দীর্ঘদিন পর প্রকাশ্যে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচনকে বিএনপি ইতোমধ্যেই নিজেদের ‘রাজনৈতিক জয়’ বলে দাবি করেছে। আর আশা করছে ৫ জানুয়ারির (মঙ্গলবার) সমাবেশের মধ্যদিয়ে তারা আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে। সরকারের দুই বছর পূর্তিতে মঙ্গলবারকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উল্লেখ করে সমাবেশের আয়োজন করেছে তারা।
এদিকে প্রকাশ্যে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ায় উজ্জীবিত হয়ে উঠছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এজন্য নিজেদের শক্তি জানান দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন তারা।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নয়াপল্টনের সমাবেশ সর্বাত্মক সফল করতে স্বল্প সময়েই নানা পরিকল্পনা করছেন দলটির হাইকমান্ড। সমাবেশের মাধমে ঝিমিয়ে পড়া দলটির নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।
এদিকে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমাবেশে সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বেলা ১১টার মধ্যেই নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে থাকার জন্য দলের নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তারা।
এছাড়া ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকেও দলটির নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনের সমাবেশে অংশ নেবেন। দলীয় সূত্রে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মহানগর বিএনপির এক নেতা জানান, সরকার যেহেতু সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে তাই ভয়-শংকা ছাড়াই সমাবেশের দলের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেবেন। অাত্মগোপনে থাকা অনেক নেতাদেরকে এ সমাবেশে দেখা যেতে পারে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সোমবার রাত সাড়ে ৭টায় নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ জানান, ডিএমপির অনুমতি সাপেক্ষে অবশেষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে দলটি। মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে এ সমাবেশ শুরু হবে। এতে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
রিজভী আহমেদ জানান, সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আমাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতির কথা জানানো হয়েছে। এরপর আমরা ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমাদেরকে মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছেন। নয়াপল্টনের সমাবেশ নির্বিঘ্ন করতে আমাদের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে দাবি করে তিনি আরো জানান, বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় এ সমাবেশ দুপুর ২টায় শুরু হয়ে মাগরিবের নামাজের আগে শেষ হবে। এর ব্যাপ্তি হবে বামে নাইটিঙ্গেল মোড় আর ডানে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত।
সমাবেশের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবে সমাবেশে যোগ দেবেন। সমাবেশ সফলের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ সম্পন্ন হবে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আপনার অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে সমাবেশে আসবেন, যাতে রাস্তায় বা অন্য কোথাও যানজটের সৃষ্টি না হয়। একইসঙ্গে আপনারা কোনো রকম উস্কানির মুখেও কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না।’
বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি ঢাকা মহানগরের শান্তিকামী জনগণকেও সমাবেশে যোগদানের আহ্বান জানান দলের যুগ্ম মহাসচিব রিজভী।
ডিএমপির পক্ষ থেকে কী শর্তে অনুমতি দেয়া হয়েছে, জানতে চাইলে রিজভী আহমেদ বলেন, ডিএমপির শর্ত অনুসরণ করেই আমরা সমাবেশ করব। অতীতেও শর্ত মেনেই আমরা সমাবেশ করেছি। একটি সমাবেশ যেমন হয়, আগামীকালের (মঙ্গলবার) সমাবেশও তেমনই হবে।