন্তান জন্ম দেয় তবে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

>> যত বয়স বৃদ্ধি হতে থাকে, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ততোই বাড়তে থাকে। অল্প বয়সের চেয়ে বয়স্ক নারীদের বিশেষ করে ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

>> যদি কারো পূর্বে একটি স্তনে ক্যান্সার হয়ে থাকে, তবে তার অন্য স্তনেও ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

>> যদি বংশগত অর্থাৎ কারো মা, বোন অথবা মেয়ের স্তন ক্যান্সার হয়ে থাকে, তবে তার স্তন ক্যান্সারের আশঙ্কা অনেক গুণ বেশি। তবে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়েছে, এমন ব্যক্তিদের অধিকাংশরই কোনো পারিবারিক ইতিহাস নেই।

>> শিশু অথবা তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক তেজস্ক্রিয়/বিকিরণ রশ্মি দিয়ে চিকিৎসা করলে পরবর্তী জীবনে তার স্তন ক্যান্সারের বিকাশের সম্ভাবনা থাকে।

>> মাত্রাতিরিক্ত ওজন স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। চর্বি ইস্ট্রোজেন হরমোন উৎপাদন করে, যা ক্যান্সারের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে।

>> ঋতুজরার লক্ষণ ও উপসর্গ সমূহের জন্য যেসব মহিলা ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরনে মিলিত হরমোনের চিকিৎসা নেন, তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি থাকে।

উপরোক্ত ঝুঁকি থাকলে নারীদের সতর্ক থাকতে হবে ও নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশেই এড়ানো যায়। এই সহজ নিয়মগুলো হলো-

>> অতিরিক্ত মদ্যপান বা মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।

>> শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বিশেষত, স্থূলতার সাথে স্তন ক্যান্সারের একটি যোগসূত্র রয়েছে।

>> প্রত্যেক নারীরই প্রতিদিন আধা ঘণ্টা ব্যায়াম অথবা যেকোনো ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত। কেননা এটা নারীদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে অনেকাংশে মুক্ত রাখে।

>> স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। সবজি জাতীয় খাবার যেমন- বাঁধাকপি, ফুলকপি, ফলমূল ইত্যাদি খাবার বেশি খেতে হবে। এ ধরনের সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়ানো যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

যেসব উপাদান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়

আপডেট টাইম : ০৯:৩৫:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মার্চ ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নারীদের অন্যান্য রোগের মধ্যে স্তন ক্যান্সার অন্যতম। যদিও স্তন ক্যান্সার পুরুষদেরও হয়ে থাকে, তবে তা গণনায় খুবই কম। আপনি জানলে অবাক হবেন, সারাবিশ্বে নারীমৃত্যুর অন্যতম কারণ স্তন ক্যান্সার। প্রতি ৬ মিনিটে একজন নারী এতে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ১১ মিনিটে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন নারী মারা যায়। আমাদের দেশে ক্যান্সারে যত নারীর মৃত্যু হয়, তার অন্যতম কারণও স্তন ক্যান্সার।
প্রতি ৮ জন নারীর মধ্যে একজনের স্তন ক্যান্সার হতে পারে এবং আক্রান্ত প্রতি ৩৬ জন নারীর মধ্যে মৃত্যুর সম্ভাবনা একজনের। কিন্তু এতকিছুর পরও আমাদের সমাজে স্তন ক্যান্সার নিয়ে নেই কোনো সচেতনতা। যার কারণে এই রোগে আক্রান্ত রোগী একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ধরা পড়ছে। আর সেই মুহূর্তে তার মৃত্যুর প্রহর গোনা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।

মনে রাখবেন, স্তন ক্যান্সার কোনো লজ্জার বিষয় নয় বা কোনো গোপন রোগ নয়। আমাদের সবার সচেতনতাই পারে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক যেসব উপাদান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়েবং এর প্রতিকার সম্পর্কে-

>> পুরুষদের চেয়ে নারীদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

>> অতিরিক্ত মদ্যপান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

>> ১২ বছর বয়স হওয়ার আগে ঋতুস্রাব হলে তা স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

>> ৫৫ বছর বয়সের পর যদি মেনোপজ হয়, তা স্তন ক্যান্সারের বিকাশ ঘটাতে পারে।

>> ৩৫ বছরের পরে যদি কোনো মহিলা প্রথম সন্তান জন্ম দেয় তবে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

>> যত বয়স বৃদ্ধি হতে থাকে, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ততোই বাড়তে থাকে। অল্প বয়সের চেয়ে বয়স্ক নারীদের বিশেষ করে ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

>> যদি কারো পূর্বে একটি স্তনে ক্যান্সার হয়ে থাকে, তবে তার অন্য স্তনেও ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

>> যদি বংশগত অর্থাৎ কারো মা, বোন অথবা মেয়ের স্তন ক্যান্সার হয়ে থাকে, তবে তার স্তন ক্যান্সারের আশঙ্কা অনেক গুণ বেশি। তবে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়েছে, এমন ব্যক্তিদের অধিকাংশরই কোনো পারিবারিক ইতিহাস নেই।

>> শিশু অথবা তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক তেজস্ক্রিয়/বিকিরণ রশ্মি দিয়ে চিকিৎসা করলে পরবর্তী জীবনে তার স্তন ক্যান্সারের বিকাশের সম্ভাবনা থাকে।

>> মাত্রাতিরিক্ত ওজন স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। চর্বি ইস্ট্রোজেন হরমোন উৎপাদন করে, যা ক্যান্সারের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে।

>> ঋতুজরার লক্ষণ ও উপসর্গ সমূহের জন্য যেসব মহিলা ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরনে মিলিত হরমোনের চিকিৎসা নেন, তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি থাকে।

উপরোক্ত ঝুঁকি থাকলে নারীদের সতর্ক থাকতে হবে ও নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশেই এড়ানো যায়। এই সহজ নিয়মগুলো হলো-

>> অতিরিক্ত মদ্যপান বা মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।

>> শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বিশেষত, স্থূলতার সাথে স্তন ক্যান্সারের একটি যোগসূত্র রয়েছে।

>> প্রত্যেক নারীরই প্রতিদিন আধা ঘণ্টা ব্যায়াম অথবা যেকোনো ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত। কেননা এটা নারীদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে অনেকাংশে মুক্ত রাখে।

>> স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। সবজি জাতীয় খাবার যেমন- বাঁধাকপি, ফুলকপি, ফলমূল ইত্যাদি খাবার বেশি খেতে হবে। এ ধরনের সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়ানো যায়।