ঢাকা ০২:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুসলমানবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক এরদোয়ানের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৮:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০
  • ২০৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ইসলাম এবং মুসলমানবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ফরাসি পণ্য বয়কটের জন্য নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বলেন, ‘আমি আমাদের জনগণকে আহ্বান জানাই, আপনারা কখনোই ফরাসি পণ্য কিনবেন না। রবিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানী আঙ্কারায় মহানবী (স.) এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। মহানবীর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের পরই মুসলিমবিশ্বে ফ্রান্সবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

ইউরোপে ক্রমবর্ধমান ইসলামভীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ইউরোপের কিছু কিছু দেশে ইসলাম এবং মুসলিম বিদ্ধেষ রাষ্ট্রীয়নীতিতে পরিণত হয়েছে। সে সব দেশের উচ্চ পর্যায়ও এ নীতিকে সমর্থন করে।

সোমবার টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে, ফ্রান্সে মুসলমানরা নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকলে তাদের রক্ষার জন্য মুসলিম বিশ্বের নেতাদের প্রতি তিনি আহ্বান। বলেন, ফ্রান্সে যদি মুসলমানরা নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকে, চলুন তাদের রক্ষায় এগিয়ে যাই।

তিনি বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে তুরস্ক সম্পর্কীয় প্রতিটি বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রচণ্ডভাবে ইসলামভীতি ছড়ানোর এ মুহূর্তে তাদের চুপ থাকা অন্যায় হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চলতি মাসের শুরুতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইসলামকে বিশ্বের জন্য সংকট হিসেবে আখ্যা দেন। তথাকথিত ইসলামি বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলায় কঠোর আইন প্রণয়েনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন তিনি।

শ্রেণিকক্ষে মহানবীর কার্টুন প্রদর্শনকারী ফরাসি শিক্ষককে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন এরদোয়ান। বলেন, ফ্রান্স নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ, উদার বললেও তা ইসলাম এবং মুসলমানদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ তারা মুসলমানদের কার্টুন দেখানো বাদ দেবে না।

পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সে সবচেয়ে বেশি মুসলমান বাস করে। কারো কারো অভিযোগ ফরাসি সরকার তাদের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

শুধু তুর্কি প্রেসিডেন্ট নন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ইসলাম এবং মুসলমানদের আক্রমণ করায় ম্যাক্রোঁর নিন্দা জানিয়েছেন। কুয়েত, জর্ডান এবং কাতারের বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে ফরাসি পণ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে সিরিয়া, লিবিয়া, গাজাসহ বিভিন্ন জায়গায়।

ফ্রান্স এবং তুরস্কের মধ্যে প্রায় মাসখানেক ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দু’দেশই সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য। আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, লিবিয়ার গৃহযুদ্ধসহ দু’দেশেই বিভিন্নপক্ষকে সমর্থন দিচ্ছে।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এবং প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়। আগস্টে ওই অঞ্চলে যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে ফ্রান্স। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মুসলমানবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক এরদোয়ানের

আপডেট টাইম : ১০:২৮:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ইসলাম এবং মুসলমানবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ফরাসি পণ্য বয়কটের জন্য নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বলেন, ‘আমি আমাদের জনগণকে আহ্বান জানাই, আপনারা কখনোই ফরাসি পণ্য কিনবেন না। রবিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানী আঙ্কারায় মহানবী (স.) এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। মহানবীর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের পরই মুসলিমবিশ্বে ফ্রান্সবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

ইউরোপে ক্রমবর্ধমান ইসলামভীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ইউরোপের কিছু কিছু দেশে ইসলাম এবং মুসলিম বিদ্ধেষ রাষ্ট্রীয়নীতিতে পরিণত হয়েছে। সে সব দেশের উচ্চ পর্যায়ও এ নীতিকে সমর্থন করে।

সোমবার টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে, ফ্রান্সে মুসলমানরা নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকলে তাদের রক্ষার জন্য মুসলিম বিশ্বের নেতাদের প্রতি তিনি আহ্বান। বলেন, ফ্রান্সে যদি মুসলমানরা নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকে, চলুন তাদের রক্ষায় এগিয়ে যাই।

তিনি বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে তুরস্ক সম্পর্কীয় প্রতিটি বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রচণ্ডভাবে ইসলামভীতি ছড়ানোর এ মুহূর্তে তাদের চুপ থাকা অন্যায় হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চলতি মাসের শুরুতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইসলামকে বিশ্বের জন্য সংকট হিসেবে আখ্যা দেন। তথাকথিত ইসলামি বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলায় কঠোর আইন প্রণয়েনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন তিনি।

শ্রেণিকক্ষে মহানবীর কার্টুন প্রদর্শনকারী ফরাসি শিক্ষককে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন এরদোয়ান। বলেন, ফ্রান্স নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ, উদার বললেও তা ইসলাম এবং মুসলমানদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ তারা মুসলমানদের কার্টুন দেখানো বাদ দেবে না।

পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সে সবচেয়ে বেশি মুসলমান বাস করে। কারো কারো অভিযোগ ফরাসি সরকার তাদের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

শুধু তুর্কি প্রেসিডেন্ট নন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ইসলাম এবং মুসলমানদের আক্রমণ করায় ম্যাক্রোঁর নিন্দা জানিয়েছেন। কুয়েত, জর্ডান এবং কাতারের বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে ফরাসি পণ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে সিরিয়া, লিবিয়া, গাজাসহ বিভিন্ন জায়গায়।

ফ্রান্স এবং তুরস্কের মধ্যে প্রায় মাসখানেক ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দু’দেশই সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য। আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, লিবিয়ার গৃহযুদ্ধসহ দু’দেশেই বিভিন্নপক্ষকে সমর্থন দিচ্ছে।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এবং প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়। আগস্টে ওই অঞ্চলে যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে ফ্রান্স। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।