জেনি নিন ওজুর ফায়দাগুলো

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পবিত্র কোরআনুল কারিমে রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসেহ করো এবং দুই পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত করো’ (সূরা: মায়িদাহ, আয়াত: ৬)।

ওজু নামাজের চাবি। ওজু ছাড়া নামাজ হয় না। তাই নামাজে দণ্ডায়মান হওয়ার আগে ওজু করতে হয়।

ওজুর মধ্যে আল্লাহ তায়ালা এত নেয়ামত বরাদ্দ রেখে দিয়েছেন, যা শুনলে অনেকে হয়তো আশ্চর্যান্বিত হয়ে যাবেন। হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘বেহেশতের চাবি হচ্ছে নামাজ, আর নামাজের চাবি হলো ওজু’ (মুসনাদে আহমাদ-৩: ৩৪০ পৃ.)।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ওজু থাকা সত্ত্বেও নতুন ওজু করে সে ১০টি নেকি লাভ করে’ (মু.হা. ওজুর ফাজায়েল: ২৫৩)।

ওজুর বরকতে বান্দার অতীত জীবনের গোনাহ মাফ হয়ে যায়। হজরত আমর ইবনে আবাসা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, আমি একদিন প্রশ্ন করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! (সা.) ওজুর ফায়দা কি? তিনি বলেন, ‘যখন তুমি ওজু করবে ও দুই হাতের কবজি পরিষ্কার করে ধৌত করবে, তখন গোনাহসমূহ আঙুলের অগ্রভাগ ও নখ দিয়ে বের হয়। যখন নাকের ছিদ্র পরিষ্কার করবে, মুখ ও হস্তদ্বয় কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে, মাথা মাসেহ করবে ও উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত করবে, তখন তুমি যেন তোমার গোনাহগুলোকে ধুয়ে পরিষ্কার করে দিলে। এরপর যখন তুমি তোমার চেহারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জমিনে রাখবে, তখন তুমি এমনভাবে গোনাহ থেকে নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তোমার মা তোমাকে জন্ম দিয়েছিল’ (নাসায়ি : ১৪৭)।

ওজুকারী ব্যক্তি হাশরের ময়দানে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত হবেন। হাশরের ময়দানে উপস্থিত সবাই ওজুকারী ব্যক্তির দিকে বারবার তাকাতে থাকবে। ওজুকারী ব্যক্তির হাত-পা ও মুখমণ্ডল চমকাতে থাকবে।

হজরত নোয়াঈম মুজমির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু হোরায়রা (রা.) এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। তিনি ওজু করলেন। তারপর বললেন, আমি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই কেয়ামত দিবসে আমার উম্মতকে এমন অবস্থায় ডাকা হবে যে, ওজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। অতএব, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার ইচ্ছা রাখে সে যেন তা করে নেয়’ (বুখারি: ১৩৮)।

ওজুকারীদের অনেকে দুনিয়াতে জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছেন। যেমনটি হজরত বেলাল (রা.) পেয়েছিলেন। একবার রাসূল (সা.) ফজরের নামাজের সময় হজরত বেলাল (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে বেলাল! তুমি ইসলাম গ্রহণের পর থেকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ যে আমল করেছ তার কথা আমাকে বলো! কেননা, জান্নাতে আমি তোমার জুতার আওয়াজ শুনতে পেয়েছি। হজরত বেলাল (রা.) বললেন, দিন বা রাতে যখনই আমি ওজু করি, তখনই আমি সামর্থ্য (তাহিয়্যাতুল ওজু) অনুযায়ী নামাজ পড়ি। এ ছাড়া আর তেমন কিছুই করি না’ (বুখারি : ১০৮৩)।

ওজু শেষে কালেমা শাহাদাত পাঠকারী ব্যক্তির জন্য আরো সুসংবাদ রয়েছে। ওজু শেষ করে যে কালেমা শাহাদাত পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর