ঢাকা ১১:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নামাজের পর দোয়া-কালাম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:১৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৮২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নবী করিম (স.) নামাজের পর কিছু দোয়া-কালাম পাঠ করতেন। যে সকল ফরজ নামাজের পরে সুন্নাত আছে তাতে সংক্ষিপ্ত এবং যে সকলের পর সুন্নত নেই তাতে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ দোয়া করতেন। তিনি কখনো উচ্চস্বরেও দোয়া করতেন।

নামাজের পর দোয়া-কালাম সম্পর্কে হাদিসে উল্লেখিত সাহাবীদের কিছু উক্তি বাংলাদেশ জার্নালের পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধরা হলো-

১. হাদিস: হজরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.) সালাম ফিরানোর পর এ দোয়া (‘হে খোদা! তুমি স্বয়ং শান্তি এবং তোমা হতেই শান্তি। হে প্রতাপ ও সম্মানের অধিকারী! তুমি বরকতময়।’) পাঠ করার পরিমাণ সময়ের অধিক বসতেন না। (মুসলিম)

২. হাদিস: হজরত সাওবান (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.) যখন নামাজ থেকে অবসর হতেন তিনবার ‘ইস্তেগফার’ (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই; যিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নাই, যিনি চিরঞ্জীব, চির প্রতিষ্ঠিত এবং আমি তার প্রতি অনুতাপ সহকারে প্রত্যাবর্তন করছি) বলতেন। অতঃপর বলতেন, হে আল্লাহ! তুমি স্বয়ং শান্তি এবং তোমা হতেই শান্তি। হে প্রতাপ ও সম্মানের অধিকারী! তুমি বরকতময়। (মুসলিম)

৩. হাদিস: হজরত মুগিরাহ বিন শো’বাহ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.) প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর বলতেন, ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি এক, তার কোন অংশী নেই, তারই রাজত্ব, তারই প্রশংসা এবং তিনি প্রত্যেক বস্তুর ওপরই ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দিতে চাও তা কেউ রদ করতে পারে না এবং তুমি যা রদ কর তা কেউ দিতে পারে না এবং কোনো সম্পদশালীর সম্পদই তোমা হতে তাকে রক্ষা করতে পারে না।’(বোখারি, মুসলিম)

৪. হাদিস: হজরত আবদুল্লাহ বিন জোবায়ের (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.) যখন নামাজে সালাম ফিরাতেন তখন উচ্চস্বরে বলতেন, ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই; তিনি একক, তার কোনো অংশী নেই, তারই রাজত্ব এবং তারই জন্য প্রশংসা। তিনি সমস্ত বস্তুর ওপরই ক্ষমতাবান। কোনো উপায় ও শক্তি (কারও) নেই আল্লাহর সাহায্য ছাড়া। আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আমরা তাকে ছাড়া আর কারও উপাসনা করি না। তারই দান, তারই অনুগ্রহ, তারই উত্তম প্রশংসা আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। দীন (ধর্ম)কে আমরা একমাত্র তারই জন্য মনে করি; যদিও কাফিররা (তা) পছন্দ করে না।’ (মুসলিম)

৫. হাদিস: হজরত কায়াব বিন উকবাহ (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (স.) বলেছেন, নামাজের পর বলবার কতিপয় বাক্য আছে। তা যারা বলবে তারা (কখনো) নিরাশ হবে না। প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’। (মুসলিম)।

৬. হাদিস: হজরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং ৩৩ বার ‘আল্লাহু আকবার’ এই মোট ৯৯ বার বলেছে, অতঃপর অধিক সওয়াব হাসিল করার জন্য বলেছে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদ ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির। (যে তা বলবে) তার সকল পাপ ক্ষমা করা হবে যদিও তা সমুদ্রের ফেনার ন্যায় (অধিক পরিমাণও) হয়। (মুসলিম)

৭. হাদিস: হজরত আবু উমামা বাহেলি (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.)কে জিজ্ঞেস করা হলো: কোন প্রার্থনা সত্বর গৃহীত হয়? তিনি বললেন, শেষ রাতের এবং ফরজ নামাজের পরের দোয়া। (তিরমিজি)

৮. হাদিস: হজরত উকবাহ্ বিন্ আমের (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.) আমাকে প্রত্যেক নামাজের পর ‘মুয়াব্বাজাত’ (সুরা নাস ও সুরা ফালাক) পাঠ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। (আহমদ, আবু দাউদ, নাসায়ি)

৯. হাদিস: হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে পড়েছে অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর জিকর করেছে, তারপর দুই রাকাত নফল পড়েছে তার জন্য হজ ও উমরাহ করার ন্যায় পুণ্য রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নামাজের পর দোয়া-কালাম

আপডেট টাইম : ০৩:১৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নবী করিম (স.) নামাজের পর কিছু দোয়া-কালাম পাঠ করতেন। যে সকল ফরজ নামাজের পরে সুন্নাত আছে তাতে সংক্ষিপ্ত এবং যে সকলের পর সুন্নত নেই তাতে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ দোয়া করতেন। তিনি কখনো উচ্চস্বরেও দোয়া করতেন।

নামাজের পর দোয়া-কালাম সম্পর্কে হাদিসে উল্লেখিত সাহাবীদের কিছু উক্তি বাংলাদেশ জার্নালের পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধরা হলো-

১. হাদিস: হজরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.) সালাম ফিরানোর পর এ দোয়া (‘হে খোদা! তুমি স্বয়ং শান্তি এবং তোমা হতেই শান্তি। হে প্রতাপ ও সম্মানের অধিকারী! তুমি বরকতময়।’) পাঠ করার পরিমাণ সময়ের অধিক বসতেন না। (মুসলিম)

২. হাদিস: হজরত সাওবান (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.) যখন নামাজ থেকে অবসর হতেন তিনবার ‘ইস্তেগফার’ (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই; যিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নাই, যিনি চিরঞ্জীব, চির প্রতিষ্ঠিত এবং আমি তার প্রতি অনুতাপ সহকারে প্রত্যাবর্তন করছি) বলতেন। অতঃপর বলতেন, হে আল্লাহ! তুমি স্বয়ং শান্তি এবং তোমা হতেই শান্তি। হে প্রতাপ ও সম্মানের অধিকারী! তুমি বরকতময়। (মুসলিম)

৩. হাদিস: হজরত মুগিরাহ বিন শো’বাহ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.) প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর বলতেন, ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি এক, তার কোন অংশী নেই, তারই রাজত্ব, তারই প্রশংসা এবং তিনি প্রত্যেক বস্তুর ওপরই ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দিতে চাও তা কেউ রদ করতে পারে না এবং তুমি যা রদ কর তা কেউ দিতে পারে না এবং কোনো সম্পদশালীর সম্পদই তোমা হতে তাকে রক্ষা করতে পারে না।’(বোখারি, মুসলিম)

৪. হাদিস: হজরত আবদুল্লাহ বিন জোবায়ের (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.) যখন নামাজে সালাম ফিরাতেন তখন উচ্চস্বরে বলতেন, ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই; তিনি একক, তার কোনো অংশী নেই, তারই রাজত্ব এবং তারই জন্য প্রশংসা। তিনি সমস্ত বস্তুর ওপরই ক্ষমতাবান। কোনো উপায় ও শক্তি (কারও) নেই আল্লাহর সাহায্য ছাড়া। আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আমরা তাকে ছাড়া আর কারও উপাসনা করি না। তারই দান, তারই অনুগ্রহ, তারই উত্তম প্রশংসা আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। দীন (ধর্ম)কে আমরা একমাত্র তারই জন্য মনে করি; যদিও কাফিররা (তা) পছন্দ করে না।’ (মুসলিম)

৫. হাদিস: হজরত কায়াব বিন উকবাহ (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (স.) বলেছেন, নামাজের পর বলবার কতিপয় বাক্য আছে। তা যারা বলবে তারা (কখনো) নিরাশ হবে না। প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’। (মুসলিম)।

৬. হাদিস: হজরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং ৩৩ বার ‘আল্লাহু আকবার’ এই মোট ৯৯ বার বলেছে, অতঃপর অধিক সওয়াব হাসিল করার জন্য বলেছে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদ ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির। (যে তা বলবে) তার সকল পাপ ক্ষমা করা হবে যদিও তা সমুদ্রের ফেনার ন্যায় (অধিক পরিমাণও) হয়। (মুসলিম)

৭. হাদিস: হজরত আবু উমামা বাহেলি (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.)কে জিজ্ঞেস করা হলো: কোন প্রার্থনা সত্বর গৃহীত হয়? তিনি বললেন, শেষ রাতের এবং ফরজ নামাজের পরের দোয়া। (তিরমিজি)

৮. হাদিস: হজরত উকবাহ্ বিন্ আমের (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স.) আমাকে প্রত্যেক নামাজের পর ‘মুয়াব্বাজাত’ (সুরা নাস ও সুরা ফালাক) পাঠ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। (আহমদ, আবু দাউদ, নাসায়ি)

৯. হাদিস: হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে পড়েছে অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর জিকর করেছে, তারপর দুই রাকাত নফল পড়েছে তার জন্য হজ ও উমরাহ করার ন্যায় পুণ্য রয়েছে।