মৌলভীবাজারের প্রাকৃতিক জলাভূমি হাইল হাওর ও হাকালুকি হাওরকে রামসার সাইট ঘোষণা করা হলে তা হবে জলাভূমি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব জলাভূমি দিবস উপলক্ষে ইউএসএইডের ক্লাইমেট-রেজিলিয়েন্ট ইকোসিস্টেমস অ্যান্ড লাইভলিহুডস (ক্রেল) প্রকল্প আয়োজিত ওয়েটল্যান্ড ওয়াক (জলাভূমি ভ্রমণ) এ অংশ নিয়ে শিক্ষাবিদরা এ মন্তব্য করেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স বিভাগের ২১ জন শিক্ষার্থী ও পাঁচজন শিক্ষক এ জলাভূমি ভ্রমণে অংশ নেন।
বাইক্কাবিলে দুপুরে জলাভূমি ভ্রমণ শেষে অনুষ্ঠিত জীববৈচিত্র্য বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর ড. এজেডএম মনসুর রশিদ, সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহম্মদ বেলাল উদ্দিন, সহযোগী অধ্যাপক ড. রুমেল আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক সুমন রেজা এবং সহকারী অধ্যাপক নুসরাত ইসলাম।
সূচনা বক্তব্য রাখেন ক্রেলের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী (নর্থ-ইস্ট রিজিওন) মাজহারুল ইসলাম জাহাঙ্গীর।
এছাড়াও ক্রেলের কমিউনিকেশন অ্যান্ড আউটরিচ স্পেশালিস্ট জিনাত আরা আফরোজ, কমিউনিকেশন ম্যানেজার ওবায়েদুর ফাত্তাহ্ তানভির, ক্রেল কর্মকর্তা ইলিয়াস মহামুদ পলাশ, ক্রেল কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রফেসর ড. এজেডএম মনসুর রশিদ বলেন, বিশ্বব্যাপী জলাভূমির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে ১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ইরানের রামসার শহরে রামসার সনদ স্বাক্ষরিত হয়, যা মূলত আর্ন্তজাতিকভাবে স্বীকৃত গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি সংরক্ষণ সংক্রান্ত সনদ। সেই থেকে প্রতিবছর ২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব জলাভূমি দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
প্রফেসর রশিদ আরও বলেন, হাইল হাওর ও হাকালুকি হাওরকে রামসারের গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হলে এর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য বিশেষ সংরক্ষণের আওতায় আসবে, যা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
সভায় বক্তারা জানান, শীত মৌসুমে হাইল হাওর ও হাকালুকি হাওর প্রায় বিশ হাজারের বেশি আবাসিক এবং পরিযায়ী পাখির আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে বৈচিত্র্যপূর্ণ বহু বিরল প্রজাতির মাছ ও অন্য জলজ প্রাণীর প্রজনন ক্ষেত্র এ হাওরগুলো। এছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পর্যটন আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে হাকালুকি ও হাইল হাওর।
ক্রেল সূত্র জানায়, ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সহ-ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার হাকালুকি হাওর ও হাইল হাওরের অন্তর্গত বাইক্কা বিলে ক্রেল প্রকল্প জলাভূমি রক্ষণাবেক্ষণ এবং এর সম্পদ উন্নয়নে কাজ করে চলেছে।