হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিটি মানুষই কোনো না কোনো পরিবারে থাকে। ছোট কিংবা বড় পরিবারেই বেড়ে ওঠে প্রতিটি মানুষ। পরিবারের সবার সঙ্গেই থাকে মধুরতা। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এর ব্যাতিক্রমও দেখা যায়। অনেকেরই পরিবারের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক থাকে। আর এতেই রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকি! কারণ পরিবারের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক থাকলে তা ব্যক্তির স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে।
স্ট্রোক অতি পরিচিত একটি রোগ। নিশ্চয়ই জানেন, স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। অপরিমিত চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রম না করা থেকে মানসিক অবসাদসহ নানা কারণে স্ট্রোক হতে পারে। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায়, পরিবারের সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের কারণেও হতে পারে স্ট্রোক।
পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ব্যক্তিগত জীবনে কতটা প্রভাব ফেলে, তা জানতে একটি সমীক্ষা পরিচালিত হয়। সমীক্ষাটির প্রধান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের সহযোগী অধ্যাপক সারারাহ বি উডস বলেন, আমরা দেখেছি পরিবারের আবেগঘন পরিবেশ ব্যক্তির স্বাস্থ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এছাড়া ২০ বছর পার হয়ে যাওয়ার পর তার স্ট্রোক হতে পারে এবং এটি মাথাব্যথাতেও প্রভাব ফেলে।
জার্নাল অব ফ্যামিলি সাইকোলজিতে প্রকাশিত ওই সমীক্ষায় ২ হাজার ৮০২ জন ব্যক্তির তথ্য উঠে এসেছে। তিন দফায় নেয়া তথ্যে গড়ে ৪৫ বছর বয়সী ব্যক্তিরা অংশ নেয়। এতে পরিবারের বন্ধন ও সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। গবেষকেরা এতে দেখতে পান, যাদের পারিবারিক বন্ধন বেশ শক্তিশালী, তারা তুলনামূলকভাবে রোগে কম আক্রান্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে পরিবারের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক খারাপ, তারা অধিক মাত্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বয়স্ক লোকদের মধ্যে যারা রোগাক্রান্ত, তাদের পারিবারিক ইতিহাস খুঁজে দেখা গেছে, প্রত্যেকেই পরিবারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করছেন না।
এদিকে আরেকদল গবেষক বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
ফ্রান্সের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতি বছর কমপক্ষে ৫০ দিন যদি ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করা হয় তাহলে স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়। এক দশকেরও বেশি সময় যাবত যারা দীর্ঘ সময় কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি।
তবে যুক্তরাজ্যের স্ট্রোক এসোসিয়েশন বলছে, দীর্ঘ সময় কাজ করলেও শারীরিক ব্যায়াম এবং ভালো খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব হতে পারে। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনব্যবস্থা বজায় রাখলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকখানি কমানো যায়। এজন্য করণীয় হলো- ধূমপান না করা, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং কন্ট্রোল করা, নিয়ম করে হাঁটা বা হালকা দৌঁড়ানো, দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা।