ঢাকা ০৪:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় বন্ধ্যাত্ব হতে পারে পুরুষরা, বলছে গবেষণা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৭:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০
  • ২৩২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  গত বছরের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বেই তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনাভাইরাস। এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ছয় লাখের কাছাকাছি। আর আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধ কোটি। বিজ্ঞানীরা এখনো প্রতিষেধক আবিষ্কারের আশায় আছেন।

করোনাভাইরাস মানবদেহের অনেক কিছুই বিকল করে দেয়। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ আক্রান্ত পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকিও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই খবর বেশ আতঙ্কও সৃষ্টি করেছে মানুষের মনে।

বর্তমানে দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। আর এমন সময়ই এই তথ্য সামনে এনে নতুন আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে চীনের উহানের টংজি হাসপাতালের রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন সেন্টারের গবেষকরা।

তারা জানান, যেসব পুরুষেরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে সুস্থ হয়েছেন তাদের প্রজনন ক্ষমতায় কোনো প্রভাব পড়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা দরকার। তবে এই বিষয়ে গবেষকরা স্পষ্ট দাবী করেন, এখনো পর্যন্ত প্রজনন ক্ষমতা নষ্টের কোনো প্রমাণ না পাওয়া গেলেও এর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

এই গবেষণা সম্পর্কে তারা বলছেন, যেহেতু করোনাভাইরাস ও সার্স একই গোষ্ঠীভুক্ত। তাই এই দুই ভাইরাসই এইস-২ নামে একটি এনজাইমের সঙ্গে মিশে শরীরের কোষে আক্রমণ করে কোষকে নষ্ট করে দেয়। এই এইস-২ ফুসফুস ছাড়াও মানব দেহের অন্যান্য অঙ্গগুলোতে অবস্থান করে।

বিশেষত পুরুষদের অণ্ডকোষে প্রচুর পরিমাণে থাকে এটি। এর পাশাপাশি জীবাণু কোষ, সহায়ক কোষ এবং জনন কোষ পুরুষের প্রজনন ক্ষমতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকে। ফলে করোনায় আক্রান্ত হলেই এই কোষগুলোর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই ভাইরাস সংক্রমণের ফলে পুরুষদের অর্কাইটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ফলে শরীরে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে গিয়ে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।

গবেষকরা আরো জানান, ২০০২ সালে সার্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়া পুরুষদের অণ্ডকোষ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যেহেতু এই নভেল করোনাভাইরাস ও সার্স ভাইরাস একই গোষ্ঠীভুক্ত। আবার এই দুই ভাইরাস একই হোস্ট সেল রিসেপ্টর এইস-২ কে আক্রমণ করে। তাই পুরুষদের এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন গবেষকরা।

এই গবেষণার উপর ভিত্তি করে উহানের টংজি হাসপাতালের রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের অধ্যাপক লি ইউফেং জানান, এই ভাইরাসের সংক্রমণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে অণ্ডকোষও। রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও ডাক্তারের সাহায্য নিয়ে তার প্রজনন ক্ষমতা পরীক্ষা করা উচিত। কারণ এর ফলে বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কাও থেকেই যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

করোনায় বন্ধ্যাত্ব হতে পারে পুরুষরা, বলছে গবেষণা

আপডেট টাইম : ০৫:১৭:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  গত বছরের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বেই তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনাভাইরাস। এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ছয় লাখের কাছাকাছি। আর আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধ কোটি। বিজ্ঞানীরা এখনো প্রতিষেধক আবিষ্কারের আশায় আছেন।

করোনাভাইরাস মানবদেহের অনেক কিছুই বিকল করে দেয়। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ আক্রান্ত পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকিও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই খবর বেশ আতঙ্কও সৃষ্টি করেছে মানুষের মনে।

বর্তমানে দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। আর এমন সময়ই এই তথ্য সামনে এনে নতুন আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে চীনের উহানের টংজি হাসপাতালের রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন সেন্টারের গবেষকরা।

তারা জানান, যেসব পুরুষেরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে সুস্থ হয়েছেন তাদের প্রজনন ক্ষমতায় কোনো প্রভাব পড়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা দরকার। তবে এই বিষয়ে গবেষকরা স্পষ্ট দাবী করেন, এখনো পর্যন্ত প্রজনন ক্ষমতা নষ্টের কোনো প্রমাণ না পাওয়া গেলেও এর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

এই গবেষণা সম্পর্কে তারা বলছেন, যেহেতু করোনাভাইরাস ও সার্স একই গোষ্ঠীভুক্ত। তাই এই দুই ভাইরাসই এইস-২ নামে একটি এনজাইমের সঙ্গে মিশে শরীরের কোষে আক্রমণ করে কোষকে নষ্ট করে দেয়। এই এইস-২ ফুসফুস ছাড়াও মানব দেহের অন্যান্য অঙ্গগুলোতে অবস্থান করে।

বিশেষত পুরুষদের অণ্ডকোষে প্রচুর পরিমাণে থাকে এটি। এর পাশাপাশি জীবাণু কোষ, সহায়ক কোষ এবং জনন কোষ পুরুষের প্রজনন ক্ষমতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকে। ফলে করোনায় আক্রান্ত হলেই এই কোষগুলোর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই ভাইরাস সংক্রমণের ফলে পুরুষদের অর্কাইটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ফলে শরীরে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে গিয়ে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।

গবেষকরা আরো জানান, ২০০২ সালে সার্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়া পুরুষদের অণ্ডকোষ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যেহেতু এই নভেল করোনাভাইরাস ও সার্স ভাইরাস একই গোষ্ঠীভুক্ত। আবার এই দুই ভাইরাস একই হোস্ট সেল রিসেপ্টর এইস-২ কে আক্রমণ করে। তাই পুরুষদের এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন গবেষকরা।

এই গবেষণার উপর ভিত্তি করে উহানের টংজি হাসপাতালের রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের অধ্যাপক লি ইউফেং জানান, এই ভাইরাসের সংক্রমণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে অণ্ডকোষও। রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও ডাক্তারের সাহায্য নিয়ে তার প্রজনন ক্ষমতা পরীক্ষা করা উচিত। কারণ এর ফলে বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কাও থেকেই যায়।