ঢাকা ০২:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ থেকে একাদশের অনলাইন ক্লাস শুরু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৩:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০
  • ১৯৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আজ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস। এরআগে সব কলেজে চিঠি পাঠিয়ে অনলাইনে ক্লাস শুরুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনেই এই ক্লাস চলবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর স্বাভাবিক শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, অনলাইনে ক্লাস শুরু হলেও দেশের বেশিরভাগ এলাকায় (শহরের বাইরে) ইন্টারনেট পরিষেবা মজবুত নয়। এছাড়া করোনার দুর্যোগে অনেক অভিভাবকই ইন্টারনেটের প্যাকেজ কিনতে পারবেন না। একইসঙ্গে অনেকের কাছে অ্যানড্রয়েট মোবাইল সেটেরও অভাব রয়েছে। অবশ্য এর উল্টোচিত্র দেখা গেছে শহরগুলোতে। শহরে অবশ্য ইন্টারনেটের অপর্যাপ্ততা নেই। সবমিলিয়ে একাদশ শ্রেণির ক্লাস নিয়ে শিক্ষা খাতে বৈষম্যের পাশাপাশি অনলাইনে ক্লাসের সফলতা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তবে শিক্ষাবোর্ডগুলো এসব আপত্তি আমলে না নিয়ে অনলাইনে একাদশের ক্লাস শুরুর নির্দেশনা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর কারণে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া যাতে বিঘ্নিত না হয় সে উদ্দেশ্যে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের আজ রবিবার থেকে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মফস্বলের কলেজগুলোতে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাসের ব্যাপারে তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই। আবার মফস্বলের যেসব শিক্ষার্থী ঢাকার কলেজগুলোতে ভর্তি হয়েছে, তাদেরও গ্রামে বসে অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ নেই। গ্রামের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের স্মার্টফোন বা অনলাইন ক্লাসের জন্য অন্যকোনো ডিভাইস নেই। এছাড়া মফস্বলের শিক্ষকরাও তথ্যপ্রযুক্তিতে খুব একটা দক্ষ নন। ফলে মফস্বলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অনলাইন ক্লাস অনেকটা নির্দেশনার মধ্যেই বন্দি হয়ে আছে।

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার বঙ্গবন্ধু কলেজের একজন শিক্ষক জানান, তার কলেজের ১০ শতাংশ মেয়ের ফোন আছে, যার বেশির ভাগই বাটন ফোন। আর ২০ শতাংশ ছেলের স্মার্টফোন আছে। কলেজের বেতন ২০০ টাকা, সেটাই তারা দিতে পারছে না। এখন ইন্টারনেট কিনে অনলাইনে ক্লাসে যোগ দেবে কি করে? বরগুনার একটি কলেজের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, এখানে নিয়মিত বিদ্যুৎও থাকে না। সাধারণ সময়েই শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্লাসে আনতে হয়। আর অনলাইনে ক্লাসের ব্যাপারটি তো আমাদের বলারই সুযোগ নেই। এছাড়া আমাদের কলেজে গরিব শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট কিনতে খরচ কে দেবে?

টাঙ্গাইলের উপজেলা পর্যায়ের একটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নামপ্রকাশ না করে জানান, তারা কাগজে-কলমে অনলাইন ক্লাসের নির্দেশনা মানছেন। ইন্টারনেটের অবস্থা এত খারাপ যে নেটওয়ার্কই পাওয়া যায় না। এরফলে একাদশ শ্রেণিতেও হয়ত কাগজে কলমে ক্লাসের ব্যাপারটি দেখাতে হবে। বাস্তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অপেক্ষা করা ছাড়া অন্যকোনো উপায় নেই।

উল্লেখ্য, মহামারি করোনার কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আজ থেকে একাদশের অনলাইন ক্লাস শুরু

আপডেট টাইম : ১১:১৩:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আজ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস। এরআগে সব কলেজে চিঠি পাঠিয়ে অনলাইনে ক্লাস শুরুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনেই এই ক্লাস চলবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর স্বাভাবিক শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, অনলাইনে ক্লাস শুরু হলেও দেশের বেশিরভাগ এলাকায় (শহরের বাইরে) ইন্টারনেট পরিষেবা মজবুত নয়। এছাড়া করোনার দুর্যোগে অনেক অভিভাবকই ইন্টারনেটের প্যাকেজ কিনতে পারবেন না। একইসঙ্গে অনেকের কাছে অ্যানড্রয়েট মোবাইল সেটেরও অভাব রয়েছে। অবশ্য এর উল্টোচিত্র দেখা গেছে শহরগুলোতে। শহরে অবশ্য ইন্টারনেটের অপর্যাপ্ততা নেই। সবমিলিয়ে একাদশ শ্রেণির ক্লাস নিয়ে শিক্ষা খাতে বৈষম্যের পাশাপাশি অনলাইনে ক্লাসের সফলতা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তবে শিক্ষাবোর্ডগুলো এসব আপত্তি আমলে না নিয়ে অনলাইনে একাদশের ক্লাস শুরুর নির্দেশনা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর কারণে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া যাতে বিঘ্নিত না হয় সে উদ্দেশ্যে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের আজ রবিবার থেকে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মফস্বলের কলেজগুলোতে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাসের ব্যাপারে তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই। আবার মফস্বলের যেসব শিক্ষার্থী ঢাকার কলেজগুলোতে ভর্তি হয়েছে, তাদেরও গ্রামে বসে অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ নেই। গ্রামের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের স্মার্টফোন বা অনলাইন ক্লাসের জন্য অন্যকোনো ডিভাইস নেই। এছাড়া মফস্বলের শিক্ষকরাও তথ্যপ্রযুক্তিতে খুব একটা দক্ষ নন। ফলে মফস্বলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অনলাইন ক্লাস অনেকটা নির্দেশনার মধ্যেই বন্দি হয়ে আছে।

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার বঙ্গবন্ধু কলেজের একজন শিক্ষক জানান, তার কলেজের ১০ শতাংশ মেয়ের ফোন আছে, যার বেশির ভাগই বাটন ফোন। আর ২০ শতাংশ ছেলের স্মার্টফোন আছে। কলেজের বেতন ২০০ টাকা, সেটাই তারা দিতে পারছে না। এখন ইন্টারনেট কিনে অনলাইনে ক্লাসে যোগ দেবে কি করে? বরগুনার একটি কলেজের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, এখানে নিয়মিত বিদ্যুৎও থাকে না। সাধারণ সময়েই শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্লাসে আনতে হয়। আর অনলাইনে ক্লাসের ব্যাপারটি তো আমাদের বলারই সুযোগ নেই। এছাড়া আমাদের কলেজে গরিব শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট কিনতে খরচ কে দেবে?

টাঙ্গাইলের উপজেলা পর্যায়ের একটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নামপ্রকাশ না করে জানান, তারা কাগজে-কলমে অনলাইন ক্লাসের নির্দেশনা মানছেন। ইন্টারনেটের অবস্থা এত খারাপ যে নেটওয়ার্কই পাওয়া যায় না। এরফলে একাদশ শ্রেণিতেও হয়ত কাগজে কলমে ক্লাসের ব্যাপারটি দেখাতে হবে। বাস্তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অপেক্ষা করা ছাড়া অন্যকোনো উপায় নেই।

উল্লেখ্য, মহামারি করোনার কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।