ঢাকা ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেসব আমলে মিলবে জান্নাতুল ফেরদাউস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:২৬:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০২০
  • ১৭৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানুষ দুনিয়ায় যেমন সঞ্চয় করবে, সে অনুযায়ী আখেরাতে প্রতিদান পাবে। কেননা দুনিয়া হলো আখেরাতে শস্যক্ষেত্র। যার চাষাবাদ ভালো হবে, সে ভালো ফসল পাবে। মুমিনের প্রতিদান লাভের বিষয়টিও এমন। যার ঈমান ও আমল ভালো হবে, তার জান্নাতের প্রতিদান তথা স্তরও হবে সেরকম।

পরকালের মানুষের চিরস্থায়ী আবাস হলো জান্নাত ও জাহান্নাম। কর্মফল অনুযায়ী মানুষ এসব স্থানে অবস্থান করবে। আবার যারা জান্নাতে যাবেন তাদের কর্মের মান অনুযায়ী জান্নাতের স্তরও ভিন্ন হবে। মানুষের আমলের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে জান্নাতেরও শ্রেণি-বিভাগ রয়েছে। এ সবের মধ্যে সর্বোচ্চ ও শ্রেষ্ঠ জান্নাতের নাম ‘জান্নাতুল ফেরদাউস’। তাহলে জান্নাতুল ফেরদাউস কারা পাবেন? জান্নাতুল ফেরদাউস লাভে তাদের আমলের ধরণই বা কেমন হবে?

মুমিনের চুড়ান্ত কাঙিক্ষত স্থান জান্নাতুল ফেরদাউস। কুরআন-সুন্নায় পাতায় পাতায় মুমিন মুসলমানের জন্য এ জান্নাত লাভের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। এ জন্য রয়েছে কিছু শর্ত ও কাজ। আলোচিত হয়েছে এর নিয়ম ও পদ্ধতি। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَالَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ سَنُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا وَعْدَ اللّهِ حَقًّا وَمَنْ أَصْدَقُ مِنَ اللّهِ قِيلاً

‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎ কাজ করেছে, আমি তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাব। যে জান্নাতসমূহের তলদেশে প্রবাহিত হবে নদী। তারা চিরকাল সেখানে অবস্থান করবে। আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সত্য সত্য। আল্লাহর চাইতে অধিক সত্যবাদী কে?’ (সুরা নিসা : আয়াত ১২২)

আলোচ্য আয়াতের আলোকে ‘ঈমান’ হলো জান্নাত লাভের প্রথম শর্ত। অর্থাৎ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। তারপর সৎ কাজ করতে হবে। সৎ কাজ হলো বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেসব নিয়ম নীতি ও আদর্শ নিয়ে এসেছেন তার যথাযথ বাস্তবায়ন। আর তাই জান্নাত লাভের সহজ ও সঠিক পথ।

পরকালীন জীবনে মুমিনের সফলতা লাভের এ বিষয়গুলো কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে আলোচিত হয়েছে। মহান আল্লাহর ইচ্ছা যে, তাঁর বান্দারা দুনিয়া ও পরকালে শান্তি এবং নিরাপত্তা লাভে ঈমানের পর আমলের দিকে মনোনিবেশ করবেন। আল্লাহ তাআলা মুমিনের সফলতার কাজগুলো তুলে ধরে বলেন-

‘অবশ্যই মুমিনরা সফলকাম হয়েছে। যারা তাদের নামাজে বিনয়-নম্র। যারা অসার ক্রিয়াকলাপ থেকে বিরত থাকে। যারা জাকাত প্রদানে সক্রিয়। যারা নিজেদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। নিজেদের সংযত রাখে তাদের স্ত্রী অথবা (শরিয়তের বিধি মোতাবেক যারা দাসি, বর্তমানে দাসপ্রথা বিলুপ্ত) অধিকারভুক্ত দাসিগণ ব্যতিত। এতে ( স্ত্রী ও দাসি সম্ভোগে) তারা নিন্দনীয় হবে না। আর কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে (সম্ভোগের জন্য) তারা হবে সীমালঙ্ঘনকারী। আর যারা নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে এবং যারা নিজেদের নামাজে যত্নবান থাকে। তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে- তারা শীতল ছায়াময় জান্নাতের (জান্নাতুল ফেরদাউসের) অধিকারী হবে। যাতে তারা হবে স্থায়ী অবস্থানকারী।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১-১১)

কুরআনুল কারিমের সুরা মুমিনুনের প্রথম আয়াতগুলো নির্দেশনা মোতাবেক নিজেদের পরিচালনাকারীরাই হবে জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী। কুরআনুল কারিম জান্নাতুল ফেরদাউসের মহান অতিথির ব্যাপারে সুস্পষ্ট বর্ণনাও উঠে এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের আপ্যায়নের জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। সেখান থেকে স্থানান্তর কামনা করবে না।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ১০৭-১০৮)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফিক দান করুন। ঈমান লাভের পর কুরআনের বর্ণিত সৎকর্মগুলো যথাযথভাবে করার তাওফিক দান করুন। সর্বোচ্চ শান্তির আবাসস্থল জান্নাতুল ফেরদাউস লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যেসব আমলে মিলবে জান্নাতুল ফেরদাউস

আপডেট টাইম : ০৩:২৬:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানুষ দুনিয়ায় যেমন সঞ্চয় করবে, সে অনুযায়ী আখেরাতে প্রতিদান পাবে। কেননা দুনিয়া হলো আখেরাতে শস্যক্ষেত্র। যার চাষাবাদ ভালো হবে, সে ভালো ফসল পাবে। মুমিনের প্রতিদান লাভের বিষয়টিও এমন। যার ঈমান ও আমল ভালো হবে, তার জান্নাতের প্রতিদান তথা স্তরও হবে সেরকম।

পরকালের মানুষের চিরস্থায়ী আবাস হলো জান্নাত ও জাহান্নাম। কর্মফল অনুযায়ী মানুষ এসব স্থানে অবস্থান করবে। আবার যারা জান্নাতে যাবেন তাদের কর্মের মান অনুযায়ী জান্নাতের স্তরও ভিন্ন হবে। মানুষের আমলের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে জান্নাতেরও শ্রেণি-বিভাগ রয়েছে। এ সবের মধ্যে সর্বোচ্চ ও শ্রেষ্ঠ জান্নাতের নাম ‘জান্নাতুল ফেরদাউস’। তাহলে জান্নাতুল ফেরদাউস কারা পাবেন? জান্নাতুল ফেরদাউস লাভে তাদের আমলের ধরণই বা কেমন হবে?

মুমিনের চুড়ান্ত কাঙিক্ষত স্থান জান্নাতুল ফেরদাউস। কুরআন-সুন্নায় পাতায় পাতায় মুমিন মুসলমানের জন্য এ জান্নাত লাভের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। এ জন্য রয়েছে কিছু শর্ত ও কাজ। আলোচিত হয়েছে এর নিয়ম ও পদ্ধতি। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَالَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ سَنُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا وَعْدَ اللّهِ حَقًّا وَمَنْ أَصْدَقُ مِنَ اللّهِ قِيلاً

‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎ কাজ করেছে, আমি তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাব। যে জান্নাতসমূহের তলদেশে প্রবাহিত হবে নদী। তারা চিরকাল সেখানে অবস্থান করবে। আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সত্য সত্য। আল্লাহর চাইতে অধিক সত্যবাদী কে?’ (সুরা নিসা : আয়াত ১২২)

আলোচ্য আয়াতের আলোকে ‘ঈমান’ হলো জান্নাত লাভের প্রথম শর্ত। অর্থাৎ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। তারপর সৎ কাজ করতে হবে। সৎ কাজ হলো বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেসব নিয়ম নীতি ও আদর্শ নিয়ে এসেছেন তার যথাযথ বাস্তবায়ন। আর তাই জান্নাত লাভের সহজ ও সঠিক পথ।

পরকালীন জীবনে মুমিনের সফলতা লাভের এ বিষয়গুলো কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে আলোচিত হয়েছে। মহান আল্লাহর ইচ্ছা যে, তাঁর বান্দারা দুনিয়া ও পরকালে শান্তি এবং নিরাপত্তা লাভে ঈমানের পর আমলের দিকে মনোনিবেশ করবেন। আল্লাহ তাআলা মুমিনের সফলতার কাজগুলো তুলে ধরে বলেন-

‘অবশ্যই মুমিনরা সফলকাম হয়েছে। যারা তাদের নামাজে বিনয়-নম্র। যারা অসার ক্রিয়াকলাপ থেকে বিরত থাকে। যারা জাকাত প্রদানে সক্রিয়। যারা নিজেদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। নিজেদের সংযত রাখে তাদের স্ত্রী অথবা (শরিয়তের বিধি মোতাবেক যারা দাসি, বর্তমানে দাসপ্রথা বিলুপ্ত) অধিকারভুক্ত দাসিগণ ব্যতিত। এতে ( স্ত্রী ও দাসি সম্ভোগে) তারা নিন্দনীয় হবে না। আর কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে (সম্ভোগের জন্য) তারা হবে সীমালঙ্ঘনকারী। আর যারা নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে এবং যারা নিজেদের নামাজে যত্নবান থাকে। তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে- তারা শীতল ছায়াময় জান্নাতের (জান্নাতুল ফেরদাউসের) অধিকারী হবে। যাতে তারা হবে স্থায়ী অবস্থানকারী।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১-১১)

কুরআনুল কারিমের সুরা মুমিনুনের প্রথম আয়াতগুলো নির্দেশনা মোতাবেক নিজেদের পরিচালনাকারীরাই হবে জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী। কুরআনুল কারিম জান্নাতুল ফেরদাউসের মহান অতিথির ব্যাপারে সুস্পষ্ট বর্ণনাও উঠে এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের আপ্যায়নের জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। সেখান থেকে স্থানান্তর কামনা করবে না।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ১০৭-১০৮)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফিক দান করুন। ঈমান লাভের পর কুরআনের বর্ণিত সৎকর্মগুলো যথাযথভাবে করার তাওফিক দান করুন। সর্বোচ্চ শান্তির আবাসস্থল জান্নাতুল ফেরদাউস লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।