ঢাকা ০৪:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মা-বাবার যেসব ভুলে সন্তান প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২২:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জুলাই ২০২০
  • ২৪২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সন্তান প্রতিটি মা-বাবার কাছেই অমূল্য সম্পদ। কোনো মা-বাবাই চান না তার সন্তান কোনো ত্রুটি নিয়ে পৃথিবীতে আসুক। তবে বাবা-মায়ের সামান্য একটু ভুলের কারণে তার সন্তানকে আজীবনের জন্য কষ্ট করতে হয়। সঙ্গে বইতে হয় নিন্দাও।

যদি একটু সতর্ক হওয়া যায় এবং কিছু নিয়মনীতি মেনে চলা যায় তবেই এই বিপদ এড়ানো সম্ভব। এজন্য বাবা-মায়ের যেসব ভুলের কারণে শিশু প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম গ্রহণ করে সেগুলো অবশ্যই জেনে রাখা জরুরি। আর সে অনুযায়ী সে ভুলগুলো শুধরে নেয়াও জরুরি। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই ভুলগুলো সম্পর্কে-

গর্ভবতী অবস্থায় ওষুধ গ্রহণ

গর্ভাবস্থায় শিশুর মা যদি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই নানা প্রকার ওষুধ খেতে থাকে, তা শিশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। অনেক ওষুধ ভ্রুনের অঙ্গ সৃষ্টিতে বাধার সৃষ্টি করে। ফলে শিশু যে কোনো ধরনের বিকলাঙ্গ বা প্রতিবন্ধিতা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারে।

মায়ের বয়স

গর্ভধারনের সময় মায়ের বয়স কম বা বেশি দুটিই শিশুর জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অপরিণত বয়সে প্রজনন অঙ্গের বিকাশ সম্পূর্ণ হয় না। তাই অপরিণত বয়সে মা হলে ত্রুটিপূর্ণ সন্তান জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আবার বেশি বয়সে অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থির স্বাভাবিক কার্যাবলি হ্রাস পায়। তাই ৩৫ বছর বয়সের পর যেসব নারী প্রথম সন্তান জন্ম দেন, সেসব সন্তান বিকলাঙ্গ বা প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

গর্ভবতী মায়ের অপুষ্টি

গর্ভবতী মা যদি দীর্ঘদিন যাবৎ রক্ত স্বল্পতায় ভোগেন, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না খান তবে ভ্রুনের গঠনগত বিকলাঙ্গ দেখা দেয়, মস্তিস্কের বিকাশ ব্যাহত হয়, ফলে শিশু বিকলাঙ্গ অথবা প্রতিবন্ধী হয়। দেখা যায় এই কারণেই বাংলাদেশে ৩৭ শতাংশ নবজাতক কম ওজন নিয়ে জন্মায়। আর তাদের অর্ধেকেরই জন্মের প্রথম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে।

গর্ভাবস্থায় মায়ের এসব রোগসমূহ

গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে মা যদি যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, জার্মানহাম, চিকেনপক্স, মাম্পস, রুবেলা ভাইরাস, এইডস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হন, তবে গর্ভস্থ শিশুর উপর তার প্রভাব অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়। এর ফলে সন্তান শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ ও মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। এছাড়া মায়ের ডায়াবেটিস, উচ্চরক্ত চাপ, কিডনির সমস্যা, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা প্রভৃতি শারীরিক অবস্থায় গর্ভস্থশিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে।

মায়েরা ফরমালিন দেয়া খাদ্য খেলে

মায়েরা ফরমালিন দেয়া খাদ্য খেলে বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নিতে পারে। এর পাশাপাশি সন্তানেরা বোকা হাবা-গোবা হয়ে যেতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ঘণ ঘণ খিঁচুনি 

গর্ভাবস্থায় মা যদি ঘন ঘন খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত হন, তবে গর্ভস্থ শিশুর শরীরে অক্সিজেনের অভাব ঘটে ও তার মস্তিস্কের ক্ষতি করে। ফলে সন্তান মানসিক প্রতিবন্ধী বা বিকলাঙ্গ হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রবেশ

গর্ভাবস্থায় বিশেষত প্রথম তিন মাস এক্স-রে বা অন্য কোনো ভাবে মায়ের দেহে যদি তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রবেশ করে, তবে গর্ভস্থ ভ্রুণের নার্ভতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী বা বিকলাঙ্গ হয়।

মা-বাবার রক্তের RH উপাদান 

মা যদি Rh পজেটিভ আর বাবা যদি Rh নেগেটিভ হয়, তাহলে গর্ভস্থ সন্তানের Rh পজেটিভ বা নেগেটিভ হতে পারে। মা ও সন্তানের Rh উপাদানের মধ্যে যদি মিল না থাকে, তবে তাকে Rh অসংগতা বা Rh Incompatibility বলা হয়। এতে মৃত সন্তান হয়। আর যদি শিশু বেঁচে যায় তাহলে পক্ষাঘাতগ্রস্থ বা মস্তিস্কের ত্রুটি নিয়ে জন্মায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মা-বাবার যেসব ভুলে সন্তান প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে

আপডেট টাইম : ০৬:২২:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সন্তান প্রতিটি মা-বাবার কাছেই অমূল্য সম্পদ। কোনো মা-বাবাই চান না তার সন্তান কোনো ত্রুটি নিয়ে পৃথিবীতে আসুক। তবে বাবা-মায়ের সামান্য একটু ভুলের কারণে তার সন্তানকে আজীবনের জন্য কষ্ট করতে হয়। সঙ্গে বইতে হয় নিন্দাও।

যদি একটু সতর্ক হওয়া যায় এবং কিছু নিয়মনীতি মেনে চলা যায় তবেই এই বিপদ এড়ানো সম্ভব। এজন্য বাবা-মায়ের যেসব ভুলের কারণে শিশু প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম গ্রহণ করে সেগুলো অবশ্যই জেনে রাখা জরুরি। আর সে অনুযায়ী সে ভুলগুলো শুধরে নেয়াও জরুরি। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই ভুলগুলো সম্পর্কে-

গর্ভবতী অবস্থায় ওষুধ গ্রহণ

গর্ভাবস্থায় শিশুর মা যদি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই নানা প্রকার ওষুধ খেতে থাকে, তা শিশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। অনেক ওষুধ ভ্রুনের অঙ্গ সৃষ্টিতে বাধার সৃষ্টি করে। ফলে শিশু যে কোনো ধরনের বিকলাঙ্গ বা প্রতিবন্ধিতা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারে।

মায়ের বয়স

গর্ভধারনের সময় মায়ের বয়স কম বা বেশি দুটিই শিশুর জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অপরিণত বয়সে প্রজনন অঙ্গের বিকাশ সম্পূর্ণ হয় না। তাই অপরিণত বয়সে মা হলে ত্রুটিপূর্ণ সন্তান জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আবার বেশি বয়সে অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থির স্বাভাবিক কার্যাবলি হ্রাস পায়। তাই ৩৫ বছর বয়সের পর যেসব নারী প্রথম সন্তান জন্ম দেন, সেসব সন্তান বিকলাঙ্গ বা প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

গর্ভবতী মায়ের অপুষ্টি

গর্ভবতী মা যদি দীর্ঘদিন যাবৎ রক্ত স্বল্পতায় ভোগেন, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না খান তবে ভ্রুনের গঠনগত বিকলাঙ্গ দেখা দেয়, মস্তিস্কের বিকাশ ব্যাহত হয়, ফলে শিশু বিকলাঙ্গ অথবা প্রতিবন্ধী হয়। দেখা যায় এই কারণেই বাংলাদেশে ৩৭ শতাংশ নবজাতক কম ওজন নিয়ে জন্মায়। আর তাদের অর্ধেকেরই জন্মের প্রথম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে।

গর্ভাবস্থায় মায়ের এসব রোগসমূহ

গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে মা যদি যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, জার্মানহাম, চিকেনপক্স, মাম্পস, রুবেলা ভাইরাস, এইডস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হন, তবে গর্ভস্থ শিশুর উপর তার প্রভাব অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়। এর ফলে সন্তান শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ ও মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। এছাড়া মায়ের ডায়াবেটিস, উচ্চরক্ত চাপ, কিডনির সমস্যা, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা প্রভৃতি শারীরিক অবস্থায় গর্ভস্থশিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে।

মায়েরা ফরমালিন দেয়া খাদ্য খেলে

মায়েরা ফরমালিন দেয়া খাদ্য খেলে বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নিতে পারে। এর পাশাপাশি সন্তানেরা বোকা হাবা-গোবা হয়ে যেতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ঘণ ঘণ খিঁচুনি 

গর্ভাবস্থায় মা যদি ঘন ঘন খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত হন, তবে গর্ভস্থ শিশুর শরীরে অক্সিজেনের অভাব ঘটে ও তার মস্তিস্কের ক্ষতি করে। ফলে সন্তান মানসিক প্রতিবন্ধী বা বিকলাঙ্গ হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রবেশ

গর্ভাবস্থায় বিশেষত প্রথম তিন মাস এক্স-রে বা অন্য কোনো ভাবে মায়ের দেহে যদি তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রবেশ করে, তবে গর্ভস্থ ভ্রুণের নার্ভতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী বা বিকলাঙ্গ হয়।

মা-বাবার রক্তের RH উপাদান 

মা যদি Rh পজেটিভ আর বাবা যদি Rh নেগেটিভ হয়, তাহলে গর্ভস্থ সন্তানের Rh পজেটিভ বা নেগেটিভ হতে পারে। মা ও সন্তানের Rh উপাদানের মধ্যে যদি মিল না থাকে, তবে তাকে Rh অসংগতা বা Rh Incompatibility বলা হয়। এতে মৃত সন্তান হয়। আর যদি শিশু বেঁচে যায় তাহলে পক্ষাঘাতগ্রস্থ বা মস্তিস্কের ত্রুটি নিয়ে জন্মায়।