ঢাকা ০৩:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড : যে বিষয়টি আমার চোখে পড়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৩:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ২১৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমার মরহুম পিতা মৌলভী শাহ মো. এনামুল হক খান পাঠান (শাহ সাহেব) একজন মাদ্রাসা শিক্ষক ছিলেন। ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী তিনি অবসরে যান। ৮ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে কল্যান ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা পেতে দরখাস্ত করেন। ২৬ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে তিনি ইন্তেকাল করেন। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং তারিখে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষের একাউন্ট থেকে ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) এর মাধ্যমে আমার বাবার একাউন্টে  তার পাওনা টাকা চলে আসে।

সামান্য একজন সাংবাদিক আমি। মানুষের বিভিন্ন উপকারের জন্য মাঝেমধ্যে একটু-আধটু সুপারিশ/তদবির করতে হয়। তবে নিজের কাজে আমি কখনো সাংবাদিক পরিচয়ে সুবিধা নেইনি এমনটা জোর গলায় বলতে পারি।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের থেকে বাবার পাওনা পেতে কেন দেরী হচ্ছে এমনটা জানতে ভাবলাম একবার খোজ নেই। ব্যানবেইজেস্থ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের অফিসে গিয়ে উকি মারলাম সচিবের কক্ষে। দরজার সামনে কোন ভীড় নেই এবং দরজা খোলা।  সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী তার চেয়ারে বসা। টেবিলের সামনের এবং পাশের চেয়ারগুলোতে বসে আছে বেশ কয়েকজন। দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে আরো কয়েকজন।

সরাসরি না ঢুকে ভিজিটিং কার্ড পাঠালাম। সাথে সাথেই ডাক পড়লো। পুর্বপরিচয় ছিলনা তাই কার্ড হাতে রেখেই বললেন, “পাঠান সাহেব কি করতে পারি আপনার জন্য। আমি বললাম আমার কথাগুলো বললাম, কাগজ তার হাতে দিলাম।  তিনি নোট নিলেন। বললেন যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

করোনাকালে এত মানুষের ভীড়ে বসার আগ্রহ ছিল না। তবে জানার আগ্রহ ছিলো দফতরের একজন উর্দ্ধতন কর্তার কক্ষে এত জটলা কেন?

৫ মিনিট খেয়াল করে দেখলাম দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শিক্ষক/কর্মচারী, মারাত্মক সব ব্যাধিতে আক্রান্ত অবসরে যাওয়া গ্রামের শিক্ষক, কন্যাদায়গ্রস্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক,  জীর্ন-শীর্ন পোশাকে কোন স্কুল/মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত দফতরি-পিওন, কোনো শিক্ষকের  বিধবা স্ত্রী বা তার এতিম বাচ্চা এসব শ্রেনীর লোকজনেই ভর্তি সচিবের কক্ষ।

সচিব মহোদয় সবার কথা সমান গুরুত্ব দিয়ে শুনছেন,  দ্রুত যাতে  টাকা পান আশ্বাস দিচ্ছেন। সন্তুষ্টচিত্তে হাসিমুখে বিদায় নিচ্ছে দর্শনার্থীরা। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এর কর্মকান্ড সম্পর্কে আমার স্পষ্ট ধারণা নেই তবে করোনা মহামারীকালে এমন আন্তরিক পরিবেশ আমার সত্যিই ভালো লেগেছে।

বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এর সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী এর সাথে আামার পূর্বপরিচয় ছিলনা, এমনকি আমার লেখা তিনি পড়বেন কিনা তাও জানিনা তবে শিক্ষক অন্তপ্রাণ এ মানুষটির জন্য শুভকামনা রইলো।

সেবাখাতের প্রতিটি অফিস এমন হয়ে উঠুক এই প্রত্যাশা রইলো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড : যে বিষয়টি আমার চোখে পড়েছে

আপডেট টাইম : ১০:২৩:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমার মরহুম পিতা মৌলভী শাহ মো. এনামুল হক খান পাঠান (শাহ সাহেব) একজন মাদ্রাসা শিক্ষক ছিলেন। ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী তিনি অবসরে যান। ৮ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে কল্যান ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা পেতে দরখাস্ত করেন। ২৬ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে তিনি ইন্তেকাল করেন। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং তারিখে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষের একাউন্ট থেকে ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) এর মাধ্যমে আমার বাবার একাউন্টে  তার পাওনা টাকা চলে আসে।

সামান্য একজন সাংবাদিক আমি। মানুষের বিভিন্ন উপকারের জন্য মাঝেমধ্যে একটু-আধটু সুপারিশ/তদবির করতে হয়। তবে নিজের কাজে আমি কখনো সাংবাদিক পরিচয়ে সুবিধা নেইনি এমনটা জোর গলায় বলতে পারি।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের থেকে বাবার পাওনা পেতে কেন দেরী হচ্ছে এমনটা জানতে ভাবলাম একবার খোজ নেই। ব্যানবেইজেস্থ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের অফিসে গিয়ে উকি মারলাম সচিবের কক্ষে। দরজার সামনে কোন ভীড় নেই এবং দরজা খোলা।  সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী তার চেয়ারে বসা। টেবিলের সামনের এবং পাশের চেয়ারগুলোতে বসে আছে বেশ কয়েকজন। দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে আরো কয়েকজন।

সরাসরি না ঢুকে ভিজিটিং কার্ড পাঠালাম। সাথে সাথেই ডাক পড়লো। পুর্বপরিচয় ছিলনা তাই কার্ড হাতে রেখেই বললেন, “পাঠান সাহেব কি করতে পারি আপনার জন্য। আমি বললাম আমার কথাগুলো বললাম, কাগজ তার হাতে দিলাম।  তিনি নোট নিলেন। বললেন যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

করোনাকালে এত মানুষের ভীড়ে বসার আগ্রহ ছিল না। তবে জানার আগ্রহ ছিলো দফতরের একজন উর্দ্ধতন কর্তার কক্ষে এত জটলা কেন?

৫ মিনিট খেয়াল করে দেখলাম দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শিক্ষক/কর্মচারী, মারাত্মক সব ব্যাধিতে আক্রান্ত অবসরে যাওয়া গ্রামের শিক্ষক, কন্যাদায়গ্রস্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক,  জীর্ন-শীর্ন পোশাকে কোন স্কুল/মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত দফতরি-পিওন, কোনো শিক্ষকের  বিধবা স্ত্রী বা তার এতিম বাচ্চা এসব শ্রেনীর লোকজনেই ভর্তি সচিবের কক্ষ।

সচিব মহোদয় সবার কথা সমান গুরুত্ব দিয়ে শুনছেন,  দ্রুত যাতে  টাকা পান আশ্বাস দিচ্ছেন। সন্তুষ্টচিত্তে হাসিমুখে বিদায় নিচ্ছে দর্শনার্থীরা। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এর কর্মকান্ড সম্পর্কে আমার স্পষ্ট ধারণা নেই তবে করোনা মহামারীকালে এমন আন্তরিক পরিবেশ আমার সত্যিই ভালো লেগেছে।

বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এর সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী এর সাথে আামার পূর্বপরিচয় ছিলনা, এমনকি আমার লেখা তিনি পড়বেন কিনা তাও জানিনা তবে শিক্ষক অন্তপ্রাণ এ মানুষটির জন্য শুভকামনা রইলো।

সেবাখাতের প্রতিটি অফিস এমন হয়ে উঠুক এই প্রত্যাশা রইলো।