৩ বার ব্যর্থ ‘ওভাররেটেড’ ধোনি রিভিউ সিস্টেম

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনায় ক্রিকেট বন্ধের সময়েও তিনি ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে, এখনো তিনি আছেন সে জায়গায়। তার অবসর নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলছিল আলোচনা, হুট অবসর ঘোষণা দিয়ে নিজেকেই যেন চিনিয়েছিলেন তিনি। তিনি ধোনি, মাহেন্দ্র সিং ধোনি।

আন্তর্জাতিক থেকে অবসর নিলেও আইপিএল খেলবেন বলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন এবং আছেন তিনি। সবার নজর ছিল ৪৩৭ দিন পর ক্রিকেটে ফেরা ধোনির দিকেই। ‘কেমন করবেন?’ এই প্রশ্ন দিয়ে মাঠের ধোনিকে জানতে চাওয়া দর্শকের সামনে এখন নতুন প্রশ্ন, ‘এ কী করছেন ধোনি?’

রিভিউ নিয়ে ব্যর্থতা

আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মুখোমুখি ধোনির চেন্নাই। পাঞ্জাব ইনিংসের ১৪তম ওভার চলছে। পিযুস চাওলার মুখোমুখি সৌরভ তিওয়ারি। সুইপ করতে গিয়ে মিস করে বসলেন বাঁহাতি তিওয়ারি। বল তিওয়ারির পিছনের উরুতে লাগতেই জোর আবেদন ধোনি ও চাওলার। আম্পায়ার সাড়া দিলেন না সুপার কিংসদের আবেদনে। তবে সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিভিউ নিলেন অধিনায়ক ধোনি। স্বাভাবিকভাবেই ধোনির রিভিউ মানে ব্যাটসম্যানের প্যাভিলিয়নে ফেরার সম্ভাবনাই বেশি।
কিন্তু ব্যর্থ ধোনি। বল পিচিং ইন লাইন, ইম্প্যাক্ট ইন লাইন হলেও নট হিটিং ইন উইকেট। যার ফলে ক্রিকেটে ফেরার পর প্রথম নেওয়া রিভিউতে ব্যর্থতার মুখ দেখতে হলো ধোনিকে।

রিভিউ না নেওয়াতে ব্যর্থ

টের না পেয়ে ব্যর্থ

দিল্লির নতুন তরুণ তারকা ক্রিকেটার ওপেনিং ব্যাটসম্যান পৃথ্বী শ মোকাবিলা করছেন চেন্নাইয়ের ডানহাতি পেসার দিপক চাহারকে। ম্যাচের প্রথম বলটা পৃথ্বী ব্যাটে নিতে পারলেও বিট হলেন দ্বিতীয় বলে। দ্বিতীয় বলটা ব্যাট ও প্যাডের মাঝ দিয়ে চলে গেল ধোনির হাতে। মনে হচ্ছিল ইনসাইড এজ হয়েছে। এবং ইনসাইড এজ হয়েছেও। কিন্তু ধোনি থেকে শুরু করে চেন্নাইয়ের ফিল্ডাররা কিছুই বুঝলো না। আবেদনও করলো না। পৃথ্বী শও বুঝতে দিলেন না। ভাব নিলেন যেন তিনি বল ছেড়ে দিয়েছেন।

এরপর শুরু হয় পৃথ্বী ‘শো’। ব্যাকরণ মেনেও যে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলা যায় তার প্রকৃত উদাহরণ হয়ে রইলো এই ওপেনারের ৬৪ রানের অসাধারণ ইনিংসটি। অর্ধশতক পুরণের পরেই একমাত্র ছয়টি হাঁকান ২০ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। চেন্নাই টের পেল না, ধোনিও পেলেন না। পৃথ্বীও টের পেতে না দিয়ে শূন্য রানে জীবন পেয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যান অব দ্য ম্যাচটাই জিতে নিলেন।

কেভিন পিটারসেনের ভাষায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রত্যেক বলই একেকটা ঘটনা। স্বল্প পরিসরের এই খেলায় প্রতিটি বলের গুরুত্ব বোঝাতেই হয়তো এ কথা বলেন সাবেক ইংলিশ এই ব্যাটসম্যান। উপরের তিনটি ঘটনা চেন্নাইয়ের প্রথম তিন ম্যাচের। যেখানে প্রথমটিতে তিওয়ারি রিভিউয়ের পরে মাত্র ৪ রান করায় এবং চেন্নাই জিতে যাওয়ায় ম্যাচে এর প্রভাব পড়েনি। দ্বিতীয় ও তৃতীয়টির প্রভাব তো একেবারে স্পষ্ট। রাজস্থান রয়্যালসের সঙ্গে ১৬ রানে ও দিল্লি ক্যাপিটালসের সঙ্গে ৪৪ রানে হেরেছেও ধোনির দল।

মানুষ ভুল করবেন। ধোনিও ভুল করবেন, এটাই স্বাভাবিক। আবার ধোনি সবচেয়ে কম ভুলও করবেন। রিভিউ নেওয়ায় ধোনির চেয়ে পটুও হয়তো আর কেউ নেই। তাই বলে ডিআরএসের পুর্ণরুপ ‘ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম’ এর পরিবর্তে ‘ধোনি রিভিউ সিস্টেম’-এ বদলে ফেলাকে একটু বাড়াবাড়িই মনে হয় না? হয়তো রিভিউয়ে ধোনির দক্ষতার কারণে সম্মানার্থেই এমন বলে ভারতীয়রা। অবশ্য অন্য দেশের তুলনায় ভারতীয়রা তাদের ক্রিকেটারদের একটু বেশিই উচ্চতায় নিয়ে যায়। রিভিউয়ের ক্ষেত্রে তাই ধোনিকেও কি মনে হয় না ‘ওভাররেটেড’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর