ঢাকা ০২:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান আর নেই

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:২৪:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জুলাই ২০২০
  • ২৪৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশিষ্ট শিল্পপতি ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (১ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার পরিবারের সদস্যরা।

লতিফুর রহমান দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের মালিক। তিনি ট্রান্সকম গ্রুপের ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্য, ওষুধ, সংবাদপত্র, চা শিল্প, বিমা ইত্যাদি ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ন্যাশনাল হাউজিংয়ের উদ্যোক্তা পরিচালক।

লতিফুর রহমান প্যারিসভিত্তিক বৈশ্বিক বাণিজ্য সংগঠন আইসিসির নির্বাহী সদস্য, আইসিসি বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও ব্র্যাকের পরিচালক। এছাড়া তিনি কয়েক মেয়াদে এমসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন।

এছাড়াও বাংলাদেশের বাজারে আন্তর্জাতিক ফাস্টফুড চেইন পিৎজা হাট ও কিন্টাকী ফ্রায়েড চিকেন প্রচলনের জন্য সমাধিক পরিচিত ছিলেন। ব্যবসায়ে নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১২ সালে পেয়েছেন বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার। ২০০৯ সাল থেকে ব্যবসাখাতে স্বীকৃতিস্বরূপ এ পদক দেয়া হয়।

লতিফুর রহমান জন্ম ১৯৪৫ সালের ২৮ আগস্ট। লতিফুর রহমানে জন্ম ভারতের জলপাইগুড়িতে। থাকতেন ঢাকার গেন্ডারিয়ায়। তার স্ত্রীর নাম শাহনাজ রহমান। তাদের এক ছেলে আর দুই মেয়ে।

লতিফুর রহমান পড়াশোনা শুরু করেন সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। সেখান থেকে চলে যান হলিক্রস স্কুলে। সে সময় হলিক্রসে ছেলেরাও পড়ত। ১৯৫৬ যান শিলংয়ে এবং সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে ক্লাস থ্রিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে কলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে যান।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা-এসব কারণে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। এসে পাটের ব্যবসায় ঢুকে যান। তার বাবা তখন চাঁদপুরে গড়ে তুলেছেন ডব্লিউ রহমান জুট মিল। ১৯৬৩ সালে কাজ শুরু হলেও উৎপাদন শুরু হলো ১৯৬৬ সালে। সেখানে ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি ১৯৬৬ সালে। দেড় বছর কাজ শেখার পর একজন নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। এভাবে কাজ ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। লতিফুর রহমান ১৯৭২ সালে যখন সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন, তখন তার সঙ্গে কাজ করতেন মাত্র পাঁচজন। ট্রান্সকম গ্রুপে এখন কাজ করছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। শুরুতে ৫০ লাখ টাকা ব্যাংকঋণ নিয়ে নতুন করে শুরু করেছিলেন তিনি। এখন এই গ্রুপের বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি।

লতিফুর রহমান নেস্লে বাংলাদেশ, হোলসিম বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স ও ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান। তিনি লিন্ডে বাংলাদেশ এবং ব্র্যাকের গভর্নিং বোর্ডের পরিচালক। এছাড়া তিনি আইসিসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি। ট্রান্সকম গ্রুপ যার উৎপত্তি হয়েছিল চা চাষের মাধ্যমে, এখন বাংলাদেশের অন্যতম একটি বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান, যার রয়েছে ১৬টি কোম্পানি। ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করেছে এ গ্রুপ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান আর নেই

আপডেট টাইম : ০৩:২৪:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশিষ্ট শিল্পপতি ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (১ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার পরিবারের সদস্যরা।

লতিফুর রহমান দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের মালিক। তিনি ট্রান্সকম গ্রুপের ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্য, ওষুধ, সংবাদপত্র, চা শিল্প, বিমা ইত্যাদি ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ন্যাশনাল হাউজিংয়ের উদ্যোক্তা পরিচালক।

লতিফুর রহমান প্যারিসভিত্তিক বৈশ্বিক বাণিজ্য সংগঠন আইসিসির নির্বাহী সদস্য, আইসিসি বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও ব্র্যাকের পরিচালক। এছাড়া তিনি কয়েক মেয়াদে এমসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন।

এছাড়াও বাংলাদেশের বাজারে আন্তর্জাতিক ফাস্টফুড চেইন পিৎজা হাট ও কিন্টাকী ফ্রায়েড চিকেন প্রচলনের জন্য সমাধিক পরিচিত ছিলেন। ব্যবসায়ে নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১২ সালে পেয়েছেন বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার। ২০০৯ সাল থেকে ব্যবসাখাতে স্বীকৃতিস্বরূপ এ পদক দেয়া হয়।

লতিফুর রহমান জন্ম ১৯৪৫ সালের ২৮ আগস্ট। লতিফুর রহমানে জন্ম ভারতের জলপাইগুড়িতে। থাকতেন ঢাকার গেন্ডারিয়ায়। তার স্ত্রীর নাম শাহনাজ রহমান। তাদের এক ছেলে আর দুই মেয়ে।

লতিফুর রহমান পড়াশোনা শুরু করেন সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। সেখান থেকে চলে যান হলিক্রস স্কুলে। সে সময় হলিক্রসে ছেলেরাও পড়ত। ১৯৫৬ যান শিলংয়ে এবং সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে ক্লাস থ্রিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে কলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে যান।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা-এসব কারণে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। এসে পাটের ব্যবসায় ঢুকে যান। তার বাবা তখন চাঁদপুরে গড়ে তুলেছেন ডব্লিউ রহমান জুট মিল। ১৯৬৩ সালে কাজ শুরু হলেও উৎপাদন শুরু হলো ১৯৬৬ সালে। সেখানে ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি ১৯৬৬ সালে। দেড় বছর কাজ শেখার পর একজন নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। এভাবে কাজ ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। লতিফুর রহমান ১৯৭২ সালে যখন সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন, তখন তার সঙ্গে কাজ করতেন মাত্র পাঁচজন। ট্রান্সকম গ্রুপে এখন কাজ করছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। শুরুতে ৫০ লাখ টাকা ব্যাংকঋণ নিয়ে নতুন করে শুরু করেছিলেন তিনি। এখন এই গ্রুপের বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি।

লতিফুর রহমান নেস্লে বাংলাদেশ, হোলসিম বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স ও ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান। তিনি লিন্ডে বাংলাদেশ এবং ব্র্যাকের গভর্নিং বোর্ডের পরিচালক। এছাড়া তিনি আইসিসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি। ট্রান্সকম গ্রুপ যার উৎপত্তি হয়েছিল চা চাষের মাধ্যমে, এখন বাংলাদেশের অন্যতম একটি বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান, যার রয়েছে ১৬টি কোম্পানি। ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করেছে এ গ্রুপ।