হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঘাড়ব্যথার সমস্যা দেখা দেয়নি এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। বিশেষ করে শীতকালে এটি একটি কমন সমস্যা। ঘাড়ব্যথায় পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি ভোগেন।
মেরুদণ্ডের ঘাড়ের অংশকে মেডিকেল ভাষায় সারভাইক্যাল স্পাইন বলে। ঘাড়ে দুই ধরনের ব্যথা হয়।
১. লোকাল বা স্থানীয় ব্যথা
২. রেফার্ড পেইন বা দূরে ছড়িয়ে যাওয়া ব্যথা।
ঘাড়ব্যথার প্রধান কারণ–
ঘাড়ব্যথার একটি কারণ হলো পশচার। এই শব্দটি বলতে বোঝায় ভঙ্গি। যে ভঙ্গিতে আমরা বসি, যে ভঙ্গিতে আমরা ঘাড়কে পরিচালনা করি। ঘাড়ে রয়েছে সাতটি হাড়। এর ভেতর দিয়ে স্পাইনাল কর্ড গেছে, একে মেরুরজ্জু বলে এবং তার থেকে অন্যান্য স্নায়ু গেছে।
আর এই হাড়গুলো একটি আরেকটির সঙ্গে কাপড়ের মতো, কিন্তু শক্ত ও লিগামেন্ট দিয়ে আটকানো রয়েছে।
বেশ কয়েকটি লিগামেন্ট গুচ্ছ রয়েছে। যে কোনো একটিতে অসুবিধা হলে ঘাড়ব্যথা হতে পারে। পেশিতেও হতে পারে। ভাসকুলার পেইন হতে পারে।
এ ছাড়া থাইরয়েড, প্যারাথাইরয়েড ও টনসিল। এগুলোতেও ব্যথা হলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।
ঘাড়ব্যথার আরও যেসব কারণ রযেছে
মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি। অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা বা অনিদ্রা, উচ্চরক্তচাপ ও হৃদরোগ, হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ ও ক্ষয়, হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ, হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া, রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস, সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস ও ফাইব্রোমায়ালজিয়া।
উপসর্গ
ঘাড়ব্যথা হলে এই ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ছাড়া কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অবশ ভাব ও দুর্বল হতে পারে। এ ছাড়া ঘাড়ের মুভমেন্ট ও দাঁড়ানো অবস্থায় কাজ করলে ব্যথা বেড়ে যায়।
যা করণীয়
১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করা এবং মাথার ওপর অতিরিক্ত ওজন নেবেন না। শক্ত বিছানায় ঘুমান ও শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।
২. ব্যথা তীব্র হলে ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) পজিশন বন্ধ করা। এ ছাড়া কাত হয়ে শুয়ে দীর্ঘক্ষণ পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।
৩. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।
৪. ঘাড়ব্যথার সমস্যা দীর্ঘদিন থাকলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক:
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।