হাওর বার্তা ডেস্কঃ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। বিশ্বে প্রথম মানবদেহে ভ্যাকসিনের সফল প্রয়োগের পর সোমবার এ ফল প্রকাশ করে অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ। বলা হয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার প্রথম ধাপ সফল হয়েছে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্বে কোনও ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়নি।
যেকোনো ভ্যাকসিন তৈরি এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বছরের পর বছর এমনকি কয়েক দশকও লেগে যায়। তবে অক্সফোর্ডের এ ভ্যাকসিন যদি সফল হয় তাহলে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই মানুষের শরীরে প্রয়োগ শুরু করা যেতে পারে। অক্সফোর্ডের একটি সূত্র ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফকে জানিয়েছে, ভ্যাকসিন নেয়া স্বেচ্ছাসেবীদের দেহ থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষায় দেখা গেছে- এটি দেহে অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম হয়েছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ঠিক কীভাবে মানব দেহে কাজ করবে এ ভ্যাকসিন? কতগুলো ডোজ উৎপাদন করা হবে? কারা আগে পাবে? দাম কেমন পড়বে?
যেভাবে কাজ করবে এ ভ্যাকসিন-
অক্সফোর্ডের তৈরি ভ্যাকসিনটির নাম ChAdOx1 nCoV-19. অভূতপূর্ব গতিতে এটার উন্নতি সাধিত হয়েছে। এটি তৈরি করা হয়েছে শিম্পাঞ্জির ঠান্ডা লাগার জন্য যে মৌলিক বিষয়টি দায়ী সেটার জিন নিয়ে গবেষণা করে। গবেষণার মাধ্যমে প্রচুর পরিমার্জন ও পরিবর্ধন শেষে মানুষের শরীরে প্রয়োগযোগ্য করা হয়েছে এ ভ্যাকসিন। ফলে এটি মানুষের শরীরে কোনও সংক্রমণ ঘটাতে দেবে না এবং একই প্রক্রিয়ায় এটি করোনাভাইরাসকেও রুখে দিতে সক্ষম হবে।
করোনাভাইরাসের যে স্পাইক প্রোটিন মানবদেহের কোষকে আক্রমণ করে সেটা নিয়ে গবেষণা করে এর ভিত্তিতে জেনেটিক নির্দেশনা অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে এই ভ্যাকসিন। সুতরাং এটি করোনাভাইরাস রুখে দিতে পারবে এবং অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হবে।
আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেমের মাধ্যমে যে প্রোটিন উৎপাদিত হয় (অ্যান্টিবডি) এবং যে প্রোটিনটি করোনাভাইরাসের উপরিভাগে থাকে সেটাকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে সক্ষম এই ভ্যাকসিন। অ্যান্টিবডিকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার মাধ্যমে ভাইরাসটিকে অক্ষম করে দেয়া সম্ভব।
পাশাপাশি আমাদের শরীরের যে টি-সেল রয়েছে (এক ধরনের লোহিত রক্ত কণিকা) যেটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সহায়তা করে এবং ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধ ও ধ্বংস করে সেটার সক্ষমতা বাড়াবে অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন।