হাওর বার্তা ডেস্কঃ শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক অবিস্মরণীয় নাম, এক অসাধারণ ব্যক্তি। জাতি হিসেবে আমরা যে সবাই বাঙালি-এই ঐতিহাসিক সত্যের মূল ভিত্তি তিনিই রচনা করেছেন।
১৯৩৭ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘকালের প্রধানমন্ত্রীত্বকালে তিনি বহু জনকল্যাণমূলক কাজ করেন। এ সময়ে তিনি ‘ঋণ সালিশী বোর্ড’ গঠন করেন। এর ফলে দরিদ্র চাষীরা সুদখোর মহাজনের কবল থেকে রক্ষা পায়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনি ১৯৫২ সালে সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের অ্যাডভোকেট জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৫৪ সালে দেশের সাধারণ নির্বাচনে তিনি ‘যুক্তফ্রন্ট’ দলের নেতৃত্ব দিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। এরপর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে তিনি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টর-অব-ল এবং ১৯৫৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তানী প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান তাকে ‘হিলাল-ই-পাকিস্তান’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
শিক্ষা বিস্তারে শেরে বাংলার ভূমিকা ছিল অনন্য। ১৯৪০ সালে শেরে বাংলার প্রচেষ্টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল প্রতিষ্ঠিত হয়। একই বছরে তার প্রচেষ্টায় মুন্সিগঞ্জে প্রতিষ্ঠা হয় হরগঙ্গা কলেজ। তার নিজ গ্রামে ও একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। পাশাপাশি এখানে মাদ্রাসা ও হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তপসিলী সম্প্রদায়ের শিক্ষার জন্য তিনি প্রথম বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করেন। ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে কলকাতায় লেডি ব্রার্বোন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি মুসলমানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেন।
১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল এ কে ফজলুক হক ৮৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। একই স্থানে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও খাজা নাজিমুদ্দিনের কবর রয়েছে। তাদের তিনজনের সমাধিস্থলই ঐতিহাসিক তিন নেতার মাজার নামে পরিচিত।
জাতি আজ তাকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে। তার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে। সকালে শেরে বাংলার মাজারে বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছে।