ঢাকা ১০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৭:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জুলাই ২০২০
  • ১৮৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কোরবানি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানি শব্দটি আরবি। এর শাব্দিক অর্থ হলো নৈকট্য, সান্নিধ্য, আত্মত্যাগ। মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের আশায় নির্ধারিত তারিখের মধ্যে হালাল কোনো পশু আল্লাহর নামে জবাই করাকে ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় কোরবানি বলা হয়। কোরবানি নতুন কোনো প্রথা নয়, বরং এটা আদিকাল থেকে প্রচলিত।

কোরবানির গুরুত্ব প্রসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা হালাল পশু জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৪)

আল্লাহতায়ালা আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমার কাছে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত কিছুই কবুল হয় না, তবে আমার কাছে পৌঁছায় একমাত্র তাকওয়া।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৭)

একদা জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.) কোরবানি কী? উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করলেন, কোরবানি হচ্ছে তোমাদের আদি পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর জীবনাদর্শ। সাহাবি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, কোরবানির ফজিলত কী? রাসুল (সা.) বললেন, পশুর পশমের পরিবর্তে একেকটি করে নেকি দেওয়া হয়।’ (মিশকাত, হাদিস : ১২৯) ।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই কোরবানিদাতার কোরবানি আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় এবং তার অতীতের সব গুনাহ মোচন করে দেওয়া হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১/১৮০)। মহানবী (সা.) আরও ইরশাদ করেন, ‘তোমরা মোটাতাজা পশু দেখে কোরবানি করো, কারণ এ পশুই পুলসিরাতের বাহক হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৩৯)।

বিশিষ্ট সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) পবিত্র মদিনায় দশ বছর জীবনযাপন করেছেন, প্রত্যেক বছরই তিনি পশু কোরবানি করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১/১৮৯)। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোরবানির দিন আল্লাহর কাছে কোরবানি অপেক্ষা উত্তম কোনো আমল আর নেই।’ (মিশকাত, হাদিস : ১৯৩৭)।

বিখ্যাত সাহাবি আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কোরবানির দিন কোরবানি করে না, সে যেন ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহের ময়দানের কাছে না যায়। (ইবনে মাজাহ : ১৭২১)।

ইসলামে কোরবানি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত, তাই কোরবানি দাতার নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া জরুরি। পশু কোরবানির উদ্দেশ্য যেন হয় একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি

আপডেট টাইম : ১০:৫৭:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কোরবানি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানি শব্দটি আরবি। এর শাব্দিক অর্থ হলো নৈকট্য, সান্নিধ্য, আত্মত্যাগ। মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের আশায় নির্ধারিত তারিখের মধ্যে হালাল কোনো পশু আল্লাহর নামে জবাই করাকে ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় কোরবানি বলা হয়। কোরবানি নতুন কোনো প্রথা নয়, বরং এটা আদিকাল থেকে প্রচলিত।

কোরবানির গুরুত্ব প্রসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা হালাল পশু জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৪)

আল্লাহতায়ালা আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমার কাছে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত কিছুই কবুল হয় না, তবে আমার কাছে পৌঁছায় একমাত্র তাকওয়া।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৭)

একদা জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.) কোরবানি কী? উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করলেন, কোরবানি হচ্ছে তোমাদের আদি পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর জীবনাদর্শ। সাহাবি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, কোরবানির ফজিলত কী? রাসুল (সা.) বললেন, পশুর পশমের পরিবর্তে একেকটি করে নেকি দেওয়া হয়।’ (মিশকাত, হাদিস : ১২৯) ।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই কোরবানিদাতার কোরবানি আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় এবং তার অতীতের সব গুনাহ মোচন করে দেওয়া হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১/১৮০)। মহানবী (সা.) আরও ইরশাদ করেন, ‘তোমরা মোটাতাজা পশু দেখে কোরবানি করো, কারণ এ পশুই পুলসিরাতের বাহক হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৩৯)।

বিশিষ্ট সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) পবিত্র মদিনায় দশ বছর জীবনযাপন করেছেন, প্রত্যেক বছরই তিনি পশু কোরবানি করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১/১৮৯)। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোরবানির দিন আল্লাহর কাছে কোরবানি অপেক্ষা উত্তম কোনো আমল আর নেই।’ (মিশকাত, হাদিস : ১৯৩৭)।

বিখ্যাত সাহাবি আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কোরবানির দিন কোরবানি করে না, সে যেন ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহের ময়দানের কাছে না যায়। (ইবনে মাজাহ : ১৭২১)।

ইসলামে কোরবানি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত, তাই কোরবানি দাতার নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া জরুরি। পশু কোরবানির উদ্দেশ্য যেন হয় একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।