ঢাকা ১০:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব, এ আমার অঙ্গীকার: প্রধানমন্ত্রী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৩১:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০
  • ১৭২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কবি সুকান্তের ভাষায় বলতে চাই— এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার অঙ্গীকার।

তিনি বলেন, সুকান্তের কথাটা সবসময় মনে রাখি। এই বিশ্বকে আমরা এমনভাবে তৈরি করতে চাই, আমাদের শিশুরা যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, চলতে পারে, উন্নত জীবন পেতে পারে। সুন্দর জীবন পেতে পারে, নিরাপদ জীবন পেতে পারে। আর শিক্ষা দীক্ষায় সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।

সোমবার সকালে বিশ্ব শিশু অধিকার দিবস এবং শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০২০’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

এসময় ১৫ আগস্ট কালরাত্রিতে নিহত পরিবারের সদস্য ও শিশুদের হারানো কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমার ছোট ভাই ছিল মাত্র ১০ বছরের একটি শিশু। ঘাতকের দল তাকেও ছাড়েনি। সেই সঙ্গে আরও কয়েকজন শিশুকে তারা হত্যা করে। আমার ফুফাত ভাইয়ের ছেলে ছোট শিশু সুকান্ত; তাকেও হত্যা করেছে। আমার ফুফাতো ভাই ১০ বছরের আরিফ, রাসেলের খেলার সঙ্গী তাকেও হত্যা করেছে। আমাদের বাড়িতে কাজ করতে পোটকা এবং পোটকার মা, ছোট্ট বাচ্চা ছেলে মাত্র ৫/৬ বছর বয়স। তাকেও খুনিরা ছাড়ে নাই।’

‘আর কখনও যেন এই ধরনের ঘটনা না ঘটে। সেটাই আমরা চাই। কিন্তু তারপরও আমরা দেখি বিশ্বের নানা ধরনের সংঘাত, যখন দেখি কোনো শিশুর অকাল মৃত্যু সেটা সত্যি আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। সেটা আমার দেশেই হোক, বা বিদেশেই হোক, বঙ্গোপসাগরেই হোক, ভূমধ্যসাগর পাড়েই হোক, প্রতিটি ঘটনাই আমাদের নাড়া দেয়। কিন্তু আমরা চাই, শিশুদের জন্য এই পৃথিবীটা একটা নির্ভরযোগ্য, শান্তিপূর্ণ বাসযোগ্য স্থান হোক’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এসময় স্বাধীনতার পর জাতির পিতার নেতৃত্বে শিশু অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ তুলে ধরেন। আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

করোনায় স্কুল বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অবসাদের ভুগছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা অন্ততপক্ষে এই করোনাভাইরাস যেহেতু স্কুলে যেতে পারছে না তাই বাচ্চাদের অন্তত কাছাকাছি কোনো পার্কে, বা কোথাও আপনাদের বাচ্চাদের দিনে এক ঘণ্টার জন্য হলেও তাদের একটু নিয়ে যাবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনেই চলতে হবে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাদের একটু খেলাধুলার ব্যবস্থা করা বা তাদের একটু খোলা বাতাস, খোলা রোদে খেলতে দেয়া, এটা এই করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।

অনুষ্ঠানে দুই শিশুর বক্তব্যের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের বক্তব্য এত সুন্দর, ভবিষ্যতে তারা খুব ভাল বক্তা হতে পারবে। নেতাও হতে পারবে, নেতৃত্বও দিতে পারবে আর আজকের এই শিশুদের মধ্যে থেকেই তো কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে বা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বা বৈজ্ঞানিক- অনেকেই অনেক কিছু হতে পারবে। আর আমরা সে ধরনের বহুমুখী জ্ঞান বিকাশের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় সব আমরা করে দিচ্ছি যাতে বহুমুখী শিক্ষাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা মানুষের মতো মানুষ হয়। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত জ্ঞানে-বিজ্ঞানে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসাবে বাঙালি জাতি হিসাবে মাথা উঁচু করে বিশ্বে চলবে। সেটাই আমরা চাই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব, এ আমার অঙ্গীকার: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০২:৩১:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কবি সুকান্তের ভাষায় বলতে চাই— এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার অঙ্গীকার।

তিনি বলেন, সুকান্তের কথাটা সবসময় মনে রাখি। এই বিশ্বকে আমরা এমনভাবে তৈরি করতে চাই, আমাদের শিশুরা যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, চলতে পারে, উন্নত জীবন পেতে পারে। সুন্দর জীবন পেতে পারে, নিরাপদ জীবন পেতে পারে। আর শিক্ষা দীক্ষায় সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।

সোমবার সকালে বিশ্ব শিশু অধিকার দিবস এবং শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০২০’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

এসময় ১৫ আগস্ট কালরাত্রিতে নিহত পরিবারের সদস্য ও শিশুদের হারানো কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমার ছোট ভাই ছিল মাত্র ১০ বছরের একটি শিশু। ঘাতকের দল তাকেও ছাড়েনি। সেই সঙ্গে আরও কয়েকজন শিশুকে তারা হত্যা করে। আমার ফুফাত ভাইয়ের ছেলে ছোট শিশু সুকান্ত; তাকেও হত্যা করেছে। আমার ফুফাতো ভাই ১০ বছরের আরিফ, রাসেলের খেলার সঙ্গী তাকেও হত্যা করেছে। আমাদের বাড়িতে কাজ করতে পোটকা এবং পোটকার মা, ছোট্ট বাচ্চা ছেলে মাত্র ৫/৬ বছর বয়স। তাকেও খুনিরা ছাড়ে নাই।’

‘আর কখনও যেন এই ধরনের ঘটনা না ঘটে। সেটাই আমরা চাই। কিন্তু তারপরও আমরা দেখি বিশ্বের নানা ধরনের সংঘাত, যখন দেখি কোনো শিশুর অকাল মৃত্যু সেটা সত্যি আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। সেটা আমার দেশেই হোক, বা বিদেশেই হোক, বঙ্গোপসাগরেই হোক, ভূমধ্যসাগর পাড়েই হোক, প্রতিটি ঘটনাই আমাদের নাড়া দেয়। কিন্তু আমরা চাই, শিশুদের জন্য এই পৃথিবীটা একটা নির্ভরযোগ্য, শান্তিপূর্ণ বাসযোগ্য স্থান হোক’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এসময় স্বাধীনতার পর জাতির পিতার নেতৃত্বে শিশু অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ তুলে ধরেন। আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

করোনায় স্কুল বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অবসাদের ভুগছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা অন্ততপক্ষে এই করোনাভাইরাস যেহেতু স্কুলে যেতে পারছে না তাই বাচ্চাদের অন্তত কাছাকাছি কোনো পার্কে, বা কোথাও আপনাদের বাচ্চাদের দিনে এক ঘণ্টার জন্য হলেও তাদের একটু নিয়ে যাবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনেই চলতে হবে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাদের একটু খেলাধুলার ব্যবস্থা করা বা তাদের একটু খোলা বাতাস, খোলা রোদে খেলতে দেয়া, এটা এই করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।

অনুষ্ঠানে দুই শিশুর বক্তব্যের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের বক্তব্য এত সুন্দর, ভবিষ্যতে তারা খুব ভাল বক্তা হতে পারবে। নেতাও হতে পারবে, নেতৃত্বও দিতে পারবে আর আজকের এই শিশুদের মধ্যে থেকেই তো কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে বা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বা বৈজ্ঞানিক- অনেকেই অনেক কিছু হতে পারবে। আর আমরা সে ধরনের বহুমুখী জ্ঞান বিকাশের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় সব আমরা করে দিচ্ছি যাতে বহুমুখী শিক্ষাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা মানুষের মতো মানুষ হয়। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত জ্ঞানে-বিজ্ঞানে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসাবে বাঙালি জাতি হিসাবে মাথা উঁচু করে বিশ্বে চলবে। সেটাই আমরা চাই।