ঢাকা ০৭:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্রান্সফ্যাটজনিত হৃদরোগ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ১৩০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে দেশে কোনো নীতিমালা না থাকার বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক। উল্লেখ্য, খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা না থাকায় বিশ্বের ১৪৩টি দেশের ৮৮ কোটি ৬০ লাখ মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।

ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের ক্ষেত্রে উচ্চ ও উচ্চমধ্যম আয়ের দেশগুলোয় সর্বোত্তম পন্থা অবলম্বন করা হলেও এক্ষেত্রে নিম্ন বা নিম্নমধ্যম আয়ের কোনো দেশেই এ ধরনের নীতিমালা হয়নি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ট্রান্সফ্যাটজনিত হৃদরোগে মৃত্যুর ক্ষেত্রে সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে প্রকাশিত হেলথ বুলেটিন ২০১৭-এর তথ্যমতে, ২০০৯ থেকে ২০১৬ সময়কালে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ। এ অবস্থায় শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিডের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেশের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

হৃদরোগের অন্যতম কারণ হিসেবে ‘ট্রান্সফ্যাট বা ট্রান্স-ফ্যাটি অ্যাসিড’কে (টিএফএ) দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের মানুষ গড়ে কী পরিমাণ ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ করছে, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় সাধারণত সিঙ্গারা, সমুচা, পুরি, জিলাপি, বিস্কুট, চানাচুর, চিপস ইত্যাদি থাকে, যা হাইড্রোজেনেটেড তেল অর্থাৎ পাম অয়েল কিংবা সয়াবিন তেল দিয়ে কড়া করে ভাজা হয়।

সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো, রান্নার কাজে একই তেল বারবার ব্যবহার করা। এর ফলে ট্রান্সফ্যাট উৎপাদিত হয় এবং এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।

আশার কথা, খাদ্যে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এ সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরিতে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছে। কমিটি ফেব্রুয়ারিতেই খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করতে পারবে বলে জানা গেছে।

ট্রান্সফ্যাটের ঝুঁকি মোকাবিলায় একটি পদক্ষেপ হতে পারে- প্রক্রিয়াজাত ও শিল্প খাতে উৎপাদিত খাবারে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া।

ভারতের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই) ২০০৯ সালে আংশিকভাবে হাইড্রোজেনেটেড তেলে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছিল।

পরে ২০১৫ সালে এটি কমিয়ে ৫ শতাংশে নিয়ে আসা হয়। জানা গেছে, পরবর্তী ধাপে তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রা, যা ২ শতাংশ; সেটি পূরণ করবে। আমাদের দেশেও ট্রান্সফ্যাটের ঝুঁকি কমাতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে জরুরি ভিত্তিতে তা বাস্তবায়ন করা উচিত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ট্রান্সফ্যাটজনিত হৃদরোগ

আপডেট টাইম : ১০:৪৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে দেশে কোনো নীতিমালা না থাকার বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক। উল্লেখ্য, খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা না থাকায় বিশ্বের ১৪৩টি দেশের ৮৮ কোটি ৬০ লাখ মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।

ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের ক্ষেত্রে উচ্চ ও উচ্চমধ্যম আয়ের দেশগুলোয় সর্বোত্তম পন্থা অবলম্বন করা হলেও এক্ষেত্রে নিম্ন বা নিম্নমধ্যম আয়ের কোনো দেশেই এ ধরনের নীতিমালা হয়নি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ট্রান্সফ্যাটজনিত হৃদরোগে মৃত্যুর ক্ষেত্রে সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে প্রকাশিত হেলথ বুলেটিন ২০১৭-এর তথ্যমতে, ২০০৯ থেকে ২০১৬ সময়কালে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ। এ অবস্থায় শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিডের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেশের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

হৃদরোগের অন্যতম কারণ হিসেবে ‘ট্রান্সফ্যাট বা ট্রান্স-ফ্যাটি অ্যাসিড’কে (টিএফএ) দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের মানুষ গড়ে কী পরিমাণ ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ করছে, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় সাধারণত সিঙ্গারা, সমুচা, পুরি, জিলাপি, বিস্কুট, চানাচুর, চিপস ইত্যাদি থাকে, যা হাইড্রোজেনেটেড তেল অর্থাৎ পাম অয়েল কিংবা সয়াবিন তেল দিয়ে কড়া করে ভাজা হয়।

সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো, রান্নার কাজে একই তেল বারবার ব্যবহার করা। এর ফলে ট্রান্সফ্যাট উৎপাদিত হয় এবং এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।

আশার কথা, খাদ্যে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এ সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরিতে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছে। কমিটি ফেব্রুয়ারিতেই খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করতে পারবে বলে জানা গেছে।

ট্রান্সফ্যাটের ঝুঁকি মোকাবিলায় একটি পদক্ষেপ হতে পারে- প্রক্রিয়াজাত ও শিল্প খাতে উৎপাদিত খাবারে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া।

ভারতের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই) ২০০৯ সালে আংশিকভাবে হাইড্রোজেনেটেড তেলে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছিল।

পরে ২০১৫ সালে এটি কমিয়ে ৫ শতাংশে নিয়ে আসা হয়। জানা গেছে, পরবর্তী ধাপে তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রা, যা ২ শতাংশ; সেটি পূরণ করবে। আমাদের দেশেও ট্রান্সফ্যাটের ঝুঁকি কমাতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে জরুরি ভিত্তিতে তা বাস্তবায়ন করা উচিত।