ঢাকা ০৯:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলামের সঙ্গে জীবনের সম্পর্ক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৫৬:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অক্টোবর ২০২০
  • ১৮৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইসলাম একটি আরবি পরিভাষা। এর আভিধানিক অর্থ- আনুগত্য করা, আত্মসমর্পণ করা, অনুগত হওয়া, কোনো কিছু মাথা পেতে নেয়া। এটি সালম, সিলম বা সিলমুন মূল ধাতু থেকে এসেছে। যার এক অর্থ- শান্তি, সন্ধি, সমর্পন ও নিরাপত্তা। যেহেতু আত্মসমর্পণের মাধ্যমে শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ হয়, তাই একে ইসলাম বলা হয়।

অন্য কথায়, ইসলাম-এর অর্থ আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে তার নির্দেশ মেনে নেয়ার মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জন করা। ‘ইসলাম’ শব্দটিতে আল্লাহ তাআলার ধর্মের মূলতত্ত্ব নিহিত রয়েছে। তাই আরবি ভাষায় ইসলাম বলতে বুঝায় আনুগত্য, বাধ্যতা ও আত্মসমর্পণ। আর  ইসলাম গ্রহণ করার মাধ্যমেই আল্লাহর কাছে সমর্পণ করতে হয়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি আনুগত্য ও বাধ্যতা স্বীকার করে নেয়া যে জীবনাদর্শের লক্ষ্য তার-ই নাম ইসলাম। জীবনের প্রতিক্ষেত্রে, প্রতিস্তরে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের বিধিনিষেধ পালন করা; তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা এবং এ লক্ষ্যে নিজেকে বিলীন করে দেয়ার নামও ইসলাম।

ইসলামে সমাজ ও রাষ্ট্রকে অশান্তি, জুলুম ও বিশৃঙ্খলা থেকে মুক্ত রাখার নির্দেশ রয়েছে বলেই ইসলাম শান্তির আদর্শ। মানুষ যদি সত্যিই শান্তি পেতে চায় তবে তার নিজের ইচ্ছে মতো জীবন যাপন না করে আল্লাহর দেয়া বিধান মেনে চলতে হবে। তাই আল্লাহ তার প্রেরিত জীবন ব্যবস্থার নাম রেখেছেন ইসলাম।

ইসলাম শব্দটির অর্থের মধ্যে বিশেষ গুণের পরিচয় পরিস্ফুটিত। ইসলাম-ই শুধু ইসলামের তুলনা। নাম থেকেই বুঝা যায় যে, ইসলাম কোনো ব্যক্তি বিশেষের আবিষ্কার নয়, কোনো জাতির নামানুসারেও এ মতাদর্শের নাম হ নি। ইসলাম নামটি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রদত্ত। তাই ইসলাম নামটি অনেক গুরুত্ব বহণ করে। ইসলামের সঙ্গে রয়েছে মানুষের জীবনের সুগভীর সম্পর্ক।

ইসলাম মানুষের চলার পথের সন্ধানদাতা, উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধশালী জীবন এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জন তথা মানবজীবনের চরম লক্ষ্য হাসিলের একমাত্র পন্থা। এর ব্যাপ্তী জীবনের সর্বক্ষেত্রে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনের সব ক্ষেত্রেই ইসলামের নিয়ন্ত্রণাধিকার। ইসলাম মানুষের সঠিক পথের দিশারী, দুনিয়া ও আখেরাতের সর্বাঙ্গীণ ও পূর্ণাঙ্গ একমাত্র জীবন ব্যবস্থা। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে একাধিক স্থানে এ বক্তব্য তুলে ধরেছেন-

– إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللّهِ الإِسْلاَمُ

‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য একমাত্র জীবন ব্যবস্থা হলো ইসলাম।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯)

– الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا

‘আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে (জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামকে) পূর্নাঙ্গ করে দিলামতোমাদের প্রতি আমার অবদান পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৩)

কুরআনুল কারিমের আয়াতে কারিমা থেকে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, আল্লাহ তাআলা ইসলামকে মানবতার জন্য নেয়ামত হিসেবে পাঠিয়েছেন, যাতে রয়েছে মানুষের জীবনের সব সমস্যার সমাধান। এখন হয়তো কেউ প্রশ্ন করতে পারেন যে- ইসলাম গ্রহণ করলে আমাদের কী লাভ?

এক কথায় বলা যায়-

ইসলাম গ্রহণ করলে অনেক লাভ রয়েছে। প্রথমত ইসলাম গ্রহণ করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্য লাভ করতে পারি। হাদিসে পাকে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা বলেছেন-

‘বান্দা যখন ইসলাম গ্রহণ করে আর তার ইসলাম খাঁটি হয়, আল্লাহ তা দ্বারা তার প্রায়শ্চিত্ত করে দেন সে আগে যা অপরাধ করেছে। অতপর তার সৎকাজ হয় অসৎ কাজের বিনিময়; সৎকাজ তার দশগুণ হতে সাত শত গুণ বরং বহু গুণ পর্যন্ত আর অসৎকাজ তার একগুণ মাত্র, তবে আল্লাহ যাকে ছেড়ে দেন তার একগুণের শাস্তিও হবে না।’ (বুখারি)

প্রকৃত পক্ষে কেউ যদি ইসলাম গ্রহণ করার সৌভাগ্য লাভ করে তবে সে মূলত নিজেকেই অনুগ্রহীত করে থাকে। যেভাবে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন-

يَمُنُّونَ عَلَيْكَ أَنْ أَسْلَمُوا قُل لَّا تَمُنُّوا عَلَيَّ إِسْلَامَكُم بَلِ اللَّهُ يَمُنُّ عَلَيْكُمْ أَنْ هَدَاكُمْ لِلْإِيمَانِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ

তারা ইসলম গ্রহণের মাধ্যমে (মুসলমান হয়ে) আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। (হে রাসুল! আপনি) বলুনতোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না। বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেনযদি তোমরা সত্যনিষ্ঠ হয়ে থাক।’ (সুরা হুজাত : আয়াত ১৭)

সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকে হজরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত সব সম্মানিত নবি-রাসুলের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মানুষকে ধর্ম  তথা সত্য জীবন ব্যবস্থার দিকে আহ্বান করেছেন। আর এ জীবন ব্যবস্থা ইসলাম সত্য ও ন্যায়ের শাশ্বত সৌন্দর্যের আলোকে পথ দেখিয়ে চলেছে সমগ্র মানব জাতিকে।

মানুষের মধ্যে যারা প্রকৃত জ্ঞানী ও অনুসন্ধানী, কেবল তারাই খুঁজে পেয়েছেন সেই সত্যের ও শান্তির সন্ধান, খুঁজে পেয়েছেন একমাত্র প্রতিপালক আল্লাহকে এবং জেনেছেন নিজের চিরস্থায়ী গন্তব্যের প্রকৃত ঠিকানা।

অত্যাধুনিক সভ্যতা ও তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর সমৃদ্ধির এ যুগে মানুষ আজ কঠিনতম বাস্তবতার শিকার। সবাই চায় সচ্ছলতা, চায় শান্তি। বস্তুত মানুষ বেশির ভাগ ক্ষেতে আত্মিক শান্তির পিয়াসী। আর বেঁচে থাকার জন্য এটি অপরিহার্য।

মহান আল্লাহ তাআলা মনোনীত পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা ‘ইসলাম’, সেই অনন্ত শান্তির বাণীই প্রচার করছে। তাই তো মানুষ শাশ্বত ধর্ম দ্বীন ইসলামের অনিন্দ্য সুন্দর আদর্শ যুগ যুগ ধরে গ্রহণ করে আসছে।

ইসলাম যে দিনের পর দিন উন্নতি করেই যাচ্ছে এর কারণ কি? দিনের পর দিন ইসলামের যে উন্নতি হচ্ছে এর প্রধান কারণ হচ্ছে- ইসলামের তুলনাহীন আদর্শ ও সুমহান শিক্ষা। ইসলামের উন্নতি সম্পর্কে অনেকেই অনেক মন্তব্যও করেছেন। যেমন-

– বিখ্যাত দার্শনিক জর্জ বার্নার্ড শ’ বলেছিলেন, ‘আমি ভবিষ্যদ্বাণী করছি যে, ‘মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রচারিত ধর্ম ‘ইসলাম’ আগামী দিনের ইউরোপবাসীদের কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য হবে। ইতিমধ্যে আজকের ইউরোপবাসীরা ইসলাম গ্রহণ করতে শুরু করেছে।’ (জেনুইন ইসলাম)

বর্তমান বিশ্ব, বিশেষত খ্রিষ্টবাদের প্রাণকেন্দ্র ইউরোপ ও আমেরিকার দিকে তাকালেই জর্জ বার্নার্ড শ’র  সেই ভবিষ্যদ্বাণীর বাস্তবতার প্রমাণ মেলে। সত্য আর শান্তির সন্ধ্যানে মানুষ পাগলপারা হয়ে ইসলামের সঠিক বিশ্বাসের দিকেই ছুটে আসছে। ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ইসলামের সঙ্গে জীবনের সম্পর্ক

আপডেট টাইম : ০২:৫৬:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইসলাম একটি আরবি পরিভাষা। এর আভিধানিক অর্থ- আনুগত্য করা, আত্মসমর্পণ করা, অনুগত হওয়া, কোনো কিছু মাথা পেতে নেয়া। এটি সালম, সিলম বা সিলমুন মূল ধাতু থেকে এসেছে। যার এক অর্থ- শান্তি, সন্ধি, সমর্পন ও নিরাপত্তা। যেহেতু আত্মসমর্পণের মাধ্যমে শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ হয়, তাই একে ইসলাম বলা হয়।

অন্য কথায়, ইসলাম-এর অর্থ আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে তার নির্দেশ মেনে নেয়ার মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জন করা। ‘ইসলাম’ শব্দটিতে আল্লাহ তাআলার ধর্মের মূলতত্ত্ব নিহিত রয়েছে। তাই আরবি ভাষায় ইসলাম বলতে বুঝায় আনুগত্য, বাধ্যতা ও আত্মসমর্পণ। আর  ইসলাম গ্রহণ করার মাধ্যমেই আল্লাহর কাছে সমর্পণ করতে হয়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি আনুগত্য ও বাধ্যতা স্বীকার করে নেয়া যে জীবনাদর্শের লক্ষ্য তার-ই নাম ইসলাম। জীবনের প্রতিক্ষেত্রে, প্রতিস্তরে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের বিধিনিষেধ পালন করা; তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা এবং এ লক্ষ্যে নিজেকে বিলীন করে দেয়ার নামও ইসলাম।

ইসলামে সমাজ ও রাষ্ট্রকে অশান্তি, জুলুম ও বিশৃঙ্খলা থেকে মুক্ত রাখার নির্দেশ রয়েছে বলেই ইসলাম শান্তির আদর্শ। মানুষ যদি সত্যিই শান্তি পেতে চায় তবে তার নিজের ইচ্ছে মতো জীবন যাপন না করে আল্লাহর দেয়া বিধান মেনে চলতে হবে। তাই আল্লাহ তার প্রেরিত জীবন ব্যবস্থার নাম রেখেছেন ইসলাম।

ইসলাম শব্দটির অর্থের মধ্যে বিশেষ গুণের পরিচয় পরিস্ফুটিত। ইসলাম-ই শুধু ইসলামের তুলনা। নাম থেকেই বুঝা যায় যে, ইসলাম কোনো ব্যক্তি বিশেষের আবিষ্কার নয়, কোনো জাতির নামানুসারেও এ মতাদর্শের নাম হ নি। ইসলাম নামটি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রদত্ত। তাই ইসলাম নামটি অনেক গুরুত্ব বহণ করে। ইসলামের সঙ্গে রয়েছে মানুষের জীবনের সুগভীর সম্পর্ক।

ইসলাম মানুষের চলার পথের সন্ধানদাতা, উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধশালী জীবন এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জন তথা মানবজীবনের চরম লক্ষ্য হাসিলের একমাত্র পন্থা। এর ব্যাপ্তী জীবনের সর্বক্ষেত্রে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনের সব ক্ষেত্রেই ইসলামের নিয়ন্ত্রণাধিকার। ইসলাম মানুষের সঠিক পথের দিশারী, দুনিয়া ও আখেরাতের সর্বাঙ্গীণ ও পূর্ণাঙ্গ একমাত্র জীবন ব্যবস্থা। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে একাধিক স্থানে এ বক্তব্য তুলে ধরেছেন-

– إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللّهِ الإِسْلاَمُ

‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য একমাত্র জীবন ব্যবস্থা হলো ইসলাম।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯)

– الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا

‘আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে (জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামকে) পূর্নাঙ্গ করে দিলামতোমাদের প্রতি আমার অবদান পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৩)

কুরআনুল কারিমের আয়াতে কারিমা থেকে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, আল্লাহ তাআলা ইসলামকে মানবতার জন্য নেয়ামত হিসেবে পাঠিয়েছেন, যাতে রয়েছে মানুষের জীবনের সব সমস্যার সমাধান। এখন হয়তো কেউ প্রশ্ন করতে পারেন যে- ইসলাম গ্রহণ করলে আমাদের কী লাভ?

এক কথায় বলা যায়-

ইসলাম গ্রহণ করলে অনেক লাভ রয়েছে। প্রথমত ইসলাম গ্রহণ করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্য লাভ করতে পারি। হাদিসে পাকে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা বলেছেন-

‘বান্দা যখন ইসলাম গ্রহণ করে আর তার ইসলাম খাঁটি হয়, আল্লাহ তা দ্বারা তার প্রায়শ্চিত্ত করে দেন সে আগে যা অপরাধ করেছে। অতপর তার সৎকাজ হয় অসৎ কাজের বিনিময়; সৎকাজ তার দশগুণ হতে সাত শত গুণ বরং বহু গুণ পর্যন্ত আর অসৎকাজ তার একগুণ মাত্র, তবে আল্লাহ যাকে ছেড়ে দেন তার একগুণের শাস্তিও হবে না।’ (বুখারি)

প্রকৃত পক্ষে কেউ যদি ইসলাম গ্রহণ করার সৌভাগ্য লাভ করে তবে সে মূলত নিজেকেই অনুগ্রহীত করে থাকে। যেভাবে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন-

يَمُنُّونَ عَلَيْكَ أَنْ أَسْلَمُوا قُل لَّا تَمُنُّوا عَلَيَّ إِسْلَامَكُم بَلِ اللَّهُ يَمُنُّ عَلَيْكُمْ أَنْ هَدَاكُمْ لِلْإِيمَانِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ

তারা ইসলম গ্রহণের মাধ্যমে (মুসলমান হয়ে) আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। (হে রাসুল! আপনি) বলুনতোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না। বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেনযদি তোমরা সত্যনিষ্ঠ হয়ে থাক।’ (সুরা হুজাত : আয়াত ১৭)

সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকে হজরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত সব সম্মানিত নবি-রাসুলের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মানুষকে ধর্ম  তথা সত্য জীবন ব্যবস্থার দিকে আহ্বান করেছেন। আর এ জীবন ব্যবস্থা ইসলাম সত্য ও ন্যায়ের শাশ্বত সৌন্দর্যের আলোকে পথ দেখিয়ে চলেছে সমগ্র মানব জাতিকে।

মানুষের মধ্যে যারা প্রকৃত জ্ঞানী ও অনুসন্ধানী, কেবল তারাই খুঁজে পেয়েছেন সেই সত্যের ও শান্তির সন্ধান, খুঁজে পেয়েছেন একমাত্র প্রতিপালক আল্লাহকে এবং জেনেছেন নিজের চিরস্থায়ী গন্তব্যের প্রকৃত ঠিকানা।

অত্যাধুনিক সভ্যতা ও তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর সমৃদ্ধির এ যুগে মানুষ আজ কঠিনতম বাস্তবতার শিকার। সবাই চায় সচ্ছলতা, চায় শান্তি। বস্তুত মানুষ বেশির ভাগ ক্ষেতে আত্মিক শান্তির পিয়াসী। আর বেঁচে থাকার জন্য এটি অপরিহার্য।

মহান আল্লাহ তাআলা মনোনীত পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা ‘ইসলাম’, সেই অনন্ত শান্তির বাণীই প্রচার করছে। তাই তো মানুষ শাশ্বত ধর্ম দ্বীন ইসলামের অনিন্দ্য সুন্দর আদর্শ যুগ যুগ ধরে গ্রহণ করে আসছে।

ইসলাম যে দিনের পর দিন উন্নতি করেই যাচ্ছে এর কারণ কি? দিনের পর দিন ইসলামের যে উন্নতি হচ্ছে এর প্রধান কারণ হচ্ছে- ইসলামের তুলনাহীন আদর্শ ও সুমহান শিক্ষা। ইসলামের উন্নতি সম্পর্কে অনেকেই অনেক মন্তব্যও করেছেন। যেমন-

– বিখ্যাত দার্শনিক জর্জ বার্নার্ড শ’ বলেছিলেন, ‘আমি ভবিষ্যদ্বাণী করছি যে, ‘মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রচারিত ধর্ম ‘ইসলাম’ আগামী দিনের ইউরোপবাসীদের কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য হবে। ইতিমধ্যে আজকের ইউরোপবাসীরা ইসলাম গ্রহণ করতে শুরু করেছে।’ (জেনুইন ইসলাম)

বর্তমান বিশ্ব, বিশেষত খ্রিষ্টবাদের প্রাণকেন্দ্র ইউরোপ ও আমেরিকার দিকে তাকালেই জর্জ বার্নার্ড শ’র  সেই ভবিষ্যদ্বাণীর বাস্তবতার প্রমাণ মেলে। সত্য আর শান্তির সন্ধ্যানে মানুষ পাগলপারা হয়ে ইসলামের সঠিক বিশ্বাসের দিকেই ছুটে আসছে। ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছে।