ঢাকা ১২:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্নীতির আখড়া এলাহী বক্স কোম্পানি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১৯:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ২৬৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সরকারের পরিত্যাক্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এলাহী বক্স এন্ড কোম্পানি লি.-এ চলছে এলাহী কান্ড। চাকরি যাওয়ার ভয় দেখিয়ে পিয়নের কাছ থেকে ঘুষ নেয়া থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বতন অফিসের অনুমতি ছাড়াই তেলের ট্যাঙ্গের সম্প্রসারণ পর্যন্ত সব জায়গায় ঘুষ বাণিজ্য বেশ জমজমাট।

প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম শামিম এই ঘুষ বণিজ্যের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবুল কালাম আজাদ অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির সদস্য সচিব পদে রয়েছেন। তার যোগসাজেসেই এ দুর্নীতি করছে বলে দাবি কর্মচারীদের। ছোট একটি চাকরি করে নামে বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জন, প্রতারণা, প্রতিষ্ঠানটির কোটি কোটি টাকা বিভিন্ন প্রাইভেট ব্যাংকে এফডিআর করে কমিশন খাওয়া, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়ম নিয়ে ধারাবাহিক নিউজের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।

প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ছোট একটি প্রতিষ্ঠান হওয়াতে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তেমন খোঁজ খবর রাখে না। যে কারণে নিরবেই চলে এখানে ঘুষ বাণিজ্য। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে সর্বদায় তার স্বেচ্ছারিতা চলে বলেও অধীনস্থরা জানিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা আরো অভিযোগ করেন যে, প্রতিষ্ঠানটিতে ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইল স্বাক্ষর হয় না।

এ বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ বাংলা সময়কে বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে এতো দুর্নীতি চলছে তা আমার জানা নেই। বিভিন্ন প্রমাণ পেশ করলে তিনি এটাকে মিথ্যা এবং বানোয়াট বলেছেন। কর্মচারী কর্মকর্তারা বলেন, মিথ্যাকিনা সেটা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। তারা মনে করেন এটার একটা সুস্থ্য তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অধীনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এসব বিষয়ের তদন্ত দাবি করেন তারা।

জানা গেছে, চাকরি চলে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে নিজ অফিসের এক দারোয়ান থেকে ১ লাখ ত্রিশ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। দারোয়ান নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি আরো বলেন, শুধু আমার থেকেই না এরকম অনেকের কাছ থেকেই বিভিন্ন উপায়ে ঘুষ গ্রহণ করেন। যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। এছাড়াও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়াই রহমান ফিলিং স্টেশনের তেলের ট্যাংক সম্প্রসারণ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডার পাইয়ে দেয়ার নাম করে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন বাবু নামের একজনের কাছ থেকে। ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম শামিম এ বিষয়ে বাংলা সময়কে বলেন, এসমস্ত অভিযোগ মিথ্যা যার কোনো সত্যতা নেই। প্রমাণ পেশ করার পর সে ফোন কেটে দেয়।

অভিযোগ রয়েছে, ছাত্র জীবনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্র দলের রাজনীতি করতেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন অভিযোগ অভিযুক্ত তিনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবুল কালাম আজাদের প্রভাবেই তিনি এসব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এই উপসচিব দুর্নীতির প্রতিটি সেক্টর থেকে ভাগ পান বলেও অভিযোগ রয়েছে। এর নথিপত্র প্রতিবেদকের হস্তগত হয়েছে। যা আগামী পর্বগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবে।

তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে বাংলা সময়কে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি এবিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এ বিষয়ে সচিবের সাথে কথা বলে পরে জানাব।

সুত্রঃ বাংলা সময় 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দুর্নীতির আখড়া এলাহী বক্স কোম্পানি

আপডেট টাইম : ০৯:১৯:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সরকারের পরিত্যাক্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এলাহী বক্স এন্ড কোম্পানি লি.-এ চলছে এলাহী কান্ড। চাকরি যাওয়ার ভয় দেখিয়ে পিয়নের কাছ থেকে ঘুষ নেয়া থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বতন অফিসের অনুমতি ছাড়াই তেলের ট্যাঙ্গের সম্প্রসারণ পর্যন্ত সব জায়গায় ঘুষ বাণিজ্য বেশ জমজমাট।

প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম শামিম এই ঘুষ বণিজ্যের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবুল কালাম আজাদ অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির সদস্য সচিব পদে রয়েছেন। তার যোগসাজেসেই এ দুর্নীতি করছে বলে দাবি কর্মচারীদের। ছোট একটি চাকরি করে নামে বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জন, প্রতারণা, প্রতিষ্ঠানটির কোটি কোটি টাকা বিভিন্ন প্রাইভেট ব্যাংকে এফডিআর করে কমিশন খাওয়া, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়ম নিয়ে ধারাবাহিক নিউজের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।

প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ছোট একটি প্রতিষ্ঠান হওয়াতে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তেমন খোঁজ খবর রাখে না। যে কারণে নিরবেই চলে এখানে ঘুষ বাণিজ্য। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে সর্বদায় তার স্বেচ্ছারিতা চলে বলেও অধীনস্থরা জানিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা আরো অভিযোগ করেন যে, প্রতিষ্ঠানটিতে ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইল স্বাক্ষর হয় না।

এ বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ বাংলা সময়কে বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে এতো দুর্নীতি চলছে তা আমার জানা নেই। বিভিন্ন প্রমাণ পেশ করলে তিনি এটাকে মিথ্যা এবং বানোয়াট বলেছেন। কর্মচারী কর্মকর্তারা বলেন, মিথ্যাকিনা সেটা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। তারা মনে করেন এটার একটা সুস্থ্য তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অধীনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এসব বিষয়ের তদন্ত দাবি করেন তারা।

জানা গেছে, চাকরি চলে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে নিজ অফিসের এক দারোয়ান থেকে ১ লাখ ত্রিশ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। দারোয়ান নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি আরো বলেন, শুধু আমার থেকেই না এরকম অনেকের কাছ থেকেই বিভিন্ন উপায়ে ঘুষ গ্রহণ করেন। যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। এছাড়াও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়াই রহমান ফিলিং স্টেশনের তেলের ট্যাংক সম্প্রসারণ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডার পাইয়ে দেয়ার নাম করে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন বাবু নামের একজনের কাছ থেকে। ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম শামিম এ বিষয়ে বাংলা সময়কে বলেন, এসমস্ত অভিযোগ মিথ্যা যার কোনো সত্যতা নেই। প্রমাণ পেশ করার পর সে ফোন কেটে দেয়।

অভিযোগ রয়েছে, ছাত্র জীবনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্র দলের রাজনীতি করতেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন অভিযোগ অভিযুক্ত তিনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবুল কালাম আজাদের প্রভাবেই তিনি এসব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এই উপসচিব দুর্নীতির প্রতিটি সেক্টর থেকে ভাগ পান বলেও অভিযোগ রয়েছে। এর নথিপত্র প্রতিবেদকের হস্তগত হয়েছে। যা আগামী পর্বগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবে।

তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে বাংলা সময়কে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি এবিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এ বিষয়ে সচিবের সাথে কথা বলে পরে জানাব।

সুত্রঃ বাংলা সময়