ঢাকা ০৭:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাভার বয়’ আমিরের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে যে কারণে বিচ্ছেদ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫০:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর ২০২০
  • ১৯১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বলিউডের ‘মি. পারফেক্টশনিস্ট’খ্যাত নায়ক আমির খান। সিনেমার পর্দায় সবকিছু নিখুঁতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনটা তার মোটেও নিখুঁত নয়। প্রেম, বিয়ে নিয়ে অনেকবারই আলোচনায় এসেছেন এই অভিনেতা।

আমির খান একবার মজা করে বলেছিলেন, ‘আমার জীবন নিয়ে সিনেমা তৈরি হতে পারে। এতে আমার ভূমিকায় অভিনয় করবে ছেলে জুনাইদ।’ সত্যিই এই অভিনেতার জীবনের গল্প সিনেমার চেয়ে কোনো অংশ কম নয়। আর রিনা দত্তের সঙ্গে প্রেম, বিয়ে আমিরের জীবনের অন্যতম আলোচিত অংশ।
প্রথমবার প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হন আমির খান। দ্বিতীয় ও তৃতীয়বারের চেষ্টাতেও মেয়ের মন জয় করতে পারেননি। চতুর্থ বার প্রেম নিবেদন করেও ব্যর্থ হন আমির। এই মেয়ে আর কেউ নয়, আমিরের প্রথম স্ত্রী রিনা দত্ত।

আমিরের পাশের বাড়িতেই থাকতেন রিনা। বাড়ির জানালাও ছিল পাশাপাশি। সেই জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখতে গিয়েই রিনার প্রেমে পড়েন এই অভিনেতা।

১৯৯৯ সালের এক সাক্ষাৎকারে আমির বলেন, ‘স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি সময় আমি জানালার কাছে কাটাতাম। এরপর আমি তাকে আমার ভালোবাসার কথা জানাই। আমি আশা করেছিলাম তারও আমার ব্যাপারে একই অনুভূতি হবে। কিন্তু জানতে পারলাম আমাকে সে ভালোবাসে না। আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু সহজে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলাম না। কোনো বিষয়ে ‘না’ শুনতে রাজি নই। দুই দিন পর তার সঙ্গে আবার দেখা হয়। তখনও সে একই কথা বলে। এরপর জানালা থেকে সরে যেতে থাকি। এতটাই দুঃখ পেয়েছিলাম যে, তাকে ভুলে এবং তার কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতাম।’

রিনাকে নিজের রক্ত দিয়ে চিঠি লিখেছিলেন আমির। এই অভিনেতার ভাষায়, ‘মনে করেছিলাম তার প্রতি আমার গভীর ভালোবাসা প্রকাশের এটিই একমাত্র মাধ্যম।’ পরবর্তী সময়ে আমিরের ভালোবাসার ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন রিনা।

 কিন্তু তাদের প্রেমের পথ সুগম ছিল না। রিনা দত্ত ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। অন্যদিকে আমির মুসলিম। পরিবার তাদের সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নেয়নি। পালিয়ে বিয়ে করাটাকেই একমাত্র পথ হিসেবে মনে করেন তারা। অপেক্ষা করলেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।

১৯৮৬ সালের ১৪ মার্চ। আমিরের বয়স ২১। অন্যদিকে রিনার ১৯। কয়েকজন বন্ধুর সহযোগিতায় ম্যারেজ রেজিস্টার অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন এই জুটি। এরপর নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যান। কারণ রিনার পড়াশোনা তখনো শেষ হয়নি। আর আমিরও তখন খুব বেশি আয় করতেন না।

‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’ সিনেমার পর তাদের প্রেমের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে থাকে। রিনা ও আমিরের দাম্পত্য জীবনে দুই সন্তান— জুনাইদ ও ইরা। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সহ-অভিনেত্রীদের সঙ্গে আমিরের প্রেমের গুঞ্জন রিনার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। ২০০২ সালে এই দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে তাদের কোনো তিক্ততা তৈরি হয়নি। এমনকি এ বিষয়ে তারা কোনো কথাও বলেননি। এখনো তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। আমিরের ৫০তম জন্মদিনের পার্টিতে হাজির হয়েছিলেন রিনা।

২০০৩ সালে এক সাক্ষাৎকারে আমির বলেন, ‘রিনা ও আমি ১৬ বছর দাম্পত্য জীবন পার করেছি। আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি এবং যখন বিয়ে করি আমাদের বয়স অনেক কম ছিল। বিচ্ছেদটা দু’জনের জন্যই অনেক কঠিন ছিল। সম্পর্কটা আমাদের কাছে বিশেষ ছিল। এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমার দুই বছর লেগেছে। কারণ আমি খুবই আবেগপ্রবণ। যখন আমরা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই, রিনা ও আমি আগে বাচ্চাদের বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি।’

আমির ও রিনা দত্তের বিবাহ বিচ্ছেদ কেন হয়েছিল তা এখনো অজানা। তবে ধারণা করা হয়, এই অভিনেতার বর্তমান স্ত্রী কিরণ রাওয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই আমির-রিনার বিচ্ছেদ হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

লাভার বয়’ আমিরের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে যে কারণে বিচ্ছেদ

আপডেট টাইম : ০৯:৫০:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বলিউডের ‘মি. পারফেক্টশনিস্ট’খ্যাত নায়ক আমির খান। সিনেমার পর্দায় সবকিছু নিখুঁতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনটা তার মোটেও নিখুঁত নয়। প্রেম, বিয়ে নিয়ে অনেকবারই আলোচনায় এসেছেন এই অভিনেতা।

আমির খান একবার মজা করে বলেছিলেন, ‘আমার জীবন নিয়ে সিনেমা তৈরি হতে পারে। এতে আমার ভূমিকায় অভিনয় করবে ছেলে জুনাইদ।’ সত্যিই এই অভিনেতার জীবনের গল্প সিনেমার চেয়ে কোনো অংশ কম নয়। আর রিনা দত্তের সঙ্গে প্রেম, বিয়ে আমিরের জীবনের অন্যতম আলোচিত অংশ।
প্রথমবার প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হন আমির খান। দ্বিতীয় ও তৃতীয়বারের চেষ্টাতেও মেয়ের মন জয় করতে পারেননি। চতুর্থ বার প্রেম নিবেদন করেও ব্যর্থ হন আমির। এই মেয়ে আর কেউ নয়, আমিরের প্রথম স্ত্রী রিনা দত্ত।

আমিরের পাশের বাড়িতেই থাকতেন রিনা। বাড়ির জানালাও ছিল পাশাপাশি। সেই জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখতে গিয়েই রিনার প্রেমে পড়েন এই অভিনেতা।

১৯৯৯ সালের এক সাক্ষাৎকারে আমির বলেন, ‘স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি সময় আমি জানালার কাছে কাটাতাম। এরপর আমি তাকে আমার ভালোবাসার কথা জানাই। আমি আশা করেছিলাম তারও আমার ব্যাপারে একই অনুভূতি হবে। কিন্তু জানতে পারলাম আমাকে সে ভালোবাসে না। আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু সহজে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলাম না। কোনো বিষয়ে ‘না’ শুনতে রাজি নই। দুই দিন পর তার সঙ্গে আবার দেখা হয়। তখনও সে একই কথা বলে। এরপর জানালা থেকে সরে যেতে থাকি। এতটাই দুঃখ পেয়েছিলাম যে, তাকে ভুলে এবং তার কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতাম।’

রিনাকে নিজের রক্ত দিয়ে চিঠি লিখেছিলেন আমির। এই অভিনেতার ভাষায়, ‘মনে করেছিলাম তার প্রতি আমার গভীর ভালোবাসা প্রকাশের এটিই একমাত্র মাধ্যম।’ পরবর্তী সময়ে আমিরের ভালোবাসার ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন রিনা।

 কিন্তু তাদের প্রেমের পথ সুগম ছিল না। রিনা দত্ত ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। অন্যদিকে আমির মুসলিম। পরিবার তাদের সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নেয়নি। পালিয়ে বিয়ে করাটাকেই একমাত্র পথ হিসেবে মনে করেন তারা। অপেক্ষা করলেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।

১৯৮৬ সালের ১৪ মার্চ। আমিরের বয়স ২১। অন্যদিকে রিনার ১৯। কয়েকজন বন্ধুর সহযোগিতায় ম্যারেজ রেজিস্টার অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন এই জুটি। এরপর নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যান। কারণ রিনার পড়াশোনা তখনো শেষ হয়নি। আর আমিরও তখন খুব বেশি আয় করতেন না।

‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’ সিনেমার পর তাদের প্রেমের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে থাকে। রিনা ও আমিরের দাম্পত্য জীবনে দুই সন্তান— জুনাইদ ও ইরা। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সহ-অভিনেত্রীদের সঙ্গে আমিরের প্রেমের গুঞ্জন রিনার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। ২০০২ সালে এই দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে তাদের কোনো তিক্ততা তৈরি হয়নি। এমনকি এ বিষয়ে তারা কোনো কথাও বলেননি। এখনো তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। আমিরের ৫০তম জন্মদিনের পার্টিতে হাজির হয়েছিলেন রিনা।

২০০৩ সালে এক সাক্ষাৎকারে আমির বলেন, ‘রিনা ও আমি ১৬ বছর দাম্পত্য জীবন পার করেছি। আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি এবং যখন বিয়ে করি আমাদের বয়স অনেক কম ছিল। বিচ্ছেদটা দু’জনের জন্যই অনেক কঠিন ছিল। সম্পর্কটা আমাদের কাছে বিশেষ ছিল। এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমার দুই বছর লেগেছে। কারণ আমি খুবই আবেগপ্রবণ। যখন আমরা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই, রিনা ও আমি আগে বাচ্চাদের বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি।’

আমির ও রিনা দত্তের বিবাহ বিচ্ছেদ কেন হয়েছিল তা এখনো অজানা। তবে ধারণা করা হয়, এই অভিনেতার বর্তমান স্ত্রী কিরণ রাওয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই আমির-রিনার বিচ্ছেদ হয়।