ঢাকা ০৯:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বখাটেদের হাত থেকে বাঁচতে লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ জুলাই ২০২০
  • ১৭২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লঞ্চের স্টাফদের হাত থেকে সম্ভ্রম বাঁচাতে লঞ্চ থেকে মাঝ নদীতে এক কিশোরী (১৬)।  গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকা আসার পথে এমভি কর্ণফুলী-১৩ নামক লঞ্চটিতে ভোলার তজুমদ্দিন উপজলোর বেতুয়া নৌরুটে এ ঘটনা ঘটে। পরে দূর থেকে তার আর্তচিৎকার শুনে মুমূর্ষু অবস্থায় জেলেরা তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন থানা হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তজুমদ্দিন উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড বয় মহিউদ্দিনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের সঙ্গে মোবাইলে ফোনে কথা হয় ভুক্তভোগী কিশোরীর।

কিশোরী জানায়, বাবা তাকে ছেড়ে যায়। মায়ের আরেক জায়গায় বিয়ে হয়। সে নানীর সঙ্গে থাকে। নানী ঠিকমত খাওয়াতে পারে না। সে কাজের উদ্দেশ্যে গতকাল শনিবার বিকেলে নোয়াখালী জেলার তেলিয়ার চর ঘাট থেকে লঞ্চে ওঠে। ওঠার পরেই রান্নার বাবুর্চি ও সহকারী তাকে বিরক্ত করে, কয়েকজন হাত ধরে টান দেয়।

ওই কিশোরী বলেন, ‘রান্নার ছেলেরা আমাকে তাদের কেবিনে থাকতে বলে। তারা ৪০০ টাকা দেওয়ারও প্রস্তাব করে। আমি তাদের হাত থেকে বাঁচতে নদীতে ঝাঁপ দেই। নদীতে স্রোতে আমি ভেসে যাচ্ছিলাম। পরে চিৎকার দিলে জেলেরা উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জিয়াউল হক জানান, ওই কিশোরী তার নানীর কাছে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার তেলিয়ারচর গ্রামে থাকত। গতকাল শনিবার দুপুরে সে হাতিয়া থেকে লঞ্চে ওঠে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চৌমুহনী স্টেশন ছাড়ার পরে সে নদীতে ঝাঁপ দেয়। ঝাঁপ দেওয়ার কারণ হিসেবে সে বলে- লঞ্চের বাবুর্চি তাকে রাতে তার কেবিনে থাকার জন্য বললে সে ভয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। লঞ্চ থেকে তার জন্য বয়া ছুড়ে মারলেও সে ধরতে পারেনি। পরে লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যায়। তিন ঘণ্টা পর স্থানীয় জেলেরা তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত করছে। কিশোরীর বাড়ির লোকজনের খোঁজ চলছে। পাওয়া গেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তজুমদ্দিন উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা রিপন চন্দ্র মণ্ডল জানান, ওই কিশোরী এখন হাসপাতালে ভর্তি এবং সুস্থ আছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বখাটেদের হাত থেকে বাঁচতে লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ

আপডেট টাইম : ০৯:৫৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লঞ্চের স্টাফদের হাত থেকে সম্ভ্রম বাঁচাতে লঞ্চ থেকে মাঝ নদীতে এক কিশোরী (১৬)।  গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকা আসার পথে এমভি কর্ণফুলী-১৩ নামক লঞ্চটিতে ভোলার তজুমদ্দিন উপজলোর বেতুয়া নৌরুটে এ ঘটনা ঘটে। পরে দূর থেকে তার আর্তচিৎকার শুনে মুমূর্ষু অবস্থায় জেলেরা তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন থানা হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তজুমদ্দিন উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড বয় মহিউদ্দিনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের সঙ্গে মোবাইলে ফোনে কথা হয় ভুক্তভোগী কিশোরীর।

কিশোরী জানায়, বাবা তাকে ছেড়ে যায়। মায়ের আরেক জায়গায় বিয়ে হয়। সে নানীর সঙ্গে থাকে। নানী ঠিকমত খাওয়াতে পারে না। সে কাজের উদ্দেশ্যে গতকাল শনিবার বিকেলে নোয়াখালী জেলার তেলিয়ার চর ঘাট থেকে লঞ্চে ওঠে। ওঠার পরেই রান্নার বাবুর্চি ও সহকারী তাকে বিরক্ত করে, কয়েকজন হাত ধরে টান দেয়।

ওই কিশোরী বলেন, ‘রান্নার ছেলেরা আমাকে তাদের কেবিনে থাকতে বলে। তারা ৪০০ টাকা দেওয়ারও প্রস্তাব করে। আমি তাদের হাত থেকে বাঁচতে নদীতে ঝাঁপ দেই। নদীতে স্রোতে আমি ভেসে যাচ্ছিলাম। পরে চিৎকার দিলে জেলেরা উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জিয়াউল হক জানান, ওই কিশোরী তার নানীর কাছে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার তেলিয়ারচর গ্রামে থাকত। গতকাল শনিবার দুপুরে সে হাতিয়া থেকে লঞ্চে ওঠে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চৌমুহনী স্টেশন ছাড়ার পরে সে নদীতে ঝাঁপ দেয়। ঝাঁপ দেওয়ার কারণ হিসেবে সে বলে- লঞ্চের বাবুর্চি তাকে রাতে তার কেবিনে থাকার জন্য বললে সে ভয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। লঞ্চ থেকে তার জন্য বয়া ছুড়ে মারলেও সে ধরতে পারেনি। পরে লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যায়। তিন ঘণ্টা পর স্থানীয় জেলেরা তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত করছে। কিশোরীর বাড়ির লোকজনের খোঁজ চলছে। পাওয়া গেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তজুমদ্দিন উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা রিপন চন্দ্র মণ্ডল জানান, ওই কিশোরী এখন হাসপাতালে ভর্তি এবং সুস্থ আছে।