ঢাকা ১২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাপের মাথাওয়ালা প্রজাপতি এক কামড়ে মৃত্যু নিশ্চিত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:১৬:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ২৪১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ছবিটি দেখে হয়তো চমকেই উঠেছেন। ভাবছেন চারমাথার সাপ বুঝি গাছে জড়িয়ে আছে। তবে এটি কোনো সাপ নয়। জেনে অবাক হবেন এটি একটি প্রজাপতির ডানা।এর নাম হলো আটলাস বা এটলাস মথ। এর দুই ডানার সামনের অংশের রঙগুলো এমন থাকে যে দেখে মনে হবে সাপের মাথা বুঝি।

পৃথিবীর বৃহত্তম পোকামাকড়গুলোর মধ্যে এটলাস মথ একটি। যার ডানাগুলির দৈর্ঘ্য ২৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। যা মানুষের হাতের তালুর চেয়েও প্রশস্ত। এবং এই প্রজাতির শুঁয়োপোকাগুলো ১২ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। এটি এর সৌন্দর্য নয় বরং ডানাগুলোর প্রশস্ততার কারণেই বেশি বিখ্যাত। ডানা গোটানো অবস্থায় এদের আকার হয় প্রায় ৬০ বর্গ ইঞ্চি এবং ডানা মেলা অবস্থায় এদের দৈর্ঘ্য কমপক্ষে এক ফুট পরিমাণ হয়ে থাকে। শুঁয়োপোকা অবস্থায় এরা প্রায় এক ইঞ্চি চওড়া হয়।

 এটলাস মথ

এটলাস মথ

বলা হয়ে থাকে, গ্রীক পুরানের ‘এটলাসের’ নাম অনুসারে এই পোকার নামকরণ করা হয়েছে। এটলাস ছিল একজন টাইটান। গ্রীক দেবতা জিউসের অভিশাপে এটলাসের দুই কাঁধে  চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল পুরো আকাশটাকে। এটলাস মথের বিশাল আকারের কারণের এই নামে ডাকা হয় একে। পৃথিবীতে প্রজাপতির থেকে মথের সংখ্যাই বেশি। এটিকে প্রজাপতি বলে অনেকেই ভুল করেন। আসলে মথ এটি। মথটির পাখা লাল রঙের। দুই পাখায় সাদা ত্রিভুজ আকৃতির নকশা আছে। শরীরের রং লাল ও ডোরাকাটা। পাখার দুই কোণের নকশা দেখে মনে হয় দুটি সাপ বসে আছে।

পাখির মতো আকৃতির বিশাল এই মথগুলোকে দেখতে পাওয়া যায় মালয় দ্বীপপুঞ্জে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মথ হিসাবে পরিচিত এরা। এদের আকার এতই বড় হয় যে তাইওয়ানে এদের গুটি টাকার থলি হিসাবে ব্যবহার করা হয়! ভারতের বহু অঞ্চলে রেশমের জন্য চাষ করা হয় এদের। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় এর দেখা মেলে। মিয়ানমার এবং যেসব অঞ্চলে মোটামুটি বনাঞ্চল রয়েছে সেখানেই বাস এদের। এরা দিনের বেশিরভাগ সময় শক্তি সংরক্ষণের জন্য বিশ্রামে কাটায়। কেবল রাতের বেলায় সঙ্গীর সন্ধানে বের হয় তারা।  এটলাস মথ সাধারণত দারুচিনি, সাইট্রাস ফল, পেয়ারা এবং জামাইকান চেরি গাছ খায়।

একেকটি ডানা হয় বিশাল আকৃতির

একেকটি ডানা হয় বিশাল আকৃতির

এই প্রজাতির ক্যান্টোনিজ নামক সাপের মাথার মতো দেখতে ডানা রয়েছে। চমৎকাররঙিন পাখা বিশিষ্ট এই এটলাস মথের পাখা দেখে মনে হবে ঠিক যেন ভয়ঙ্কর কোবরা সাপ। শুধুমাত্র যে দেখতেই এমন তাই নয়, এটলাস মথ কে তাড়া করলে এটি তার পাখা এমন ভাবে দোলায় যে, দেখে মনে হবে কোন কোবরা ছোবল মারার জন্য তার মাথা সামনে পিছনে দোলাচ্ছে। আর এই ডানার সাহায্যেই এরা মূলত তাদের জন্য ক্ষতিকর/বিপজ্জনক প্রাণীদের ভয় পাইয়ে থাকে। যখন কোনো শিকারী প্রাণী এর সামনে পরে যায় তখনই এর ডানাগুলো নাড়তে থাকে। এতে ওই শিকারী প্রাণী সেটাকে সাপ ভেবে পালিয়ে যায়।

এটি অনেক বিষাক্ত হয়ে থাকে। এর কাপড়ে মৃত্যু ঘটতে পারে অল্প সময়ের মধ্যেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রজাপতি খাবারের তালিকায় রয়েছে। তবে তারা এই প্রজাতির থেকে সাবধান থাকে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রজাতির অ্যাটলাস মথের দেখা মিলেছিল রাঙামাটিতে। প্রায় সাড়ে নয় ইঞ্চি বা ২৪ সেন্টিমিটার দীর্ঘ এ মথটি। মথটি বসেছিল বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) রাঙামাটি উপকেন্দ্রের এক কর্মকর্তার দরজায়। নানা দেশের প্রাণী বিজ্ঞানীরা এই মথের আরো গবেষণা চালাচ্ছেন প্রতি নিয়ত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সাপের মাথাওয়ালা প্রজাপতি এক কামড়ে মৃত্যু নিশ্চিত

আপডেট টাইম : ০৩:১৬:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ছবিটি দেখে হয়তো চমকেই উঠেছেন। ভাবছেন চারমাথার সাপ বুঝি গাছে জড়িয়ে আছে। তবে এটি কোনো সাপ নয়। জেনে অবাক হবেন এটি একটি প্রজাপতির ডানা।এর নাম হলো আটলাস বা এটলাস মথ। এর দুই ডানার সামনের অংশের রঙগুলো এমন থাকে যে দেখে মনে হবে সাপের মাথা বুঝি।

পৃথিবীর বৃহত্তম পোকামাকড়গুলোর মধ্যে এটলাস মথ একটি। যার ডানাগুলির দৈর্ঘ্য ২৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। যা মানুষের হাতের তালুর চেয়েও প্রশস্ত। এবং এই প্রজাতির শুঁয়োপোকাগুলো ১২ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। এটি এর সৌন্দর্য নয় বরং ডানাগুলোর প্রশস্ততার কারণেই বেশি বিখ্যাত। ডানা গোটানো অবস্থায় এদের আকার হয় প্রায় ৬০ বর্গ ইঞ্চি এবং ডানা মেলা অবস্থায় এদের দৈর্ঘ্য কমপক্ষে এক ফুট পরিমাণ হয়ে থাকে। শুঁয়োপোকা অবস্থায় এরা প্রায় এক ইঞ্চি চওড়া হয়।

 এটলাস মথ

এটলাস মথ

বলা হয়ে থাকে, গ্রীক পুরানের ‘এটলাসের’ নাম অনুসারে এই পোকার নামকরণ করা হয়েছে। এটলাস ছিল একজন টাইটান। গ্রীক দেবতা জিউসের অভিশাপে এটলাসের দুই কাঁধে  চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল পুরো আকাশটাকে। এটলাস মথের বিশাল আকারের কারণের এই নামে ডাকা হয় একে। পৃথিবীতে প্রজাপতির থেকে মথের সংখ্যাই বেশি। এটিকে প্রজাপতি বলে অনেকেই ভুল করেন। আসলে মথ এটি। মথটির পাখা লাল রঙের। দুই পাখায় সাদা ত্রিভুজ আকৃতির নকশা আছে। শরীরের রং লাল ও ডোরাকাটা। পাখার দুই কোণের নকশা দেখে মনে হয় দুটি সাপ বসে আছে।

পাখির মতো আকৃতির বিশাল এই মথগুলোকে দেখতে পাওয়া যায় মালয় দ্বীপপুঞ্জে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মথ হিসাবে পরিচিত এরা। এদের আকার এতই বড় হয় যে তাইওয়ানে এদের গুটি টাকার থলি হিসাবে ব্যবহার করা হয়! ভারতের বহু অঞ্চলে রেশমের জন্য চাষ করা হয় এদের। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় এর দেখা মেলে। মিয়ানমার এবং যেসব অঞ্চলে মোটামুটি বনাঞ্চল রয়েছে সেখানেই বাস এদের। এরা দিনের বেশিরভাগ সময় শক্তি সংরক্ষণের জন্য বিশ্রামে কাটায়। কেবল রাতের বেলায় সঙ্গীর সন্ধানে বের হয় তারা।  এটলাস মথ সাধারণত দারুচিনি, সাইট্রাস ফল, পেয়ারা এবং জামাইকান চেরি গাছ খায়।

একেকটি ডানা হয় বিশাল আকৃতির

একেকটি ডানা হয় বিশাল আকৃতির

এই প্রজাতির ক্যান্টোনিজ নামক সাপের মাথার মতো দেখতে ডানা রয়েছে। চমৎকাররঙিন পাখা বিশিষ্ট এই এটলাস মথের পাখা দেখে মনে হবে ঠিক যেন ভয়ঙ্কর কোবরা সাপ। শুধুমাত্র যে দেখতেই এমন তাই নয়, এটলাস মথ কে তাড়া করলে এটি তার পাখা এমন ভাবে দোলায় যে, দেখে মনে হবে কোন কোবরা ছোবল মারার জন্য তার মাথা সামনে পিছনে দোলাচ্ছে। আর এই ডানার সাহায্যেই এরা মূলত তাদের জন্য ক্ষতিকর/বিপজ্জনক প্রাণীদের ভয় পাইয়ে থাকে। যখন কোনো শিকারী প্রাণী এর সামনে পরে যায় তখনই এর ডানাগুলো নাড়তে থাকে। এতে ওই শিকারী প্রাণী সেটাকে সাপ ভেবে পালিয়ে যায়।

এটি অনেক বিষাক্ত হয়ে থাকে। এর কাপড়ে মৃত্যু ঘটতে পারে অল্প সময়ের মধ্যেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রজাপতি খাবারের তালিকায় রয়েছে। তবে তারা এই প্রজাতির থেকে সাবধান থাকে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রজাতির অ্যাটলাস মথের দেখা মিলেছিল রাঙামাটিতে। প্রায় সাড়ে নয় ইঞ্চি বা ২৪ সেন্টিমিটার দীর্ঘ এ মথটি। মথটি বসেছিল বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) রাঙামাটি উপকেন্দ্রের এক কর্মকর্তার দরজায়। নানা দেশের প্রাণী বিজ্ঞানীরা এই মথের আরো গবেষণা চালাচ্ছেন প্রতি নিয়ত।