সরাসরি ভোটে নির্বাচিতরা নন, সরকার মনোনীত চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরাই ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই)পরিচালনার দায়িত্ব নিচ্ছেন। এতে প্রচলিত আইন বা নিয়মের কোনো ব্যত্যয় না ঘটলেও প্রশ্ন উঠেছে ব্যবসায়ীদের পার্লামেন্টে সাধারণ ও সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে।
সোমবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নবনির্বাচিত সভাপতি ও দুই সহ-সভাপতির তিনজনই সরকার নির্ধারিত চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের মনোনীত প্রতিনিধি। এর মধ্যে সভাপতি মাতলুব আহমাদ রাজশাহী চেম্বারের, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) এবং সহ-সভাপতি মাহাবুবুল আলম চট্টগ্রাম চেম্বারের মনোনীত প্রতিনিধি। সরাসরি ভোটে নির্বাচিত ৩২ ও মনোনীত ২০ পরিচালকের মধ্য থেকে আর কোনো মনোনয়নপত্র জমা না পড়ায় এফবিসিসিআই নির্বাচনী বোর্ড তাদের বিজয়ী ঘোষণা করে।
মাতলুব আহমাদ ২০১৫-২০১৭ মেয়াদের জন্য এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নির্বাচিত হবেন তা গত শনিবারের ভোটেই নির্ধারিত হয়ে যায়। ওই দিন পরিচালক নির্বাচনে তার প্যানেল ৩২টির মধ্যে ২৫টিতে বিজয়ী হলে সভাপতি পদে প্রার্থিতা থেকে ছিটকে পড়েন বিদায়ী জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী। তাই মাতলুবের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি ছিল।
তবে দুই সহ-সভাপতি নিয়ে পরিচালক নির্বাচনের আগেও বেশ কানাঘুঁষা ছিল। ওই সময়ে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি হিসেবে বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের নাম শোনা গিয়েছিল। এ নিয়ে মাতলুব আহমাদের প্যানেল ব্যবসায়ী উন্নয়ন পরিষদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তবে মাতলুবের প্যানেল বিজয়ী হলে সহ-সভাপতি পদে নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের বজলুর রহমান এটা অনেকটা নিশ্চিত ছিল।
কিন্তু পরিচালক নির্বাচনের পরে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রতিনিধি মাহাবুবুল আলম সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
সব মিলিয়ে সরকার মনোনীত চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরাই আগামী দুই বছরের জন্য এফবিসিসিআই প্রধান তিন পদে অধিষ্ঠিত হচ্ছেন। এফবিসিসিআইয়ে গণতন্ত্র চান এমন একাধিক ব্যবসায়ী নেতার অভিযোগ, এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনটি কোটা ব্যবসায়ীদের সংগঠনে পরিণত হলো, সাধারণ ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব আর থাকলো না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এফবিসিসিআইয়ের নব নির্বাচিত এক পরিচালক ঢাকাটাইমসকে বলেন, যা হয়েছে তা নিয়ে সবাই অভিযোগ করছে। আন্দোলনের মাধ্যমে মনোনীতদের সভাপতি ও সহ-সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পথ বন্ধ করার দাবি তুলেছে অনেকে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের আন্দোলন হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি ও সহ-সভাপতি পদে সরাসরি নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি। সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা চাইলে অবশ্যই এ নিয়ে আন্দোলন হতে পারে।