ঢাকা ০৬:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা কালে কোরবানি: ইসলাম যা বলে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:২৭:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুলাই ২০২০
  • ২৬০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এগিয়ে আসছে মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘ঈদুল আজহা’ বা ‘কোরবানির ঈদ’।

পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলমানদের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। এই দিনটিতে সামর্থ্যবান মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানি করেন। অত্যন্ত আনন্দ, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয় দিনটি। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। মহামারি করোনাভাইরাসের জন্য মানুষ আতঙ্কের মধ্যে আছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং চল্লিশ থেকে পঞ্চশ জন মারা যাচ্ছে। এমতাবস্থায়, এবার কিভাবে কোরবানি করবেন তা নিয়ে সবাই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

কোরবানির ঈদ প্রধানত স্রষ্টার প্রতি আনুগত্য ও স্বীয় আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর একটি বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। কিন্তু এবার কোরবানি ঈদ আমাদের মধ্যে নতুন ভাবনা জাগিয়ে তুলছে। নানা প্রশ্ন এখন মানুষের মনে! বিশেষ করে কোরবানির পশুর হাট, সেখানে পশু ক্রয় করতে যাওয়া এবং ‘সামাজিক দূরত্ব’ মানার চ্যালেঞ্জ নিয়ে এখন সরগরম গণমাধ্যম। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা করোনা মোকাবিলায় যে বিধানগুলো মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন কোরবানির পশুর হাটে সেটা মেনে চলা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। গত ঈদের অভিজ্ঞতা মোটেও ভালো ছিল না। বর্তমান সময়ের করোনা সংক্রমণের অনেকটাই বেড়েছে গত ঈদে ঘরমুখো মানুষের স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে যাওয়া-আসায়। এ পর্যায়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুভূতির মর্যাদা দিতে হবে যেমন, অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু রোধ করতে হবে।

এই সংকট দূরীভূত করতে করণীয় কী? ইসলাম কী বলে এ বিষয়ে আলোচনা খুব প্রয়োজন। একদিকে যেমন স্রষ্টার বিধানকে প্রাধান্য দিতে হবে অপরদিকে মানুষের জীবন হেফাজতেও স্রষ্টার দিক নির্দেশনাকে মেনে চলতে হবে।

করোনাযুদ্ধে নতুন নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হবে, নতুন নতুন কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। বর্তমান সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি এবং পবিত্র ঈদকে ঘিরে নতুন কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। যেমন- পরিস্থিতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে; চিকিৎসা ব্যবস্থা কোভিড ও নন-কভিড) দ্রুত সম্প্রসারণ করতে হবে; স্বাস্থ্যবিধি বলবৎ রেখে জীবিকার সর্বোচ্চ সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে; পবিত্র ঈদ ঘিরে কোনোক্রমেই স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করা যাবে না; খামারি/কৃষকের কোরবানির পশু বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে; আগ্রহী মুসলমানদেরও কোরবানির ব্যবস্থা করতে হবে।

কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ভোগের মানসিকতা পরিহার করে ত্যাগের মহিমায় অভ্যস্ত হওয়ার জন্য এটি একটি শিক্ষামূলক ইবাদত। স্বভাবগতভাবে আমরা সব সময় নিজের ভোগ-বিলাসের চিন্তায় মগ্ন থাকি। যে কারণে ত্যাগের অভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইসলামি শরীয়ত কোরবানির বিধান বিধিবদ্ধ করেছে। পশু জবাইয়ের মাধ্যমে একদিকে আমরা আমাদের সম্পদ তাঁর রাহে ব্যয় করার এবং অন্যদিকে আমাদের সত্তার মাঝে লুকিয়ে থাকা পাশবিকতা, দোষ-ত্রুটি, পশু-প্রবৃত্তি বিসর্জন দিতে শিখব; তাতেই আমাদের কোরবানি সফল ও স্বার্থক হবে।

করোনা ও কোরবানি:

বেশ কিছুদিন ধরে বর্তমান করোনা মহামারির এ পরিস্থিতিতে, ‘এ বছর কোরবানি না করলে হয় না’? এমন প্রশ্ন উঠেছে। তাদের কেউ কেউ বর্তমান পরিস্থিতিতে কোরবানি করার প্রশ্নে অর্থাৎ না করার পক্ষে অনেক যুক্তি, ওজর-আপত্তিও ব্যাখ্যা করে চলেছেন। ইসলামের কাছে এসব প্রশ্নের সমাধান কী?

ইসলামিক স্কলারদের মত হচ্ছে, কোরবানি একটি ওয়াজিব আমল। করোনার ভয়ে বা তেমন সন্দেহ-সংশয়ের কারণে কোরবানি করা বাদ দেয়া যাবে না। যেমন কারো সন্দেহ জাগল যে, ‘কোরবানির জন্য যে-পশুটি ক্রয় করব, তা-ও যদি করোনা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে?’ অথবা ‘আমি যদি কোরবানির জন্তুটি ক্রয়ে বাজারে যাই, আর আমাকেও যদি করোনা রোগে পেয়ে বসে? অথবা ‘যাদের দ্বারা কোরবানির জন্তুটি কাটাছেঁড়া করাব, তাদের কেউ যদি করোনা রোগে আক্রান্ত রোগী হয়ে থাকে; তবে তো আমাদেরও করোনা হতে পারে!’ ইত্যাদি সন্দেহ, শঙ্কা বা আশঙ্কার কারণে এই সন্দেহের মাত্রা নির্ণয় না করে কোরবানির ওয়াজিব আমল ছেড়ে দেয়া যাবে না বা কোরবানি রহিত বা মাফ হয়ে যাবে না। তবে হ্যাঁ, অপরাপর কাজ, হাটবাজার বা অফিস-আদালত আমরা যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করে সম্পন্ন করে থাকি, স্বাস্থ্যবিধি ও সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি লক্ষ্য রাখি; সেভাবেই আমাদের কোরবানিসহ সবকিছু করে যেতে হবে।

আবশ্যকীয়ভাবে এ বিধান পালনের কারণ নিম্নরূপ:

(১) শরীয়তে শুধু ‘শঙ্কা’ বা ‘আশঙ্কা’ বা ‘ধারণা’ বা ‘সন্দেহ-সংশয়’র কোনো মূল্য নেই। কেননা, তেমন শঙ্কা, সংশয় ও সন্দেহ তো জাগতিক সর্বক্ষেত্রেও হয়ে থাকে বা থাকতে পারে। যেমন মনে করুন- আপনি রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় তো শঙ্কা জাগতে পারে ‘পাশ্ববর্তী দেওয়ালটি না আবার ভেঙে আমার মাথার ওপর পড়ে যায়!’ রেল-বাস-লঞ্চ  বা বিমানে চড়তে গিয়ে সংশয় বা সন্দেহ জাগল, ‘আরে! বাস-বিমান আবার দুর্ঘটনাকবলিত হয় কি না?’ অথবা ‘লঞ্চটি আবার ডুবে যায় কি না!’ এসব সন্দেহের কারণে কি আমরা জাগতিক কর্মকাণ্ড ছেড়ে দিই? কখনো না।

(২) অবশ্য শরীয়তে ‘প্রবল সন্দেহ বা শঙ্কা’র মূল্যায়ন আছে। অর্থাৎ, যা বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা যাচ্ছে বা পাওয়া যাচ্ছে বা ঘটে যাচ্ছে এবং তার ‘আলামত-নিদর্শন-সংকেত’ বিদ্যমান। যেমন কি না ‘পরিস্থিতি বিপদ-সঙ্কুল’ বা ‘আবহাওয়া মারাত্মক খারাপ’ মর্মে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে বলা হচ্ছে- সেক্ষেত্রে আপাতত লঞ্চ  ছাড়বে না এবং বিমান উড্ডয়ন করবে না। তেমন পরিস্থিতিতে বরং বিকল্প চিন্তা করা হবে, আপাতত যাত্রা স্থগিত করা হবে; কিন্তু প্রয়োজনীয় যাত্রা বা সফর একেবারে বাদ দেয়া হবে না।

অর্থাৎ, শুধু সাধারণ ও স্বাভাবিক সন্দেহ-সংশয়ের কারণে, প্রয়োজনীয় কাজ, যাতায়াত বা ইবাদত ইত্যাদি বাদ দেয়া যাবে না। এমনকি ‘প্রবল সন্দেহ-আশঙ্কার ক্ষেত্রেও তা পরিহার করা যাবে না। একইভাবে কোরবানির পশুটি যদি অসুস্থ মর্মে দেখা যাচ্ছে বা তেমন কোনো রোগের আলামত পাওয়া যাচ্ছে; কিংবা যারা কাটাছেঁড়া করতে এসেছে, তাদের কারো আলামত-সংকেত দেখা যাচ্ছে, যেমন প্রচণ্ড হাঁচি-কাশি বা জ্বর- সেক্ষেত্রে তেমন কাউকে মজদুর হিসেবে নেয়া যাবে না; কাজে লাগানো হবে না। কারণ, এক্ষেত্রে ‘শুধু সন্দেহ’ নয় বরং ‘প্রবল সন্দেহ’ ও সম্ভাবনা বিদ্যমান; তাই শরীয়তেও তার মূল্যায়ন আছে। যে কারণে দেখেশুনে ও সতর্কতা রক্ষা করে কোরবানি করতে হবে; কিন্তু একেবারে বাদ দেয়া যাবে না। যেমন- কি না অপরাপর কর্মকাণ্ড বাদ দেয়া হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, শরীয়তের উক্ত বিবেচনা ও মূল্যায়ন সামনে রেখেই দেশের বিজ্ঞ আলেম ও মুফতিরা আলোচ্য ‘করোনা’-এর প্রারম্ভিককালে নামাজ-জামাত-জুমা ইত্যাদি একেবারে বাদ বা বন্ধ করার নির্দেশনা প্রদান করেননি; বরং সাবধানতা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সতর্কতা অবলম্বন করে সম্পাদন করতে বলেছেন মাত্র।

(৩) আরেকটি ‘পরিস্থিতি বা অবস্থা’ এমন যা ‘নিশ্চিত’ (তায়াক্কুন বা ইয়াকিনি) ও ‘অবশ্যাম্ভাবী’। অর্থাৎ ‘নিশ্চিত আমি মারা যাব’ বা ‘নিশ্চিত যে, আমার ‘করোনা’ হবেই’; যেমন- ‘নিশ্চিত যে, ‘মসজিদে গেলে আমার করোনা হবেই’; কিংবা ‘নিশ্চিত যে, মসজিদের উদ্দেশে বের হলেই পথিমধ্যে শত্রু আমাকে হত্যা করবেই’; কিংবা ‘এমনকি এ মুহূর্তে বা অমুক নির্দিষ্ট দিনে বা স্থানে বা সময় পর্যন্ত যদি আমি নিজ বাসা-বাড়ি-দোকানেও নামাজে দাঁড়াই, তা হলেও শত্রু অবশ্যই আমার ওপর হামলে পড়বে’ (জানা আছে বা গোপন খবর আছে)। এমন সব নিশ্চিত পরিস্থিতির ক্ষেত্রে শরীয়তেরই নির্দেশ বা নির্দেশনা হবে, ‘আপনি মসজিদে যাবেন না; জামাতে অংশগ্রহণ আপনার জন্য নয়; এমনকি তেমন পরিস্থিতিতে আপনি বাসা-বাড়িতেও সালাত আদায় করবেন না’। তবে হ্যাঁ, পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক ও শান্ত হবে, তখন আপনি সেই নামাজ-আমল যদি ফরজ বা ওয়াজিব স্তরের হয়, তা কাজা করে নেবেন। আর তা যদি সুন্নত-নফল স্তরের কোনো আমল হয়, তা হলে সেটি কাজাও করতে হবে না এবং তাতে কোনো পাপও হবে না।

এখন বলুন তো, ‘আপনি কি নিশ্চিত যে, ওইসব অবস্থায় বা এমনিতেই আপনার করোনা রোগ হবে? অথবা ‘করোনা রোগ’ হলেই, আপনি কি নিশ্চিত যে, আপনি অবশ্যই মারা যাবেন?’ না, না তেমনটি কারো বেলায়ই ‘নিশ্চিত’ নয়; বরং ‘সম্ভাব্য’ অথবা ‘অনেকটা সম্ভাব্য’। সুতরাং, শরীয়া আইন গবেষণার ওই নিয়ম-বিধি অনুযায়ী তিনটি পরিস্থিতি অর্থাৎ ‘সম্ভাব্য বা শঙ্কা-আশঙ্কার কোনো মূল্য নেই। তাই বিধিমোতাবেক যাদের ওপর ওয়াজিব, তাদের কোরবানি অবশ্যই দিতে হবে। আর যাদের সঙ্গত কারণে তেমন ‘প্রবল আশঙ্কা’ হবে, তাদেরও কোরবানি দিতে হবে। তবে হ্যাঁ, সার্বিক সতর্কতার প্রতিও যত্নবান থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আর আইন বিধানের তৃতীয় ‘নিশ্চিত’ অবস্থা বা পরিস্থিতি যেহেতু আমাদের ‘করোনা’ পরিস্থিতির ব্যাপারে বলা যাচ্ছে না বা প্রযোজ্য বা প্রয়োগ করা যাচ্ছে না; তাই তেমন চিন্তা-কল্পনাও বাতিল, অবান্তর।

বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে কি?

এ পরিস্থিতিতে অনেকে কোরবানির বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন যাতে করোনা সংক্রামন রোধ করা যায় একই সঙ্গে আল্লাহর বিধানও পালন হয়ে যায়। এ বিষয়ে বায়তুল মোকাররমের ভারপ্রাপ্ত খতিব মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, কোরবানি না করে তার অর্থ গরিবদের মধ্যে বিতরণ করে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করা একটি সুনির্দিষ্ট ওয়াজিব বিধান। বিধানটি পালন করতে হয় নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ ১০ থেকে ১২ জিলহজের মধ্যে। এটা ওয়াজিব বিধান। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শেয়ার।

রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোরবানি জিনিসটা কি? জবাবে রাসূল (সা.) বলেন, এটা হচ্ছে তোমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.) এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এ গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব বিধানটি অবশ্যই পালন করবো। যার ওয়াজিব তাকেই এটি পালন করতে হবে। জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত এই তিন দিন যে ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক (সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার যেকোনো একটির সমপরিমাণ সম্পত্তি) তার জন্য গরু, মহিষ, উট এগুলোর একটা অংশ অথবা ছাগল, দুম্বা এসব পশুর একটি কোরবানি করা ওয়াজিব।

এ বিষয়ে ইসলামিক ল রিসার্চ এন্ড লিগ্যাল এইড সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মাওলানা শহীদুল ইসলাম বলেন, কোরবানির জন্য পশু জবাই করা অপরিহার্য বিধান। এর বদলে টাকা দান করলে কোরবানি আদায় হবে না। আমাদের অনুসৃত ফিকাহ মতে কোরবানি করা ওয়াজিব।

একদিকে আল্লাহর বিধান ও অপরদিকে মানুষের জীবন। এর সঠিক সমাধান সতর্কতা। সতর্ক থাকতে আল্লাহর বিধান পালনেও, সতর্ক থাকতে হবে জীবনের হেফাজতেও। জীবন জীবিকার সন্ধানে যেমন সবকিছু শিথিল করা হয়েছে আল্লাহর এ বিধান পালনেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা কাম্য নয়। সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রেখে আল্লাহর এ বিধান পালনেও হতে পারে বিশ্ববাসী মুক্তি পাবে মহামারি করোনাভাইরাস থেকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

করোনা কালে কোরবানি: ইসলাম যা বলে

আপডেট টাইম : ০৭:২৭:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এগিয়ে আসছে মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘ঈদুল আজহা’ বা ‘কোরবানির ঈদ’।

পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলমানদের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। এই দিনটিতে সামর্থ্যবান মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানি করেন। অত্যন্ত আনন্দ, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয় দিনটি। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। মহামারি করোনাভাইরাসের জন্য মানুষ আতঙ্কের মধ্যে আছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং চল্লিশ থেকে পঞ্চশ জন মারা যাচ্ছে। এমতাবস্থায়, এবার কিভাবে কোরবানি করবেন তা নিয়ে সবাই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

কোরবানির ঈদ প্রধানত স্রষ্টার প্রতি আনুগত্য ও স্বীয় আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর একটি বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। কিন্তু এবার কোরবানি ঈদ আমাদের মধ্যে নতুন ভাবনা জাগিয়ে তুলছে। নানা প্রশ্ন এখন মানুষের মনে! বিশেষ করে কোরবানির পশুর হাট, সেখানে পশু ক্রয় করতে যাওয়া এবং ‘সামাজিক দূরত্ব’ মানার চ্যালেঞ্জ নিয়ে এখন সরগরম গণমাধ্যম। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা করোনা মোকাবিলায় যে বিধানগুলো মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন কোরবানির পশুর হাটে সেটা মেনে চলা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। গত ঈদের অভিজ্ঞতা মোটেও ভালো ছিল না। বর্তমান সময়ের করোনা সংক্রমণের অনেকটাই বেড়েছে গত ঈদে ঘরমুখো মানুষের স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে যাওয়া-আসায়। এ পর্যায়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুভূতির মর্যাদা দিতে হবে যেমন, অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু রোধ করতে হবে।

এই সংকট দূরীভূত করতে করণীয় কী? ইসলাম কী বলে এ বিষয়ে আলোচনা খুব প্রয়োজন। একদিকে যেমন স্রষ্টার বিধানকে প্রাধান্য দিতে হবে অপরদিকে মানুষের জীবন হেফাজতেও স্রষ্টার দিক নির্দেশনাকে মেনে চলতে হবে।

করোনাযুদ্ধে নতুন নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হবে, নতুন নতুন কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। বর্তমান সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি এবং পবিত্র ঈদকে ঘিরে নতুন কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। যেমন- পরিস্থিতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে; চিকিৎসা ব্যবস্থা কোভিড ও নন-কভিড) দ্রুত সম্প্রসারণ করতে হবে; স্বাস্থ্যবিধি বলবৎ রেখে জীবিকার সর্বোচ্চ সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে; পবিত্র ঈদ ঘিরে কোনোক্রমেই স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করা যাবে না; খামারি/কৃষকের কোরবানির পশু বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে; আগ্রহী মুসলমানদেরও কোরবানির ব্যবস্থা করতে হবে।

কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ভোগের মানসিকতা পরিহার করে ত্যাগের মহিমায় অভ্যস্ত হওয়ার জন্য এটি একটি শিক্ষামূলক ইবাদত। স্বভাবগতভাবে আমরা সব সময় নিজের ভোগ-বিলাসের চিন্তায় মগ্ন থাকি। যে কারণে ত্যাগের অভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইসলামি শরীয়ত কোরবানির বিধান বিধিবদ্ধ করেছে। পশু জবাইয়ের মাধ্যমে একদিকে আমরা আমাদের সম্পদ তাঁর রাহে ব্যয় করার এবং অন্যদিকে আমাদের সত্তার মাঝে লুকিয়ে থাকা পাশবিকতা, দোষ-ত্রুটি, পশু-প্রবৃত্তি বিসর্জন দিতে শিখব; তাতেই আমাদের কোরবানি সফল ও স্বার্থক হবে।

করোনা ও কোরবানি:

বেশ কিছুদিন ধরে বর্তমান করোনা মহামারির এ পরিস্থিতিতে, ‘এ বছর কোরবানি না করলে হয় না’? এমন প্রশ্ন উঠেছে। তাদের কেউ কেউ বর্তমান পরিস্থিতিতে কোরবানি করার প্রশ্নে অর্থাৎ না করার পক্ষে অনেক যুক্তি, ওজর-আপত্তিও ব্যাখ্যা করে চলেছেন। ইসলামের কাছে এসব প্রশ্নের সমাধান কী?

ইসলামিক স্কলারদের মত হচ্ছে, কোরবানি একটি ওয়াজিব আমল। করোনার ভয়ে বা তেমন সন্দেহ-সংশয়ের কারণে কোরবানি করা বাদ দেয়া যাবে না। যেমন কারো সন্দেহ জাগল যে, ‘কোরবানির জন্য যে-পশুটি ক্রয় করব, তা-ও যদি করোনা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে?’ অথবা ‘আমি যদি কোরবানির জন্তুটি ক্রয়ে বাজারে যাই, আর আমাকেও যদি করোনা রোগে পেয়ে বসে? অথবা ‘যাদের দ্বারা কোরবানির জন্তুটি কাটাছেঁড়া করাব, তাদের কেউ যদি করোনা রোগে আক্রান্ত রোগী হয়ে থাকে; তবে তো আমাদেরও করোনা হতে পারে!’ ইত্যাদি সন্দেহ, শঙ্কা বা আশঙ্কার কারণে এই সন্দেহের মাত্রা নির্ণয় না করে কোরবানির ওয়াজিব আমল ছেড়ে দেয়া যাবে না বা কোরবানি রহিত বা মাফ হয়ে যাবে না। তবে হ্যাঁ, অপরাপর কাজ, হাটবাজার বা অফিস-আদালত আমরা যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করে সম্পন্ন করে থাকি, স্বাস্থ্যবিধি ও সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি লক্ষ্য রাখি; সেভাবেই আমাদের কোরবানিসহ সবকিছু করে যেতে হবে।

আবশ্যকীয়ভাবে এ বিধান পালনের কারণ নিম্নরূপ:

(১) শরীয়তে শুধু ‘শঙ্কা’ বা ‘আশঙ্কা’ বা ‘ধারণা’ বা ‘সন্দেহ-সংশয়’র কোনো মূল্য নেই। কেননা, তেমন শঙ্কা, সংশয় ও সন্দেহ তো জাগতিক সর্বক্ষেত্রেও হয়ে থাকে বা থাকতে পারে। যেমন মনে করুন- আপনি রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় তো শঙ্কা জাগতে পারে ‘পাশ্ববর্তী দেওয়ালটি না আবার ভেঙে আমার মাথার ওপর পড়ে যায়!’ রেল-বাস-লঞ্চ  বা বিমানে চড়তে গিয়ে সংশয় বা সন্দেহ জাগল, ‘আরে! বাস-বিমান আবার দুর্ঘটনাকবলিত হয় কি না?’ অথবা ‘লঞ্চটি আবার ডুবে যায় কি না!’ এসব সন্দেহের কারণে কি আমরা জাগতিক কর্মকাণ্ড ছেড়ে দিই? কখনো না।

(২) অবশ্য শরীয়তে ‘প্রবল সন্দেহ বা শঙ্কা’র মূল্যায়ন আছে। অর্থাৎ, যা বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা যাচ্ছে বা পাওয়া যাচ্ছে বা ঘটে যাচ্ছে এবং তার ‘আলামত-নিদর্শন-সংকেত’ বিদ্যমান। যেমন কি না ‘পরিস্থিতি বিপদ-সঙ্কুল’ বা ‘আবহাওয়া মারাত্মক খারাপ’ মর্মে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে বলা হচ্ছে- সেক্ষেত্রে আপাতত লঞ্চ  ছাড়বে না এবং বিমান উড্ডয়ন করবে না। তেমন পরিস্থিতিতে বরং বিকল্প চিন্তা করা হবে, আপাতত যাত্রা স্থগিত করা হবে; কিন্তু প্রয়োজনীয় যাত্রা বা সফর একেবারে বাদ দেয়া হবে না।

অর্থাৎ, শুধু সাধারণ ও স্বাভাবিক সন্দেহ-সংশয়ের কারণে, প্রয়োজনীয় কাজ, যাতায়াত বা ইবাদত ইত্যাদি বাদ দেয়া যাবে না। এমনকি ‘প্রবল সন্দেহ-আশঙ্কার ক্ষেত্রেও তা পরিহার করা যাবে না। একইভাবে কোরবানির পশুটি যদি অসুস্থ মর্মে দেখা যাচ্ছে বা তেমন কোনো রোগের আলামত পাওয়া যাচ্ছে; কিংবা যারা কাটাছেঁড়া করতে এসেছে, তাদের কারো আলামত-সংকেত দেখা যাচ্ছে, যেমন প্রচণ্ড হাঁচি-কাশি বা জ্বর- সেক্ষেত্রে তেমন কাউকে মজদুর হিসেবে নেয়া যাবে না; কাজে লাগানো হবে না। কারণ, এক্ষেত্রে ‘শুধু সন্দেহ’ নয় বরং ‘প্রবল সন্দেহ’ ও সম্ভাবনা বিদ্যমান; তাই শরীয়তেও তার মূল্যায়ন আছে। যে কারণে দেখেশুনে ও সতর্কতা রক্ষা করে কোরবানি করতে হবে; কিন্তু একেবারে বাদ দেয়া যাবে না। যেমন- কি না অপরাপর কর্মকাণ্ড বাদ দেয়া হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, শরীয়তের উক্ত বিবেচনা ও মূল্যায়ন সামনে রেখেই দেশের বিজ্ঞ আলেম ও মুফতিরা আলোচ্য ‘করোনা’-এর প্রারম্ভিককালে নামাজ-জামাত-জুমা ইত্যাদি একেবারে বাদ বা বন্ধ করার নির্দেশনা প্রদান করেননি; বরং সাবধানতা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সতর্কতা অবলম্বন করে সম্পাদন করতে বলেছেন মাত্র।

(৩) আরেকটি ‘পরিস্থিতি বা অবস্থা’ এমন যা ‘নিশ্চিত’ (তায়াক্কুন বা ইয়াকিনি) ও ‘অবশ্যাম্ভাবী’। অর্থাৎ ‘নিশ্চিত আমি মারা যাব’ বা ‘নিশ্চিত যে, আমার ‘করোনা’ হবেই’; যেমন- ‘নিশ্চিত যে, ‘মসজিদে গেলে আমার করোনা হবেই’; কিংবা ‘নিশ্চিত যে, মসজিদের উদ্দেশে বের হলেই পথিমধ্যে শত্রু আমাকে হত্যা করবেই’; কিংবা ‘এমনকি এ মুহূর্তে বা অমুক নির্দিষ্ট দিনে বা স্থানে বা সময় পর্যন্ত যদি আমি নিজ বাসা-বাড়ি-দোকানেও নামাজে দাঁড়াই, তা হলেও শত্রু অবশ্যই আমার ওপর হামলে পড়বে’ (জানা আছে বা গোপন খবর আছে)। এমন সব নিশ্চিত পরিস্থিতির ক্ষেত্রে শরীয়তেরই নির্দেশ বা নির্দেশনা হবে, ‘আপনি মসজিদে যাবেন না; জামাতে অংশগ্রহণ আপনার জন্য নয়; এমনকি তেমন পরিস্থিতিতে আপনি বাসা-বাড়িতেও সালাত আদায় করবেন না’। তবে হ্যাঁ, পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক ও শান্ত হবে, তখন আপনি সেই নামাজ-আমল যদি ফরজ বা ওয়াজিব স্তরের হয়, তা কাজা করে নেবেন। আর তা যদি সুন্নত-নফল স্তরের কোনো আমল হয়, তা হলে সেটি কাজাও করতে হবে না এবং তাতে কোনো পাপও হবে না।

এখন বলুন তো, ‘আপনি কি নিশ্চিত যে, ওইসব অবস্থায় বা এমনিতেই আপনার করোনা রোগ হবে? অথবা ‘করোনা রোগ’ হলেই, আপনি কি নিশ্চিত যে, আপনি অবশ্যই মারা যাবেন?’ না, না তেমনটি কারো বেলায়ই ‘নিশ্চিত’ নয়; বরং ‘সম্ভাব্য’ অথবা ‘অনেকটা সম্ভাব্য’। সুতরাং, শরীয়া আইন গবেষণার ওই নিয়ম-বিধি অনুযায়ী তিনটি পরিস্থিতি অর্থাৎ ‘সম্ভাব্য বা শঙ্কা-আশঙ্কার কোনো মূল্য নেই। তাই বিধিমোতাবেক যাদের ওপর ওয়াজিব, তাদের কোরবানি অবশ্যই দিতে হবে। আর যাদের সঙ্গত কারণে তেমন ‘প্রবল আশঙ্কা’ হবে, তাদেরও কোরবানি দিতে হবে। তবে হ্যাঁ, সার্বিক সতর্কতার প্রতিও যত্নবান থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আর আইন বিধানের তৃতীয় ‘নিশ্চিত’ অবস্থা বা পরিস্থিতি যেহেতু আমাদের ‘করোনা’ পরিস্থিতির ব্যাপারে বলা যাচ্ছে না বা প্রযোজ্য বা প্রয়োগ করা যাচ্ছে না; তাই তেমন চিন্তা-কল্পনাও বাতিল, অবান্তর।

বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে কি?

এ পরিস্থিতিতে অনেকে কোরবানির বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন যাতে করোনা সংক্রামন রোধ করা যায় একই সঙ্গে আল্লাহর বিধানও পালন হয়ে যায়। এ বিষয়ে বায়তুল মোকাররমের ভারপ্রাপ্ত খতিব মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, কোরবানি না করে তার অর্থ গরিবদের মধ্যে বিতরণ করে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করা একটি সুনির্দিষ্ট ওয়াজিব বিধান। বিধানটি পালন করতে হয় নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ ১০ থেকে ১২ জিলহজের মধ্যে। এটা ওয়াজিব বিধান। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শেয়ার।

রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোরবানি জিনিসটা কি? জবাবে রাসূল (সা.) বলেন, এটা হচ্ছে তোমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.) এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এ গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব বিধানটি অবশ্যই পালন করবো। যার ওয়াজিব তাকেই এটি পালন করতে হবে। জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত এই তিন দিন যে ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক (সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার যেকোনো একটির সমপরিমাণ সম্পত্তি) তার জন্য গরু, মহিষ, উট এগুলোর একটা অংশ অথবা ছাগল, দুম্বা এসব পশুর একটি কোরবানি করা ওয়াজিব।

এ বিষয়ে ইসলামিক ল রিসার্চ এন্ড লিগ্যাল এইড সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মাওলানা শহীদুল ইসলাম বলেন, কোরবানির জন্য পশু জবাই করা অপরিহার্য বিধান। এর বদলে টাকা দান করলে কোরবানি আদায় হবে না। আমাদের অনুসৃত ফিকাহ মতে কোরবানি করা ওয়াজিব।

একদিকে আল্লাহর বিধান ও অপরদিকে মানুষের জীবন। এর সঠিক সমাধান সতর্কতা। সতর্ক থাকতে আল্লাহর বিধান পালনেও, সতর্ক থাকতে হবে জীবনের হেফাজতেও। জীবন জীবিকার সন্ধানে যেমন সবকিছু শিথিল করা হয়েছে আল্লাহর এ বিধান পালনেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা কাম্য নয়। সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রেখে আল্লাহর এ বিধান পালনেও হতে পারে বিশ্ববাসী মুক্তি পাবে মহামারি করোনাভাইরাস থেকে।