হাওর বার্তা ডেস্কঃ র্যাবের অভিযানে মাদক ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখা ও ব্যবহারের দায়ে হাজী সেলিমের ছেলে ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইরফান সেলিমের দেড় বছরের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে কারাগারে ইরফানকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম তাকে এ সাজা দেন। এ সময় ইরফানের দেহরক্ষী মো. জাহিদুলকে ইসলামেও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
তবে মহামারি করোনা ভাইরাসের জন্য কারাগারের নিয়ম অনুযায়ী যে কোনও নতুন বন্দিকে একটি সেলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। সে হিসাব অনুযায়ী ইরফানকেও ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ইরফান কারাগারে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।
এর আগে সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইরফানের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব।
ঘটনাস্থল থেকে সময় সংবাদের বিশেষ প্রতিনিধি ওমর ফারুক জানিয়েছেন, দুপুর ১২টার দিকে অভিযান শুরু হয়। ৮ তলা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে অভিযান চলে। ইরফানের বাসা থেকে বেশকিছু অবৈধ জিনিস উদ্ধার করে র্যাব। এর মধ্যে আছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, যেটা অবৈধ। সেটির কাগজপত্র এখনও দেখাতে পারেননি তিনি। এ ছাড়া ৫-৬ লিটার মদ ও ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় বাড়িটি থেকে। পাওয়া যায় বেশকিছু বিয়ারের ক্যান।
এ ছাড়া অভিযানে বিপুলসংখ্যক ওয়াকিটকিসদৃশ যন্ত্রপাতি জাতীয় সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। র্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা ধারণা করছেন ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করা এবং ঢাকা শহরে অবৈধভাবে কোনো সিগন্যালিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হতো। এগুলোর ন্যায্য কাগজপত্র দেখাতে না পারলে সেগুলোও অবৈধ।
২৫ অক্টোবর রাতে ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও ২৬ অক্টোবর ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওয়াসিফ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনই মেরে ফেলব।’
এরপর বের হয়ে ওয়াসিমকে কিলঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান। তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান।