ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতৃত্বে আসছেন যারা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঢাকা মহানগর বিএনপির ঢেলে সাজানো হচ্ছে।  আন্দোলন সংগ্রাম সামনে রেখে মহানগর উত্তর কমিটিতে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্ব বেছে নেওয়া হচ্ছে। শীর্ষ পদে আগের কমিটি থেকে কেউ ঠাঁই পাচ্ছেন না। চলতি মাসেই নতুন কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, বিগত আন্দোলন সংগ্রামে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে ঢাকা মহানগর বিএনপি। এক দশক ধরে রাজপথে দাঁড়াতেই পারছে না উত্তর বিএনপি।  উত্তরের সভাপতি মামলা ও পরোয়ানা নিয়ে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। সাধারণ সম্পাদক বেঁচে নেই।  একজনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।  অন্যদেরকে দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায়নি।

দলে গতি আনতে মহানগরকে দুভাগ করা হয়।  কিন্তু এর পরও আশানুরূপ ফল দেখাতে পারেননি উত্তরের নেতারা। সর্বশেষ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।  এছাড়া সরকারের দুই বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। অতীতের সব ব্যর্থতা মুছে ঢাকায় ঘুরে দাঁড়াতে চায় বিএনপি। তাই ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটি ঢেলে সাজাতে চাইছে হাইকমান্ড।

এজন্য সাংগঠনিক দিকসহ সব কিছু বিবেচনা করে সাবেক জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ও তরুণ নেতৃত্বের হাতে দেওয়া হচ্ছে দায়িত্ব। নেতৃত্ব খুঁজতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যকে দায়িত্বও দেওয়া হয়।  তিনি উত্তর ও দক্ষিণের নেতৃত্বে যারা যোগ্য তাদের একটি তালিকা পাঠান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে। এ ছাড়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজ থেকেও খোঁজ নিয়েছেন। সব কিছু যাচাই-বাছাই করে কমিটি দেওয়া হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, সারা দেশে দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলছে। এর অংশ হিসাবে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটিও পুনর্গঠন করা হবে। সাংগঠনিকভাবে ঢাকা মহানগর দলের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সবকিছু বিবেচনা করে সবার সমন্বয়ে কমিটি করা হবে।

এদিকে ঢাকা মহানগর উত্তরে আহ্বায়ক পদে বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল সভাপতি শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সদস্য সচিব হিসেবে মেয়র পদে দুই দুবার নির্বাচন করা তরুণ নেতা তাবিথ আউয়ালকে দেখা যেতে পারে। এর বাইরে উত্তরে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব হিসাবে আলোচনায় আছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, মহানগর বিএনপি নেতা বজলুল বাসিত আঞ্জু, মোয়াজ্জেম হোসেন ও ফেরদৌস আহমেদ মিষ্টি।

মহানগর বিএনপিকে দুই ভাগ করে সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয় ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল। দলের যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে দক্ষিণের সভাপতি, কাজী আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭০ সদস্যের আংশিক এবং উত্তরে এমএ কাইয়ুমকে সভাপতি, আহসান উল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬৬ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর পার হওয়ায় অনেক আগেই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণার সময়েই তা পূর্ণাঙ্গ করার জন্য কেন্দ্র থেকে এক মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তা মেয়াদ শেষেও সম্ভব হয়নি।

জানা যায়, ঢাকা মহানগর উত্তরে কমিটি ঘোষণার পরপরই দলীয় নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দেখা দেয়। মালয়েশিয়া থেকে সভাপতি এমএ কাইয়ুম কীভাবে দলের নেতৃত্ব দেবেন তা নিয়ে সে সময় বিতর্কও ওঠে। ২০১৮ সালে ঘোষিত থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতে ‘অযোগ্য ও বিতর্কিতদের’ পদায়ন করায় তা নিয়ে কোন্দল আরও তীব্র আকার ধারণ করে।

সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কমিটি বাছাই করা হয়েছে।  যারা রাজপথে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন তাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা হচ্ছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার চিকিৎসার জন্য বিদেশ গেছেন।  তিনি দেশে ফিরলেই কমিটি অনুমোদনের পর ঘোষণা করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর