ঢাকা ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে লাফিয়ে বাড়ছে সবজির দাম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৫:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০
  • ১৮৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক মাস ধরেই রাজশাহীতে সবজির বাজার অস্থিতিশীল। বারবার ওঠানামা করছে দাম। সবজি কিনতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠলে আপাতত দাম কমার কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বরং লাফিয়ে বাড়ছে সবজির দাম।

শনিবার রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি সবজির দামই চড়া। মাত্র দুই একদিনের ব্যবধানেই কোন কোন সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বারবার সবজির দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ায় বিরক্তি প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। তবে বিক্রেতারা রয়েছেন নির্বিকার। তারা বলছেন, চারদিকে বন্যার পানি। এই সময়ে সবজির দাম বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তারাই বেশি দাম দিয়ে পাইকারি বাজার থেকে সবজি কিনছেন। ফলে এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। তবে বিক্রেতাদের এই বক্তব্য মানতে নারাজ ক্রেতারা। ক্রেতাদের দাবি, বন্যা পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা প্রতিকেজি সবজি ক্রয় মূল্যের দ্বিগুণ দামেও বিক্রি করছেন।

শনিবার বাজারে সব সবজির দামই ছিলো খুব চড়া। মাছ ও মাংস আগের মতোই স্থিতিশীল থাকলেও সবজির দাম খুব বাড়তি। পটলের দাম কেজিতে একদিনের ব্যবধানইে বেড়েছে ১০ টাকা। পটল বৃহস্পতিবার ৫০ টাকা কেজি থাকলেও শনিবার ছিল ৬০ টাকা। বেগুনেরও দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকায় উঠেছে। ঢেঁড়সের দাম বেড়ে ৬০ টাকায় উঠেছে। এছাড়া বাড়তি দাম টমেটো, করলা, পটলেরও। করলা ও টমেটোর দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২০ টাকা করে। তিনদিন আগেও টমেটো ৫০ টাকা কেজি থাকলেও এখন ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। করলার দাম বেড়ে কেজি প্রতি হয়েছে ৮০ টাকা। কয়েকদিন আগের ৪০ টাকার শসার দাম বেড়ে ৮০ টাকায় উঠেছে। বাড়তি দামের কবলে পড়েছে মুলা, পেঁপে, ঝিঙ্গা ও বরবটিও। সহজলভ্য এই সবজিগুলো আর সহজে পাচ্ছেন না ক্রেতারা। এই

সবজিগুলো কিনতেও বেশি দাম গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। পেঁপে ও মুলার দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫ টাকা করে। এখন মুলা ৪০ টাকা এবং ৩০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। ঝিঙ্গার দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৪০ টাকায় উঠেছে। বরবটির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায় উঠেছে। তবে চলতি সপ্তাহে কমেছে কাচাঁমরিচের দাম। গত সপ্তাহে কাচাঁমরিচের কেজি ২০০ টাকা থাকলেও এখন ৪০ টাকা দাম কমে প্রতিকেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এখনও আগের মতোই আছে আদা ও রসুনের দাম। একসপ্তাহ আগেও রসুনের দাম ছিলো কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এখনও একই দামেই পাওয়া যাচ্ছে রসুন। তেমনি আগেও দামেই ক্রেতারা কিনতে পারছেন আদা। আদা গত সপ্তাহের মতোই ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকায় কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।

তবে দাম বাড়তি পেঁয়াজের। লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের। দেশী পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন আর এই দামে পাওয়া যাচ্ছে না। পেঁয়াজের দাম এখন হয়েছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি দাম বেড়েছে ভারতীয় পেঁয়াজেরও। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ছিলো কেজিপ্রতি ৭৫ টাকা। তবে এখন দাম বেড়ে হয়েছে কেজি প্রতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা।

বাড়তি দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। নগরীর সাহেব বাজারে এসেছিলেন পলি রাণী সাহা। তিনি বলেন, আমি সবসময়ই বাজার করি। গত এক মাস ধরেই সব সবজির দাম অনেক বেশি। মাছ ও মাংসের দাম ঠিক থাকলেও সবজি কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, এই কয়দিনে রাজশাহীর বন্যা পরিস্থতির অনেক অবনতি হয়েছে। রাজশাহীর অনেক ফসলি জমি ডুবে গেছে। আর এই জন্যই গত তিন চার দিনে সবজির দাম আরো বেড়েছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে দাম কমতে দেরি হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রাজশাহীতে লাফিয়ে বাড়ছে সবজির দাম

আপডেট টাইম : ১১:৫৫:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক মাস ধরেই রাজশাহীতে সবজির বাজার অস্থিতিশীল। বারবার ওঠানামা করছে দাম। সবজি কিনতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠলে আপাতত দাম কমার কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বরং লাফিয়ে বাড়ছে সবজির দাম।

শনিবার রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি সবজির দামই চড়া। মাত্র দুই একদিনের ব্যবধানেই কোন কোন সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বারবার সবজির দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ায় বিরক্তি প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। তবে বিক্রেতারা রয়েছেন নির্বিকার। তারা বলছেন, চারদিকে বন্যার পানি। এই সময়ে সবজির দাম বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তারাই বেশি দাম দিয়ে পাইকারি বাজার থেকে সবজি কিনছেন। ফলে এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। তবে বিক্রেতাদের এই বক্তব্য মানতে নারাজ ক্রেতারা। ক্রেতাদের দাবি, বন্যা পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা প্রতিকেজি সবজি ক্রয় মূল্যের দ্বিগুণ দামেও বিক্রি করছেন।

শনিবার বাজারে সব সবজির দামই ছিলো খুব চড়া। মাছ ও মাংস আগের মতোই স্থিতিশীল থাকলেও সবজির দাম খুব বাড়তি। পটলের দাম কেজিতে একদিনের ব্যবধানইে বেড়েছে ১০ টাকা। পটল বৃহস্পতিবার ৫০ টাকা কেজি থাকলেও শনিবার ছিল ৬০ টাকা। বেগুনেরও দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকায় উঠেছে। ঢেঁড়সের দাম বেড়ে ৬০ টাকায় উঠেছে। এছাড়া বাড়তি দাম টমেটো, করলা, পটলেরও। করলা ও টমেটোর দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২০ টাকা করে। তিনদিন আগেও টমেটো ৫০ টাকা কেজি থাকলেও এখন ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। করলার দাম বেড়ে কেজি প্রতি হয়েছে ৮০ টাকা। কয়েকদিন আগের ৪০ টাকার শসার দাম বেড়ে ৮০ টাকায় উঠেছে। বাড়তি দামের কবলে পড়েছে মুলা, পেঁপে, ঝিঙ্গা ও বরবটিও। সহজলভ্য এই সবজিগুলো আর সহজে পাচ্ছেন না ক্রেতারা। এই

সবজিগুলো কিনতেও বেশি দাম গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। পেঁপে ও মুলার দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫ টাকা করে। এখন মুলা ৪০ টাকা এবং ৩০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। ঝিঙ্গার দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৪০ টাকায় উঠেছে। বরবটির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায় উঠেছে। তবে চলতি সপ্তাহে কমেছে কাচাঁমরিচের দাম। গত সপ্তাহে কাচাঁমরিচের কেজি ২০০ টাকা থাকলেও এখন ৪০ টাকা দাম কমে প্রতিকেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এখনও আগের মতোই আছে আদা ও রসুনের দাম। একসপ্তাহ আগেও রসুনের দাম ছিলো কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এখনও একই দামেই পাওয়া যাচ্ছে রসুন। তেমনি আগেও দামেই ক্রেতারা কিনতে পারছেন আদা। আদা গত সপ্তাহের মতোই ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকায় কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।

তবে দাম বাড়তি পেঁয়াজের। লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের। দেশী পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন আর এই দামে পাওয়া যাচ্ছে না। পেঁয়াজের দাম এখন হয়েছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি দাম বেড়েছে ভারতীয় পেঁয়াজেরও। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ছিলো কেজিপ্রতি ৭৫ টাকা। তবে এখন দাম বেড়ে হয়েছে কেজি প্রতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা।

বাড়তি দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। নগরীর সাহেব বাজারে এসেছিলেন পলি রাণী সাহা। তিনি বলেন, আমি সবসময়ই বাজার করি। গত এক মাস ধরেই সব সবজির দাম অনেক বেশি। মাছ ও মাংসের দাম ঠিক থাকলেও সবজি কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, এই কয়দিনে রাজশাহীর বন্যা পরিস্থতির অনেক অবনতি হয়েছে। রাজশাহীর অনেক ফসলি জমি ডুবে গেছে। আর এই জন্যই গত তিন চার দিনে সবজির দাম আরো বেড়েছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে দাম কমতে দেরি হবে।