সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন প্রতিদিন উন্নয়নের কথা বলতেন, বর্তমানে তেমন করে প্রতিদিন সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর মেহেদীবাগে নিজ বাসভবনে চট্টগ্রাম বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের উদ্যোগে সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশের মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন এসেছে। আমরা সবাই পরিবর্তন চাই। আমাদের পক্ষ থেকে যে ৩১ দফা, সেখানে সবকিছু আছে, কিছু বাকি নেই। উনারা কী সংস্কার করবেন আমি জানি না। আমরা আমাদের ৩১ দফা পরিপূর্ণভাবে আগামী দিনে বাস্তবায়ন করব।’
৩১ দফা ঘোষণার পটভূমি তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘বিএনপি একা না, প্রায় ৫০টার ওপরে দল মিলে ছয় মাস ধরে আলোচনা করেছি, বির্তক করেছি, তারপর এটা করেছি। এটা এমননিই আসেনি। এটা শেখ হাসিনা পলায়নের বহু আগে আমরা করেছি। এখন যারা সংস্কারের কথা বলে তাদের কাউকে তখন আমরা দেখিনি। এখন প্রতিদিন সংস্কার সংস্কার, শেখ হাসিনা যেমন উন্নয়ন উন্নয়ন বলত। এরা সংস্কার সংস্কার বলতেছে। সংস্কার তো বহু আগে দিয়েছি আমরা। তোমরা কী সংস্কার করবা?’
তিনি বলেন, ‘সংস্কার করতে হবে জনগণের মতামত নিয়ে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে পার্লামেন্টে সংস্কার হবে। যেটা টেকসই হবে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হবে। যেটার জন্য আমরা ১৫ বছর যুদ্ধ করেছি। গুম হয়েছি, খুন হয়েছি, জেল খেটেছি। ৬০ লাখ বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। পালিয়ে বেড়িয়েছে, চাকরি হারিয়েছে, ধানক্ষেতে-বেড়িবাঁধে থেকেছে।”
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের লিবারালাইজ ইকোনমি করব, এটা আমাদের দলের সিদ্ধান্ত। অর্থনীতিকে শিথিলকরণ করে ফেলব। ব্যুরোক্রেসির রোল আমরা কমিয়ে দেব। এখানে এই যে এতগুলো স্টেপ পার হয়ে, ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত।’
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য কমাতে ব্যবসায়ীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আপনারা স্বচ্ছতার সঙ্গে সেই ভূমিকা পালন করতে পারলে দেশও লাভবান হবে, আপনারা সম্মানিত হবেন।”
তিনি বলেন, ‘যারা এত বছর লুটপাট করেছে এদের ফিরে আসার অধিকার নেই। এদের ফিরে আসার দরকারও নেই। এরা তো শত শত হাজার হাজার কোটি টাকা…। এদের তো আর ব্যবসা করার দরকার নাই। এদের এখন জেলে যাওয়ার দরকার শুধু।”
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি শুনি মাঝে মাঝে শেখ হাসিনা যে রকম বাইরে থেকে তার লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে, নির্দেশ দেয়। আমি শুনি, বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনেরও যারা পলাতক, তারাও নাকি নির্দেশ দেয়। যারা নির্দেশ নিচ্ছে তাদেরকে সামনে আনেন, চিহ্নিত করেন, পুলিশে রিপোর্ট করেন।’
বঞ্চিত ব্যাবসায়ী ফোরামের আহ্বায়ক এস এম সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও ফোরামের পরিচালক সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী রোকন উদ্দিন মাহমুদের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান, বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের সদস্যসচিব শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।