ঢাকা ১০:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

মানুষগড়া কারিগরের মানবেতর জীবন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৪৮:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ১৮২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক সময়ের টগবগে যুবক জয়নাল আবেদীন আজ বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হয়েছেন। ১৯৬৩ সালে তিনি দিনাজপুর ফুলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। লেখাপড়ার পাশাপশি শিক্ষকতা করতেন। থাকতেন সদর উপজেলার দক্ষিণ ঠাকুরগাঁও ও বকসের হাট এলাকায়।

বকসের হাট, বড়গাঁও মাদরাসা, কাচারী বাজার, ফাঁড়াবাড়ী, কদম রসুল, আখানগর, দক্ষিণ বোচাপুকুর স্কুলে শিক্ষকতা করতেন জয়নাল আবেদীন। পরে পাকিস্তান আমলে ফাঁড়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ওইসময় বিদ্যালয়ের টাকা-পয়সা না থাকার পরও বিনাবেতনে শিক্ষকতা করেন। স্কুলের কাজে টাকা ধার করে দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে যেতেন।

সর্বশেষ সদর উপজেলার খড়িবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সেক্রেটারি হিসেবে রাজশাহী ডিজি বরাবরে দরখাস্ত করেন। স্কুলে পাঠদানের অনুমতি গ্রহণসহ বিদ্যালয়ের ভবনের কাজ করেন। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি অজ্ঞাত কারণে অমানবিকভাবে তাকে চাকরিচ্যুত করে। এ ঘটনায় তিনি আদালতের আশ্রয় নেন।

জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমাকে অবৈধভাবে সাসপেন্ড করা হলে আমি ডিসি কোর্টে মামলা করি। ওই কেসে আমার সঙ্গে পারেনি ওরা। পরে মহকুমা শিক্ষা অফিসার এসে ডিসমিস করে এবং প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য করে আরও কয়েকজনকে নিয়োগ দেয়। আমাকেও সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিলে আমি যোগদান করিনি।’

jagonews24

মামলা চালাতে চালাতে সহায় সম্বলহীন এই মানুষ গড়ার কারিগর আজ নিঃস্ব। মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিভিন্ন রোগে তার জীবন এখন সঙ্কটাপন্ন। পরনে ময়লা কাপড়। থাকার ঘর, চিকিৎসা করার মতো টাকা-পয়সা কোনোটাই তার নেই। চিরকুমার এই অসহায় মানুষটিকে শেষ বয়সে দেখারও কেউ নেই। সারাদিন পরে থাকেন সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন বকসের হাটে। সেখানে ময়লা আবর্জনায় শুয়ে দিন কাটান।

এ ব্যাপরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি পরিত্যক্ত ঘরে জয়নাল আবেদীন নামে একজন শিক্ষক মানবেতর জীবনযাপন করছেন বিষযটি গণমাধ্যমের সহায়তায় জানতে পেরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজ নিই। ওই ব্যক্তিকে বয়স্ক ভাতা প্রদানসহ প্রধানমন্ত্রীর আবাস প্রকল্পের আওতায় তাকে একটি ঘর প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। সর্বোপরি চাকরি হারানোর বিষয়েও সহযোগিতা চাইলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

মানুষগড়া কারিগরের মানবেতর জীবন

আপডেট টাইম : ০২:৪৮:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক সময়ের টগবগে যুবক জয়নাল আবেদীন আজ বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হয়েছেন। ১৯৬৩ সালে তিনি দিনাজপুর ফুলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। লেখাপড়ার পাশাপশি শিক্ষকতা করতেন। থাকতেন সদর উপজেলার দক্ষিণ ঠাকুরগাঁও ও বকসের হাট এলাকায়।

বকসের হাট, বড়গাঁও মাদরাসা, কাচারী বাজার, ফাঁড়াবাড়ী, কদম রসুল, আখানগর, দক্ষিণ বোচাপুকুর স্কুলে শিক্ষকতা করতেন জয়নাল আবেদীন। পরে পাকিস্তান আমলে ফাঁড়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ওইসময় বিদ্যালয়ের টাকা-পয়সা না থাকার পরও বিনাবেতনে শিক্ষকতা করেন। স্কুলের কাজে টাকা ধার করে দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে যেতেন।

সর্বশেষ সদর উপজেলার খড়িবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সেক্রেটারি হিসেবে রাজশাহী ডিজি বরাবরে দরখাস্ত করেন। স্কুলে পাঠদানের অনুমতি গ্রহণসহ বিদ্যালয়ের ভবনের কাজ করেন। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি অজ্ঞাত কারণে অমানবিকভাবে তাকে চাকরিচ্যুত করে। এ ঘটনায় তিনি আদালতের আশ্রয় নেন।

জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমাকে অবৈধভাবে সাসপেন্ড করা হলে আমি ডিসি কোর্টে মামলা করি। ওই কেসে আমার সঙ্গে পারেনি ওরা। পরে মহকুমা শিক্ষা অফিসার এসে ডিসমিস করে এবং প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য করে আরও কয়েকজনকে নিয়োগ দেয়। আমাকেও সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিলে আমি যোগদান করিনি।’

jagonews24

মামলা চালাতে চালাতে সহায় সম্বলহীন এই মানুষ গড়ার কারিগর আজ নিঃস্ব। মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিভিন্ন রোগে তার জীবন এখন সঙ্কটাপন্ন। পরনে ময়লা কাপড়। থাকার ঘর, চিকিৎসা করার মতো টাকা-পয়সা কোনোটাই তার নেই। চিরকুমার এই অসহায় মানুষটিকে শেষ বয়সে দেখারও কেউ নেই। সারাদিন পরে থাকেন সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন বকসের হাটে। সেখানে ময়লা আবর্জনায় শুয়ে দিন কাটান।

এ ব্যাপরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি পরিত্যক্ত ঘরে জয়নাল আবেদীন নামে একজন শিক্ষক মানবেতর জীবনযাপন করছেন বিষযটি গণমাধ্যমের সহায়তায় জানতে পেরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজ নিই। ওই ব্যক্তিকে বয়স্ক ভাতা প্রদানসহ প্রধানমন্ত্রীর আবাস প্রকল্পের আওতায় তাকে একটি ঘর প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। সর্বোপরি চাকরি হারানোর বিষয়েও সহযোগিতা চাইলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।