হাওর বার্তা ডেস্কঃ আজ রাতে বিশ্বের মানুষ মহাকাশের যে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করবেন তা সচরাচর দেখা যায় না। কেউ দ্বিতীয়বার তো নয়ই, তা দেখার কেটে যায় কয়েকশ বছর। আজ সেই মহেন্দ্রক্ষণ, যা ৮০০ বছর আগে ঘটেছিল। সেদিন সৌরজগতের দুই বৃহত্তম গ্রহ ‘বৃহস্পতি’ ও ‘শনি’ এত কাছে এসেছিল যা মানুষ প্রত্যক্ষ করেছিল। আজ তারা আবারও নিজেদের খুব কাছাকাছি আসবে। বিশ্বের মানুষও তা প্রত্যক্ষ করবেন।
ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, এই ঘটনাকে বলা চলে সৌর-পরিবারের ভাইদের কাছাকাছি আসা। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের হিসাব মতে, সৌরজগত পরিবারের বড় ও মেজো সদস্য যথাক্রমে বৃহস্পতি ও শনিকে এত কাছাকাছি আসতে দেখা গিয়েছিল প্রায় ৮০০ বছর আগে। ৪০০ বছর আগে একবার কাছে এলেও তা পৃথিবী থেকে দেখা যায়নি।
বৃহস্পতি ও শনির এই মহাসংযোগ এত বছর পরে হয় কেন? জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এর কারণ হিসেবে জানান, সৌরজগতের সর্বাপেক্ষা বড় গ্রহ বৃহস্পতি সূর্যকে প্রায় ১২ বছরে এক বার প্রদক্ষিণ করে। আর মেজ অর্থাৎ শনি যেহেতু সূর্য থেকে অনেক বেশি দূরে থাকে তাই তার কক্ষপথের পরিধি বৃহস্পতির কক্ষপথের পরিধির চেয়ে অনেক বেশি। আর তাই সূর্যকে এক বার প্রদক্ষিণ করতে তার লাগে প্রায় সাড়ে ২৯ বছর। অর্থাৎ শনি যখন সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ শেষ করে, বৃহস্পতি তখন সুর্যকে দু’বার প্রদক্ষিণ করে। এর ফলে প্রতি ২০ বছর পর বৃহস্পতি শনিকে অতিক্রম করে এগিয়ে যায়।
পৃথিবী থেকে মহাকাশে জ্যোতিষ্কদের দূরত্ব বা গতি অনুধাবন করতে পারি না, শুধু বিভিন্ন সময়ে তাদের অবস্থান প্রত্যক্ষ করি। বৃহস্পতি যখন শনির খুব কাছে এসে তাকে পেরিয়ে আবার দূরে চলে যায়, তখন শুধু আমরা দেখতে পাই। কিন্তু বৃহস্পতি আর শনি কতটা কাছাকাছি আসছে তা নির্ভর করে পৃথিবীর অবস্থানের উপর। আর সেই অবস্থান অনুযায়ী এ বছর ২১ ডিসেম্বর যখন বৃহস্পতি শনিকে অতিক্রম করবে তখন পৃথিবী থেকে দুটি গ্রহের দূরত্ব হবে ন্যূনতম।
এসময় তাদের ঔজ্জ্বল্য হবে সব থেকে বেশি। ঠিক এই ধরনের ঘটনা এর আগে ঘটেছিল ১৬২৩ সালের ১৬ জুলাই। কিন্তু তখন পৃথিবীর আকাশে দুটি গ্রহের আপাত অবস্থান ছিল সূর্যের খুব কাছে। তাই তা অনেকেই দেখতে পাননি। শনি ও বৃহস্পতির সাথে পৃথিবী যদি পুরোপুরি একই সরল রেখায় অবস্থান না করে তাহলে শনি বৃহস্পতির পেছনে পুরোপুরি ঢাকা পড়ে না। এবারেও তা হবে না। বরং, শনি ও বৃহস্পতিকে ঠিক গায়ে গায়ে লেগে থাকতে দেখা যাবে। এমনটি শেষবার মানুষ দেখেছিল ১২২৬ সালের ৫ মার্চ।