ঢাকা ০৯:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাখির বাসা ভাড়া দিয়ে ১৫ লাখ টাকা আয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৭:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০২০
  • ১৭৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাখির বাসা ভাড়া বাবদ রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা এলাকার পাঁচ আমবাগান মালিকের প্রত্যেককে তিন লাখ ১৩ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে, অর্থাৎ ৫ মালিক পাচ্ছেন ১৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।

শনিবার (২১ নভেম্বর) সকালে বন বিভাগের কর্মকর্তারা বাগান পরিদর্শনে যান। আমবাগানে পাখির বাসায় বাচ্চা রয়েছে, সেসব বাগান মালিককে এ টাকা দেয়া হবে বলে জানানো হয়।

অর্থ বরাদ্দ পাওয়া ওই পাঁচ বাগান মালিক হলেন- খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের মঞ্জুর রহমান, সানার উদ্দিন, সাহাদত হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও ফারুক আনোয়ার।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১ নভেম্বর পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে বন অধিদফতরকে খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে শামুকখোল পাখির বাসার জন্য আমচাষিদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে এ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।

শনিবার সকালে আমবাগান পরিদর্শন করে পাখির অবস্থা দেখতে আসেন বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল ঢাকার বন সংরক্ষক মিহির কুমার, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জিল্লুর রহমান, রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মেহেদীজ্জামান, বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রাহাত হোসেন, ওয়াইল্ড লাইফ রেঞ্জার হেলিম রায়হান ও বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবীর। এ সময় তারা বাগান মালিক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

কর্মকর্তারা জানান, অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে আমবাগানের মালিকদের এ টাকা দেয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঘার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের ওই বাগানটিতে চার বছর ধরে শামুকখোল পাখি এসে বাসা বাঁধে। তারা বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে আসে এবং বাসা বেঁধে বাচ্চা ফুটিয়ে শীত শুরু হলে ও তাদের বাচ্চা উড়তে শিখলে চলে যায়। এবারও সেখানে কয়েক লাখ পাখি বাচ্চা ফুটিয়েছে। বাচ্চাগুলো এখনও উড়তে শেখেনি।

এদিকে পাখি বাসা বাঁধায় গত দুই বছর পাখির জন্য বাগান পরিচর্যা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে আমের ফলন কম হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাগান মালিকরা।

গত বছর একটি গাছের কিছু বাসা ভেঙে দিলে স্থানীয় কিছু পাখিপ্রেমী কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলেন। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানে ইজারাদার আতাউর রহমান পাখিরা ১৫ দিনের মধ্যে চলে না গেলে তিনি সেগুলো তাড়িয়ে দেবেন বলে ‘আলটিমেটাম’ দেন।

এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তা আদালতের নজরে এনে প্রয়োজনীয় আদেশ দেয়ার আরজি করেন এক আইনজীবী। আদালত শুনানি শেষে ‘বাগানের পাখির বাসা কোনোভাবে ভাঙা যাবে না’ বলে আদেশ দেন। একই সঙ্গে বাগান মালিকের সম্ভাব্য ক্ষতি নিরূপণ করে, তা প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওকে নির্দেশ দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পাখির বাসা ভাড়া দিয়ে ১৫ লাখ টাকা আয়

আপডেট টাইম : ০৯:৫৭:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাখির বাসা ভাড়া বাবদ রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা এলাকার পাঁচ আমবাগান মালিকের প্রত্যেককে তিন লাখ ১৩ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে, অর্থাৎ ৫ মালিক পাচ্ছেন ১৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।

শনিবার (২১ নভেম্বর) সকালে বন বিভাগের কর্মকর্তারা বাগান পরিদর্শনে যান। আমবাগানে পাখির বাসায় বাচ্চা রয়েছে, সেসব বাগান মালিককে এ টাকা দেয়া হবে বলে জানানো হয়।

অর্থ বরাদ্দ পাওয়া ওই পাঁচ বাগান মালিক হলেন- খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের মঞ্জুর রহমান, সানার উদ্দিন, সাহাদত হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও ফারুক আনোয়ার।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১ নভেম্বর পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে বন অধিদফতরকে খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে শামুকখোল পাখির বাসার জন্য আমচাষিদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে এ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।

শনিবার সকালে আমবাগান পরিদর্শন করে পাখির অবস্থা দেখতে আসেন বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল ঢাকার বন সংরক্ষক মিহির কুমার, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জিল্লুর রহমান, রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মেহেদীজ্জামান, বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রাহাত হোসেন, ওয়াইল্ড লাইফ রেঞ্জার হেলিম রায়হান ও বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবীর। এ সময় তারা বাগান মালিক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

কর্মকর্তারা জানান, অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে আমবাগানের মালিকদের এ টাকা দেয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঘার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের ওই বাগানটিতে চার বছর ধরে শামুকখোল পাখি এসে বাসা বাঁধে। তারা বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে আসে এবং বাসা বেঁধে বাচ্চা ফুটিয়ে শীত শুরু হলে ও তাদের বাচ্চা উড়তে শিখলে চলে যায়। এবারও সেখানে কয়েক লাখ পাখি বাচ্চা ফুটিয়েছে। বাচ্চাগুলো এখনও উড়তে শেখেনি।

এদিকে পাখি বাসা বাঁধায় গত দুই বছর পাখির জন্য বাগান পরিচর্যা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে আমের ফলন কম হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাগান মালিকরা।

গত বছর একটি গাছের কিছু বাসা ভেঙে দিলে স্থানীয় কিছু পাখিপ্রেমী কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলেন। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানে ইজারাদার আতাউর রহমান পাখিরা ১৫ দিনের মধ্যে চলে না গেলে তিনি সেগুলো তাড়িয়ে দেবেন বলে ‘আলটিমেটাম’ দেন।

এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তা আদালতের নজরে এনে প্রয়োজনীয় আদেশ দেয়ার আরজি করেন এক আইনজীবী। আদালত শুনানি শেষে ‘বাগানের পাখির বাসা কোনোভাবে ভাঙা যাবে না’ বলে আদেশ দেন। একই সঙ্গে বাগান মালিকের সম্ভাব্য ক্ষতি নিরূপণ করে, তা প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওকে নির্দেশ দেন।