ঝালকাঠিতে গত কয়েক দিনের অসহনীয় গরমে বাড়ছে জ্বর, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ। এসব রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধরা। গত কয়েক দিন ধরে সদর হাসপাতালে শয্যার বিপরীতে দ্বিগুণের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন।
১শ শয্যার ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৮শ থেকে হাজার মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। দীর্ঘ ৬ মাস যাবৎ এক্সরে মেশিনের প্রিন্টার বিকল থাকার পর এখন মূল মেশিনও বিকল। ফলে এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। বাধ্য হয়ে সরকারি ধার্যকৃত টাকার চেয়ে কয়েকগুণ বেশিটাকা গুনে বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হয় রোগীদের।
এছাড়াও হাসপাতালটিতে রয়েছে ওষুধ সংকটও। এদিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন হাসপাতালটি উদ্বোধন হলেও সেবা কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি। তবে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বলছেন শিগগিরই এসব সমস্যা সমাধান করা হবে।
জানা গেছে, হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মোট চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৩৬টি, আছেন মাত্র ১৭ জন। তাদের মধ্যে অন্য হাসপাতালের ৫ জন চিকিৎসক এখানে সংযুক্ত হয়ে কাজ করছেন। সিনিয়র স্টাফ নার্সের মধ্যে প্রয়োজনীয় পুরুষ নার্স কম থাকায় জরুরী সেবায় বিঘ্ন ঘটে। রয়েছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিরও সংকট।
প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল অফিসার ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় যথাযথ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। চক্ষু বিশেষজ্ঞের পদটিও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
হাসপাতালটির প্যাথলজি বিভাগে আধুনিক কোনো যন্ত্রপাতি নেই। ফলে অধিকাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাহিরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করাতে হয় রোগীদের। এতে কয়েকগুণ বেশি টাকা গুনতে হয় তাদের। বিকল পড়ে থাকা এক্সরে মেশিনের কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও সচল করার কোনো পদক্ষেপ নেননি তারা। ঝালকাঠি সদর হাসপালে কেএমসি কর্ণার নেই। এনআইসিউ না থাকায় নবজাতক শিশুদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্বজনদের।
এদিকে ২৫০ শয্যার জন্য ৯ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ হলেও জনবল কাঠামো অনুমোদন না হওয়ায় এখনি চালু হচ্ছে না ২৫০ শয্যার কার্যক্রম।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন সুমন দেবনাথ বলেন,‘ হাসপাতালটি আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এক্স-রে মেশিন দীর্ঘদিন ধরে বিকল থাকায় বাধ্য হয়ে বাহির থেকে বেশি দামে করাতে হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসক সংকট লেগেই আছে। আমরা এর সমাধান চাই
হাসপাতালে ভর্তি কাজেম আলী হাওলাদার বলেন,‘ প্রচণ্ড গরমে মানুষ দিশেহারা হয়ে উঠেছে। গরমের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আমি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। মাঝে মাঝে ডাক্তার আসে আবার আসে না এই অবস্থার মধ্যে চলছে। এখানের সেবা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নই।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.শামীম আহমেদ বলেন,‘ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে যে সমস্যা রয়েছে শিগগিরই এসব সমস্যা সামাধান করা হবে। আমরা আশা করছি দ্রুতই ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন চালু করা সম্ভব হবে।