ঢাকা ০৬:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ ব্যাংক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪৬:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ অগাস্ট ২০২০
  • ২৩৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে সরকারের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ দেয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে। রিজার্ভ থেকে ওইসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন আছে কি না, যদি থাকে তাহলে কীভাবে দেয়া যায়, সে বিষয়টিকেই তারা প্রাধান্য দিচ্ছে।

ঈদের আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে একটি চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত জানতে চায়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হয়নি বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠির জবাব এখনও দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

৬ জুলাই অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ ব্যাংককে তিনি বিষয়টির প্রভাব ও সম্ভাব্যের খুঁটিনাটি যাচাই-বাছাই করে দেখতে বলেন।

ওইদিন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর কোনো অর্ডার নয়। তিনি একটি আইডিয়া তুলে ধরেছেন। এটি আলোচনা-পর্যালোচনা এবং বিচার-বিশ্লেষণ শেষে সিদ্ধান্তে আসা যাবে।’ এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর এ কথা বলার পরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শুরু করেছে। এ কাজ এখনও শেষ হয়নি। এ বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনো কমিটি গঠন হয়েছে কি না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনো কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ বিষয়ে কাজ করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অর্থ জমা হওয়া এবং এ থেকে অর্থ খরচ করার একটি পদ্ধতি রয়েছে। সে অনুযায়ী এখন যেমন অর্থ জমা হচ্ছে, তেমনি প্রয়োজন অনুযায়ী খরচও হচ্ছে। এর বাইরে গিয়ে নতুন কিছু করতে হলে এর অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও সমীক্ষা করা দরকার। সেটি একটু দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ৩ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। বর্তমানে প্রতিমাসে গড়ে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় হয় ৪৭০ কোটি ডলার। এ হিসাবে ওই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ৮ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) রিজার্ভের নিরাপদ মান অনুযায়ী একটি দেশের সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। এ হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ বেশ স্বস্তিদায়ক। তবে করোনার কারণে এই রিজার্ভ কতটুকু ধরে রাখা যাবে, এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। কেননা করোনার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার আয় কমে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। এদিকে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় বেড়ে গেছে। ফলে যে কোনো সময় রিজার্ভ চাপে পড়তে পারে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের অর্থ ব্যবহারে বেশ সতর্ক রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাংলাদেশ ব্যাংক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করছে

আপডেট টাইম : ০৪:৪৬:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ অগাস্ট ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে সরকারের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ দেয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে। রিজার্ভ থেকে ওইসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন আছে কি না, যদি থাকে তাহলে কীভাবে দেয়া যায়, সে বিষয়টিকেই তারা প্রাধান্য দিচ্ছে।

ঈদের আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে একটি চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত জানতে চায়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হয়নি বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠির জবাব এখনও দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

৬ জুলাই অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ ব্যাংককে তিনি বিষয়টির প্রভাব ও সম্ভাব্যের খুঁটিনাটি যাচাই-বাছাই করে দেখতে বলেন।

ওইদিন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর কোনো অর্ডার নয়। তিনি একটি আইডিয়া তুলে ধরেছেন। এটি আলোচনা-পর্যালোচনা এবং বিচার-বিশ্লেষণ শেষে সিদ্ধান্তে আসা যাবে।’ এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর এ কথা বলার পরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শুরু করেছে। এ কাজ এখনও শেষ হয়নি। এ বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনো কমিটি গঠন হয়েছে কি না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনো কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ বিষয়ে কাজ করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অর্থ জমা হওয়া এবং এ থেকে অর্থ খরচ করার একটি পদ্ধতি রয়েছে। সে অনুযায়ী এখন যেমন অর্থ জমা হচ্ছে, তেমনি প্রয়োজন অনুযায়ী খরচও হচ্ছে। এর বাইরে গিয়ে নতুন কিছু করতে হলে এর অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও সমীক্ষা করা দরকার। সেটি একটু দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ৩ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। বর্তমানে প্রতিমাসে গড়ে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় হয় ৪৭০ কোটি ডলার। এ হিসাবে ওই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ৮ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) রিজার্ভের নিরাপদ মান অনুযায়ী একটি দেশের সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। এ হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ বেশ স্বস্তিদায়ক। তবে করোনার কারণে এই রিজার্ভ কতটুকু ধরে রাখা যাবে, এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। কেননা করোনার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার আয় কমে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। এদিকে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় বেড়ে গেছে। ফলে যে কোনো সময় রিজার্ভ চাপে পড়তে পারে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের অর্থ ব্যবহারে বেশ সতর্ক রয়েছে।