ঢাকা ০১:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলনবিলের সুস্বাদু পাবদা রফতানি হচ্ছে ভারতে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৭:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১
  • ১৫৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নাটরের সিংড়া উপজেলার চলনবিল এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সুস্বাদু পাবদা মাছের চাষ। বেকার যুবকরা অল্প সময়ে এ মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে সুস্বাদু এ মাছ এখন রফতানি হচ্ছে ভারতে। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে  শুধু ভারতে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাবদা মাছ রফতানি করা সম্ভব বলে জানান রফতানিকারকরা।

জানা গেছে, অল্প সংখ্যক চাষির হাত ধরে সিংড়ার চলনবিল এলাকায় শুরু হয় পাবদা মাছ চাষ। এখন এ অঞ্চলে চাষির সংখ্যা ১০০ জন। গেল মৌসুমে ৫০০ মেট্রিক টনের বেশি পাবদা উৎপাদিত হয়েছে। সামনের মৌসুমে উৎপাদন আরো বেশি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

খামারিরা জানান, বিভিন্ন বেসরকারি হ্যাচারি থেকে পোনা সংগ্রহ করে সেগুলো পুকুরে মিশ্র ও দানাদার খাবার খাইয়ে বড় করা হয়। এক বিঘা আয়তনের একটি পুকুরে দেড় লাখ টাকা খরচ করে প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ উৎপাদন করা যায়। পুকুরপাড় থেকেই গড়ে ৩৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় পাবদা মাছ।

স্থানীয় পাবদা খামারি অধ্যক্ষ আব্দুল আওয়াল জানান, যে পরিমাণ মাছই ধরা হোক না কেন পুকুরপাড় থেকেই তা কিনে নিয়ে যান ঢাকা, বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানের বড় বড় পাইকাররা। লাভ ও বিক্রি- দুটোতেই সুবিধা পাওয়ায় পাবদা চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে চলনবিল অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে।

পাবদা চাষিরা জানান, অন্যান্য ব্যবসা কিংবা পড়াশোনার ফাঁকেও খুব সহজে এ মাছ চাষ করা যায়। বছরে কেউ কেউ প্রায় আড়াই লাখ টাকার মাছ বিক্রি করতে পারেন। মৎস্য বিভাগও বিভিন্নভাবে ট্রেনিং দিচ্ছে। কোনো সমস্যা দেখা দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। সম্প্রতি পাবদা মাছ চাষে ঝুঁকেছেন অনেক বেকার যুবক ও শিক্ষার্থী।

পাবদা রফতানিকারক মো. রিগান জানান, প্রতি বছর চলনবিল এলাকা থেকে ৫০০-৬০০ মেট্রিক টন পাবদা বিভিন্ন জেলা ও ভারতে রফতানি করা হচ্ছে। পচনশীল পণ্য হলেও এ মাছ প্রায় এক সপ্তাহ ভালো থাকে। এ কারণে প্যাকেটজাত হয়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভালোভাবেই চলে যায়।

তিনি আরো জানান, রফতানিকারকদের কোথাও চাঁদাবাজির শিকার হতে হয় না। খুব সহজে গাড়ি জেলায় জেলায় যায়। এ কৃতিত্ব আইসিটি প্রতিমন্ত্রী  ও সিংড়ার এমপি জুনাইদ আহমেদ পলকের। শুল্ক কমানোর পাশাপাশি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো হলে পাবদা মাছ শুধু ভারতেই না, বিশ্বের আরো অনেক দেশে রফতানি করা সম্ভব হবে।

সিংড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লাহ ওয়ালিউল্লাহ জানান, কৃষির যেকোনো সেক্টরের তুলনায় পাবদা চাষ লাভজনক। এ চাষ বৃদ্ধিতে নিয়মিত খামারিদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি বিক্রিতেও সহযোগিতা করা হচ্ছে। রফতানির পাশাপাশি দেশের বাজারে চাহিদা থাকায় পাবদা খামারিরা দিনদিন লাভবান হচ্ছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চলনবিলের সুস্বাদু পাবদা রফতানি হচ্ছে ভারতে

আপডেট টাইম : ১১:২৭:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নাটরের সিংড়া উপজেলার চলনবিল এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সুস্বাদু পাবদা মাছের চাষ। বেকার যুবকরা অল্প সময়ে এ মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে সুস্বাদু এ মাছ এখন রফতানি হচ্ছে ভারতে। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে  শুধু ভারতে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাবদা মাছ রফতানি করা সম্ভব বলে জানান রফতানিকারকরা।

জানা গেছে, অল্প সংখ্যক চাষির হাত ধরে সিংড়ার চলনবিল এলাকায় শুরু হয় পাবদা মাছ চাষ। এখন এ অঞ্চলে চাষির সংখ্যা ১০০ জন। গেল মৌসুমে ৫০০ মেট্রিক টনের বেশি পাবদা উৎপাদিত হয়েছে। সামনের মৌসুমে উৎপাদন আরো বেশি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

খামারিরা জানান, বিভিন্ন বেসরকারি হ্যাচারি থেকে পোনা সংগ্রহ করে সেগুলো পুকুরে মিশ্র ও দানাদার খাবার খাইয়ে বড় করা হয়। এক বিঘা আয়তনের একটি পুকুরে দেড় লাখ টাকা খরচ করে প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ উৎপাদন করা যায়। পুকুরপাড় থেকেই গড়ে ৩৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় পাবদা মাছ।

স্থানীয় পাবদা খামারি অধ্যক্ষ আব্দুল আওয়াল জানান, যে পরিমাণ মাছই ধরা হোক না কেন পুকুরপাড় থেকেই তা কিনে নিয়ে যান ঢাকা, বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানের বড় বড় পাইকাররা। লাভ ও বিক্রি- দুটোতেই সুবিধা পাওয়ায় পাবদা চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে চলনবিল অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে।

পাবদা চাষিরা জানান, অন্যান্য ব্যবসা কিংবা পড়াশোনার ফাঁকেও খুব সহজে এ মাছ চাষ করা যায়। বছরে কেউ কেউ প্রায় আড়াই লাখ টাকার মাছ বিক্রি করতে পারেন। মৎস্য বিভাগও বিভিন্নভাবে ট্রেনিং দিচ্ছে। কোনো সমস্যা দেখা দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। সম্প্রতি পাবদা মাছ চাষে ঝুঁকেছেন অনেক বেকার যুবক ও শিক্ষার্থী।

পাবদা রফতানিকারক মো. রিগান জানান, প্রতি বছর চলনবিল এলাকা থেকে ৫০০-৬০০ মেট্রিক টন পাবদা বিভিন্ন জেলা ও ভারতে রফতানি করা হচ্ছে। পচনশীল পণ্য হলেও এ মাছ প্রায় এক সপ্তাহ ভালো থাকে। এ কারণে প্যাকেটজাত হয়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভালোভাবেই চলে যায়।

তিনি আরো জানান, রফতানিকারকদের কোথাও চাঁদাবাজির শিকার হতে হয় না। খুব সহজে গাড়ি জেলায় জেলায় যায়। এ কৃতিত্ব আইসিটি প্রতিমন্ত্রী  ও সিংড়ার এমপি জুনাইদ আহমেদ পলকের। শুল্ক কমানোর পাশাপাশি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো হলে পাবদা মাছ শুধু ভারতেই না, বিশ্বের আরো অনেক দেশে রফতানি করা সম্ভব হবে।

সিংড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লাহ ওয়ালিউল্লাহ জানান, কৃষির যেকোনো সেক্টরের তুলনায় পাবদা চাষ লাভজনক। এ চাষ বৃদ্ধিতে নিয়মিত খামারিদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি বিক্রিতেও সহযোগিতা করা হচ্ছে। রফতানির পাশাপাশি দেশের বাজারে চাহিদা থাকায় পাবদা খামারিরা দিনদিন লাভবান হচ্ছেন।