হাওর বার্তা ডেস্কঃ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ‘ক্যান্সার ও করোনা আক্রান্ত জনপ্রিয় অভিনেতা আবদুল কাদের মারা গেছেন’। যা একদমই গুজব। আর এই খবরে ক্ষুব্ধ অভিনেতার পরিবার ও স্বজনেরা।
বৃহস্পতিবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া খবরের প্রতিবাদ জানিয়ে মর্মস্পর্শী একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন আবদুল কাদেরের নাতনি সিমরিন লুবাবা।
ভিডিও বার্তায় লুবাবা বলেন, ‘আপনারা কেন আমার দাদাকে নিয়ে ফেক নিউজ বানাচ্ছেন? উনি তো এখনো আমাদের সবার মাঝে বেঁচে আছেন। উনাকে নিয়ে ফেক নিউজ বানালে তো আমার কষ্ট লাগে। ’
ভিডিওতে দেখা যায় কাঁদতে কাঁদতে লুবাবা বলেন, ‘উনি তো আমার জানের দাদা। আমার কি কষ্ট লাগে না? ফেক নিউজ না বানিয়ে দোয়া করেন। ’
রোববার ভারত থেকে দেশে ফেরার পর ক্যান্সার আক্রান্ত আবদুল কাদেরকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরদিন জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। শারীরিক অবস্থা দুর্বল হওয়ায় তাকে ক্যামো থেরাপিও দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি থানার সোনারং গ্রামে অভিনেতা আবদুল কাদেরের জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর তিনি সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে অধ্যাপনায় নিযুক্ত হন। পরে জুতা তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান বাটায় যোগ দেন ১৯৭৯ সালে; সেখানে ছিলেন ৩৫ বছর।
তার অভিনীত মঞ্চনাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে– ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই, স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’, ‘মেরাজ ফকিরের মা’।
টিভিতে তিনি তিন হাজারের মতো নাটকে অভিনয় করেছেন। বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত শিল্পী তিনি।
প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের বহু জনপ্রিয় নাটকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন কাদের। তিনি হুমায়ূনের ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে বদিভাই চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান।
২০০৪ সালে আবদুল কাদের অভিনয় করেন ‘রং নাম্বার’ চলচ্চিত্রে।
দীর্ঘ অভিনয় জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে টেনাশিনাস পদক, মহানগরী সাংস্কৃতিক ফোরাম পদক, অগ্রগামী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পদক, জাদুকর পিসি সরকার পদক, টেলিভিশন দর্শক ফোরাম অ্যাওয়ার্ড, মহানগরী অ্যাওয়ার্ডসহ বেশ কিছু পদকও পেয়েছেন আবদুল কাদের।